পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি ওকে খাশি করবার জন্যে বললাম-চাচা তোমাকে অনেক দারের লোকে 67TGrN ও বড় খশি হ’ল। বললে-শোন তবে আমায় কত গাঁয়ের লোকে জানে। এই কাট কোমরা, ইচ্ছেপর, মেটিরি, শালকো, হানিডাঙা. তার তালিকা আর শেষ হয় না। বললোঁ-তা লাঠিতে বা বন্দকে মরব না, আমার গােরর কৃপায়। আগােন খাব। শন্যে উড়ে যাব। ম’ডু কেটে আবার জোড়া দেব। আমি বিস্ময়ের সরে বললাম-বল কি চাচা ? -হ্যাঁ, তোমার বাপ-মার আশীব্বাদে গণ কিছ: ছেল শরীলে। ওই যেখানে চটকাতলায় সায়ের ছেল, ওখানে এক সন্নাসি এসে আসন্তানা বাঁধে আজ চল্লিশ বছর আগে। আমার তখন অন্যরাগ বয়েস। তিনিই আমার ওস্তাদ। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েচে দেখে উঠলাম। জগো, গোপাল ও আমি ঘন বনের পথে আবার ফিরি। তখন কুঠীর মাঠের জঙ্গলে অন্ধকার বড় ঘন হয়েচে। ওরা বাঘের ভয়ে বনের মধ্যে কথাবাত্তা বলে না। আমি যত সাহস দিই, ওরা তত ভয় করে। আমাদের ঘাটে যখন এসোঁচি, তখন নিস্তবধ নদীচরের ওপরকার আকাশে অগণ্য দ্যতিলোক-বনাশিমের ফল ফোটা ঝোপটি ঘাটের ওপর নত হয়ে আছে, জোনাকী ঝাঁক জলচে অন্ধকারের ফাঁকে ফাঁকে। বাড়ি এসে দেখি সবাই বাড়ির চারিদিকে প্ৰদীপ জেবুলেচে, কারণ আজ দীপ দান করবার নিয়ম! ক্ষদদের বোধনতলায়, আমার লেখবার ঘরের সামনে, পটিদিদিদের রোয়াকে, খিড়কীর পথে, বাঁশবনে—সব্বত্র প্রদীপ জবলচে। ন-দি হেসে বললে—এই দ্যাখো, এবার তোমাদের কলকাতার হ্যারিসন রোড হয়ে গিয়েচে। না ? ক-দিনই বড় আনন্দে কাটল। আজ দাপরে একটা মালো এলো সাপ খেলাতে । আমতলায় চেয়ার পেতে আমরা সবাই বসে সাপ খেলানো দেখি। ন-দি, খড়িমা, ক্ষদ, পাঁচী, জাগো, গোপাল-সাপ খেলা দেখে সবাই খাব খােদশী। এবার পজোর ছটিতে যত গান শানেচি দটাে গান আমার মনে বড় ছাপ রেখে গিয়েচে, গানের সরের জন্যে নয়, যে বিশেষ স্থানে ও বিশেষ অবস্থায় সেই গান দটি গাওয়া হয়েছিল তার জন্যে। সেদিন পাহাড় পেরিয়ে এসে রথোমের মদীর দোকানো একটা ছোকরা যে গাইছিল ৪— হায় হায় শিশীকালে ছিলাম। সখে. এ গানটার এই পৰ্যন্ত মনে আছে। আর একটা আজকার সাপড়ের গানটা ঃ সোনার বরণ লখাই আমার হয়ে গেল। কালো (ওগো) কি সাপে দংশোচে তারে তাই আমাকে বলো। সাপড়ে উচ্চারণ করলে,--“ডংশোচে”-তাই যেন আরো মিষ্টি লাগলো। তার পরেই রোদ পড়ল। কুঠীর মাঠে বন ঝোপের ধারে কেলেকোঁড়ার লতায় ফল্যের সগন্ধে বৈকালের বাতাস ভারাক্রান্ত। তারই মধ্যে কতক্ষণ বসে রইলাম, বেড়ালাম। ছেলেমানষের মত প্রকান্ড মাঠটার এদিকে ওদিকে ছাটোছটি করে বেড়িয়ে আবার যেন বালের আমোদ ফিরিয়ো পেলাম। ভাগ্যে ওদিকে কেউ লোকজন থাকে না। তাহলে আমাকে হয়তো ভাবতো পাগল । পল্লীপ্রান্তের বনশোভা ও বনপল্পের সবাস আর এবারকার অপ্রতিহত পরিা SC