পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ এ বছর গ্রীলোেমর ছটির প্রথম দিন। এখানকার। বাড়িতে কেউ নেই, পাড়া নিজজন একমাত্র পাঁচী ও ন-দিদি আছে। বকুলতলায় দাপরে অনেকক্ষণ বসে Valia, গলপটি পড়ছিলাম। একটা দাঁড়াশ সাপ সােপদের নারিকেল গাছটাতে উঠে পাখীর বাসায় পাখীর ছানা খাজচে । আর পাখীগলো তাকে ঠকরে কি বিরান্তই করচে। গঙ্গাহরি, তুলসী, হাজ সবাই আমার কাছে এল। দাপরের পরে একটি ঘামিয়েচি, নিজজন মেঘমোদর অপরাহ, বাঁশবনের দিকে গরম চরচে, মেজ, খড়ীমার বাড়ীর দিক থেকে মেজ খড়ীমার গলার সাের পাওয়া যাচ্চে। বাবার একটা শেলাকের খানিকটা মনে এল ঘামের ঘোরে। এত সপাল্ট মনে এল যেন বাবার সঙ্গে বসে আমি কবিতা আবদুত্তি করাচি বাল্যদিনের মত। কথাটি এই—“নীচৈত্সবভিরচিঃ” এই টকরোটাকু যেন উদ্ভট শেলাকে ছেলেবেলায় পড়েছিলাম। আমাদের ভিটের পিছনের বাঁশবাগানে গেলাম বেড়াতে ও আমগাছের ফল গানতে। এখান থেকে বেলেডাঙ্গার মাঠ। কুঠীর মাঠের বাড়ির দ-ধারে বন কেটে উড়িয়ে দিয়েচে-সেই লতাবিতান, সেই ঝোপ-ঝাড় এবার কোথায় উড়ে গিয়েচে । দেশময়ই দেখচি এই অবজ্ঞা। বেলেডাঙ্গার পথের ধারে একটা কামারের দোকানে দশ-বারো জন লোকে বসে আছে।--তার মধ্যে বিরাশি বছরের সেই হরমোতীও বসে আছে। বহ,বছর আগের মোল্লাহাটী কুঠীর সাহেবদের গল্প মো করলে। পলের ওপরে গিয়ে দাঁড়ালম-এক ফকির সেখানে গোয়ালপাড়ার একটা মেয়ের সঙ্গে বসে গলপ করচে। আমায় আবার সে ভক্তি করে একটা বিড়ি খাওয়ালে। আমি তাকে একটা পয়সা দিলাম। হরমোতী এসে বললে—“বাবা, দকখের কথা বলবে কি, আমার ছেলেডা বলে, তোমাকে আর ভাত দেব না। বিরাশি বছর বয়েস আমার কোথায় এখন যাই আমি এই বেদধ বয়সে ?” সন্ধ্যাবেলা ন-দির সঙ্গে রেণার গলপ করি। রাত্রে এখন ঢোল বাজচে, জিতেন কামারের বাড়ি নাকি মনসার ভাসান হচ্চে। একবার ভাবচি যাই, কিন্তু বাড়িতে আমি একা, তার ওপর আজ অমাবস্যার রাত-জিনিসটা-পত্রটা আছে, ফেলে রেখে ভরসা। করে যেতে পারাচি নে। রোয়াকে বসে লিখচি ভারী আরামে, বকুলগাছে, কুলগাছে কত কি পাখী ডাক{ে --বিলবপলেপির মধর গন্ধ ভেসে আসচে। বাতাসে—দটো বিড়ালছােনা আমার মাদরের ওপর লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা করচে, সামনের রাস্তা দিয়ে ছেলেরা আম পাড়তে যাচ্চে, জেলেরা মাছ নিয়ে যাচ্চে। একবার পটল যাচ্ছিল, আমি ডেকে বললাম। --ও পটল উমা চলে গিয়েচে ? পাটল বড় লাজক মেয়ে। পেয়ারাতলা পৰ্যন্ত এসে নিচামখে দাঁড়িয়ে বললে— দিদি। ২৭শে জ্যৈষ্ঠ চলে গিয়েচে দাদা। ছেলেবেলার সেই বড়ো আকন্দ গাছটােয় থোলো-থোলো ফল ফটেচে। পাখীর ডাক আর পক্ষেপর সবাসে মাতিয়ে রেখেচে । বিকেলে হাটে গেলাম। এ বছর গ্রীল্ডেমর ছটিতে প্রথম হাট। পথেই আফজলের সঙ্গে দেখা, সে হাটে পটল বেচিতে যাচ্চে। তুততলার স্কুলের ভিটে দেখিয়ে বললেদা-ঠাকুর, এখানে মোরা পড়িচি, কত আনন্দই করিচি এখেনে, মনে আছে? তা আছে। তুততলার স্কুলের কথায় হাঁড়ি-বেচা মাসটারের কথা উঠল, আর কে কে আমাদের সঙ্গে পড়তো, সে কথাও উঠল। অনেকদিন পরে গোপালনগরের হাটে গিয়েচি। সেই আশিবন মাসের পজোৰ ছটির পর আর আসি নি। সবাই ডাকে, সবাই বসতে বলে। মহেন্দ্র সেকারার ¥oካዖ