পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাপরে নিমন্ত্রণ ছিল। অন্নদাবাবরে শরীর খাব খারাপ-পকোব দেশের জন্যে খব করেচেন-এখন কেউ মানে না, পৌছে না-অথচ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল স্কুলের জন্যে উনি কি ভয়ানক পরিশ্রমই না করেচেন। আমি সব জানি। ১৯২২-২৩ সালের কাউন্সিলে উনি চট্টগ্রামের প্রথম M. L. C. ছিলেন। আমি ওঁর কাগজপত্র আমাদের League Office থেকে টাইপ করে এনে দিতুম। অন্নদাবাবর মেয়ে মণির সঙ্গে পনেরো বছর পরে দেখা। ওর ভাল নাম যে মণিকুন্তলা তা আমি আজ এত কাল পরে ওর মাখে শািনলাম। মণি তখন ছোট মেয়ে ছিল,-আমি যখন ১৯২২ সালে অন্নদাবাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। চট্টগ্রামে। আমার মাখে গলপ শািনতে ও ভালবাসত। মণি যে বত্তি পেয়ে ম্যাট্রিক ও আই-এ পাস করেছিল-সে সব খবর আমি আজই প্রথম জানলাম। ওর ছোট একটি মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে রইলাম-বেশ চার মাসের ছোট্ট খাকীটি। পথিবী অদভুত, জীবন অদভুত। কে ভেবেছিল যে আজ এত বছর পরে মণির সঙ্গে বালিগঞ্জে এভাবে আবার দেখাশোনা হবে! মণির মখে শািনলাম সপ্রভা মণিদের নিচে পড়ত এবং দী-জনে একসঙ্গে দেশে যেত। ওখান থেকে বার হয়ে আমি আর বেগন এলাম মণীন্দ্র বসার বাড়ি। সেখান থেকে সরমা বসার বাড়ি,--রামমোহন রায় রোডে। বেশ সাজানো বাড়ি, সাজানো ড্রয়িং রাম। সারমা বাস ও তাঁর একটি বোন গান গাইলেন বড় চমৎকার। মেয়েটি মিউনিকে ছিলেন, ইউরোপীয়ান মিউজিক শিখতেন। দেখে মনে হোল এই সব মেয়ে, মণি, সরমা বস কেমন চমৎকার ঘর বর পেয়েচে, বেশ আছে। কিন্তু যার আরও বেশী ভালভাবে এ সব জিনিসী পাওয়া উচিত ছিল--- সে কোথায় পড়ে কম্পট পাচ্চে, তার কিছই হোল না। জীবনে এমন ট্র্যাজেডি কতই যে হচ্চে প্রতিনিয়ত। অথচ সে কি বন্ধিতে, কি বিদ্যায়-কোন অংশে এদের চেয়ে কম তো নয়ই, বরং অনেক বেশী। ভেবে সত্যিই বড় কম্পট হয়। সরমা বসর সন্দর গান শনিবার সময়ে আরও মনে হোেল পল্লীগ্রামের সেই সব অভাগিনী মেয়েদের কথা, যারা জীবনে কোন সখই কোনদিন পেল না। এমন কত আছে, জীবনে তাদের সঙেগ কত ভাবে কত পরিচয় । আজি সন্ধ্যায়। তাদের সবারই করণ মখ মনে পড়ে আনন্দের পরিবত্তে গভীর দঃখ ও সহানভূতিতে মন ভরে ऐछठेब्न । আজ সাতভেয়ে-তলায় আমাদের বনভোজন গেল। বনগাঁয়ের আমাদের বন্ধ বান্ধব উকীল মোক্তার সকলেই ছিল, তা ছাড়া সাবরেজিসট্রার ও ডাক্তার। বেলা দশটার সময়ে নৌকো করে আমরা গান করতে করতে নদীপথে চলোঁচ-পরনো বনগাঁ ও শিমলতলার সবাই ভাবচে এ আবার বাবদের কি খেয়াল! তারপর বটতলায় গিয়ে মাদর পেতে বসে আমরা সবাই খব গল্পগজব করলাম। আমরা ধর্মপান করতে পারি নি, কারণ প্রবীণের দল সব্বদা কাছে কাছে রয়েচে। সতীশ মামাকে অনেক কৌশল করে সরিয়ে একটা আমাদের সবিধে করে নেওয়া গেল। এর আগেও গত পড়জোর ছটিতে একদিন সাতভেয়ে-তলায় এসে খন্দ, খড়ীমা, ন-দি আমরা সবাই বনভোজন করে খেয়েছিলাম । এত বড় বটগাছ। এখানে আর কোথাও নেই-এক রাজনগরের বট ছাড়া। নদীর দ-ধারে এড়া শিশুর ফল ফটে আছে—কিন্তু কুঠীর মাঠের সে শোভা নেই। এখানে। রামায়ণে সেই শোলাকাটা মনে পড়ল সন্তি নদ্যো দন্ডকোষ তথা পঞ্চবটী বনে। সরয-বিচ্ছেদ-শোকং রাঘবস্তু কথং সহেৎ ॥ Sని