পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখন রাত সাতটা। ধোঁয়া এত বেশী যে আকাশে সপ্তমীর চাঁদকে ঢেকে ফেলেচে; ট্রামের আলো, বাড়ীর আলো, রাস্তার আলো, ধোঁয়ার জালের মধ্যে মিটমিট করচে। মনে পড়ল ১৯১৪ সালের এমন দিনের কথা। আজ একুশ বছর আগেকার ব্যাপার। আমি তখন ফাস্ট ইয়ারের ছাত্র, সবে কলকাতায় এসেচি-এই রকম ধোঁয়া দেখে মন তখন দমে যেত। নতুন এসেচি গাছপালা ও ইছামতী নদীর সংসগ ছেড়ে। তারপর কতদিন কেটে গেল—ক’ত বিপদ, আনন্দ, দঃখ ও আশার মধ্য দিয়ে। তখন আমরা সবাই viser The world was very young then-TNICM3 Serie G. s.3 frt as বৈশাখে ছোট মামার বিয়ে হল। এখন মন পরিণত হয়েচে—কত ভুল শৱধরে নিতে পেরেচি, অপরের মত সহ্য করবার ক্ষমতা অভ্যাস করেচি-আমার মনে হয় জীবনে এই জিনিসটাই সব চেয়ে বড়। Intolerence-এর চেয়ে বড় শত্র জীবনে আর কিছল। নেই। ইউনিভাসিটির আলোগালোর দিকে চেয়ে সেই সব দিনের কথাই মনে পড়ছিল, সঙ্গে সঙ্গে আনন্দও পেলাম খােব। জীবনে একটা গভীরতার দিক আছে, সেটা সব সময় আমাদের চোখে পড়ে না-এই রকম নিজনে বসে না ভাবলে। কাল মতিলাল ও আমি ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরী থেকে বেরিয়ে কাতজন পাকে অনেকক্ষণ বেড়ালম ও গলপ করলাম। মতিলাল আমার ক্লাসফ্রেন্ড, ও কলেজ থেকে বার হয়ে কিন্তু বিবাহ বা চাকরি করলে না, পৈতৃক কিছ. টাকা আশ্রয় করে আজ ষোল বছর ধরে ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরীতে পড়চে– জানবার জন্যে যে, মানষের আত্মা সত্যিই অমর কি না। ও বললে, মা মারা যাওয়ার পরে এ প্রশন আমার মনে জাগে –তারপর ঢািকলাম ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরীতে, নিজেও অনেক বই কিনেচি। বললাম--কি সিদ্ধান্তে উপনীত হলে ? ও বললে-- মানষের আত্মা অমর। আমার আর কোনো সন্দেহ নেই। —তা তো হল, কিন্তু জীবনটাকে দ্যাখো এইবার। পড়াশনো করেই জীবন কাটালে। এবার সংসার করা। জীবনের অভিজ্ঞতা কোথায় তোমার ? মতিলাল বললে—‘এবার ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরী ছাড়বো। একখানা বই লিখচি এ বিষয়ে। সেখানা শেষ হতে আর বেশী দেরি নেই। এবার ছাড়বো। তারপর ওখান থেকে ইডেন গাডেনে বেড়াতে গিয়ে দেখি শেরিফ বিড়লাটকে যে গাডেন-পাটি দিচ্ছে সেই উপলক্ষে বাগানে চমৎকার আলো দিয়ে সাজিয়েচেগাছপালার ফাঁকে পণচন্দ্র উঠচে যখন ঝিলের ধারে ফটেন্ত ফলগালোর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ওখান থেকে গিয়ে মাঠের মধ্যে একটা ক্লাবের সাদা বেশুির ওপর বসলাম--সামনেই পণিমার চাঁদ। স্থানটা নিজজন---কেবল আধাজ্যোৎসনা অন্ধকারের মধ্যে একজন অশবারোহী পলিস এল, গেল। আধঘণ্টা পরে লড রবার্টস-এর প্রতিমতির পাদপীঠে গিয়ে দেখি শািন্ধ গিরিশ বোস এসে শায়ে আছেন, ডাঃ রায়ের* চাদর পাতা, কিন্তু তিনি বালিগঞ্জে গিয়েচেন এখনও আসেন নি। তাঁর আসতে একটি দেরিই হোল। সোয়েন হেডিনের তাকলা-মাকান মরভূমি পার হওয়ার গল্প করলাম —ওঁরা খাব মন দিয়ে শনলেন। সকালে বীরেশ্ববরবাব এলেন। তারপর বালিগঞ্জে অন্নদা দত্তের বাসায় গেলাম,

  • আচাষ প্ৰফল্লচন্দ্র রায়।

RR