পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পল থেকে চারি ধারে চেয়ে দেখি মাছ বা জলের সম্পক ও নেই কোনো ধারে। নিচে নেমে ছায়ায় একটা শিলাখন্ডে অনেকক্ষণ বসে রইলাম—ভাবচি সপ্রভার পত্রের আজ একটা উত্তর দেব। ওখান থেকে ফিরে এসে বাংলোর পেছনে যে পাহাড়ী নদী—তাতে নাইতে গেলাম। আমি আর শঙ্কর। সন্দির নদীর ঘাটটি, পাথর একখানা বড় ঘাটে ফেলা আছে, জলের ধারে একটা অশবথ গাছের নিচে জলজ লিলি ফটে। সামনে থৈ থৈ করচে পাহাড়শ্রেণী, ঘন সবজি তার সানদেশ। দরে Governor's pool-এর কাছে একটা গাছের অাঁকাবাঁকা মাথা সবজি পাহাড়ী ঢালাির পটভূমিকে দেখা যায়। এ ক-দিনের প্রখর সােয্যালোক আর বছরের এ সময়ের বর্ষা-বাদলের কথা মনে করিয়ে দেয়.সায্যের আলো না থাকলে এসব পাহাড় শ্রেণী, এ পাহাড়ী নদী, এই গাছপালা —এই প্রসারতা এত ভাল লাগত ? এই এখন বসে আছি বাংলোর বারান্দাতে, দারে দরে কালাঝোর ও অন্যান্য পাহাড় শ্রেণী অপরাহ্রের পড়ন্ত রোদে কি সন্দেরই না। দেখাচ্চে! দর্পারে মহলিয়ার পোস্ট মাস্টার এসেছিল, কোিট আবার এসেছিল—ওরা বললে সেদিন যে হাতীঝরনায় গিয়ে চা খেয়েছিলাম, তার ওদিকে বাঁকাই বলে গ্রাম আছে, গভীর জঙ্গল তার ওপারে - ধান পাকলে নিত্য হাতীর দল বার হয়। বাসাডের ও ধারাগিরির পথ এখন নিরাপদ নয়, কেম্পট বলছিল। সেদিকে এখন জঙ্গলও খাব ঘন, তাছাড়া বড় বাঘের ভয় হয়েচে, অনেকগলো মান ষ-গরকে বাঘে নিয়েচে এ বছর। সাতগড়মের পথেও বাঘের উপদ্রব হয়েছে। এ বছর। পোস্ট মাসন্টার বললে--আপনার জন্যে জমি রেখে দিলে বিভ্ৰাট প্রধান, আর আপনি মোটে এলেন না। নেন। যদি, জমি এখনও আছে। বিজয়ার দিন মহলিয়া যাবো, সেখান থেকে টাটানগর ও চাইবাসা। এইমাত্র পাহাড়ের সান দেশে বসে হালয়া তৈরি করে চা খাওয়া গেল। মাথার ওপর অষ্টমীর চাঁদ, আকাশে দ-দশটা তারা, সামনে অরণ্যাবতে পাহাড়ের অন্ধকার সীমারেখা, দরে বামদিকে অরণ্য আরও গভীর, মদ, জ্যোৎস্নালোকে পাহাড়, উপত্যকা, সান দেশস্থ বনানী অদ্ভুত হয়েচে দেখতে। আজই পট্টনায়েকবাব বলেছিল ৪নং shift-এ বাঘ আছে, সেজন্যে সন্ধ্যার পরে আমাদের সকলেরই গা ছমছম করচে। রামধন কাঠ কুড়িয়ে আগােন জবালিয়ে রেখেচে পাছে বাঘভাল্লােক আসে। সেই ভয়ে। কেবলই মনে পড়তে থাকে আজ মহাস্টমীর সন্ধ্যা, বাংলাদেশের গ্রামে-গ্রামে এই সময়টিতে পড়জোর চন্ডীমণ্ডপে দেবীর আরতি হচ্চে শঙ্খ-ঘণ্টা রবের মধ্যে, ছেলেমেয়েরা হাসিমখে নতুন কাপড় পরে ঘরচে-আর আমরা সিং ভুমের এক নিজজন বন্যজন্তু অধ্যুষিত পাহাড়ের মধ্যে বসে গলপ করাচি ও প্রকৃতির শোভা দেখচি।* ওখান থেকে ফিরচি, রথামের মদীর দোকানের সামনে সাঁওতালী নাচ হচ্চে, মাদল বাজার তালে তালে। আমাদের একটা কম্পিবল পেতে দিলে, আমরা অভটমীর চাঁদের নিচে পাচ্ছিাড়ের সামনের ছোট গ্রামে খাঁটি সাঁওতালী নাচ দেখে বড় আনন্দ পেলাম। কবিরাজের সঙ্গে বসে একটি গল্প করা গেল। তার বাংলার সামনে কবে রাত্রে চিতাবাঘ এসে দাঁড়িয়েছিল, সাঁওতালদের গোরস্থানে সেবারে ভূত দেখেছিল, ইত্যাদি কত গলপ। মহলিয়াতে আজ সারা দােপর ঘরে বেড়িয়েচি। বাদল বাবার বাংলো থেকে a al

  • এই অংশটি ৪নং shift-এ বসে লেখা।

SO