পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কখনো এদের চিনিনে, চাটগাঁয়ে এই আমার প্রথম আগমন। বেশ বড় বাড়ি, ঢকে বাইরের ঘরে দজন চাকরের সঙ্গে দেখা—জিজ্ঞেস করে। জানলাম বাড়ির কত্তা কাছারিতে বেরিয়োচেন, আসতে প্রায় চারটে বাজবে। সতরাং বসেই আছি, কাউকেই জানিনে এখানে, কত্তার সঙ্গে দেখা করবার পরে যাবো, না হয় একটা বসি। বাড়ির মধ্যে থেকে এসে চাকরে জিজ্ঞেস করলে—মা জিজ্ঞেস করচেন, আপনি কি 5ान कgदन ? বললাম-সনানাহার করবার কোনো দরকার নেই এখন। আমার সকল দরকার শেষ হলে আমি এখান থেকে চলে যাবো। —না, তা হবে না। বাব, আপনাকে খাওয়াদাওয়া করতে হবে, মা বলে দিলেন। বাড়ির কত্রীর আদেশ অমান্য করতে মন উঠলো না। সনানাহার সেখানেই করলাম এবং কত্তা কাছারি করে বাড়ি ফিরে এসে আমার সঙ্গে আলাপ করবার পরে বললেন —যদি কিছ মনে না করেন, এখানেই থাকুন না কেন ? আমি আপত্তি করলাম-ডাকবাংলোয় যাবো ভেবেচি, কেন মিছে আপনাদের কম্পট দেওয়া ? আমার আপত্তি গ্রাহ্য হল না। বৈঠকখানার পাশের ঘরটায় আমার থাকবার জায়গা হল এবং এর পরে দিন দশেক কাজের খাতিরে চাটগাঁয়ে ছিলম-অন্য কোথাও আমায় ওঁরা যেতে দিলেন না। বড়। উদার পরিবার, দ-পাঁচ দিনের মধ্যে আমি যেন তাঁদের বাড়ির ছেলের মতো হয়ে গেলাম। বাড়ির মধ্যে গিয়ে রান্নাঘরের মধ্যে খেতে বসি, মেয়েরা পরিবেশন করে, কাউকে দিদি কাউকে মাসিমা বলে ডাকি। তাঁরাও আমায় সেনহের চোখে দেখেন। বারো দিন পরে যখন আমি চাটগাঁ ছেড়ে কক্সবাজার গেলাম, তখন সত্যিই তাঁরা অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে পড়লেন, বার বার বলে দিলেন, আমি যেন ফিরবার সময় আবার এখানে কক্সবাজারে যাবার পথে মহেশখালি চ্যানেল নামে ক্ষদ্র সমদ্রের খাড়ি পড়ে। দরে চর কুতুবদিয়াতে লাইট হাউস ও আদিনাথ পাহাড়ের দিকে চোখ রেখে আমি এদের কথা কতবার ভেবেচি। এতদর বিদেশে যে আত্মীয়-বন্ধ লাভ করবো, তাদের ছেড়ে আসতে যে কম্পট হবে, তারাও চোখের জল ফেলবে। আমার আসবার সময়ে-এ অভিজ্ঞতা আমার জীবনে তখন নতুন, তাই বড় আশচয্য মনে হচ্ছিল ব্যাপারটা। কিন্তু পরবত্তী জীবনে কতবার এ অভিজ্ঞতা আমার যে হয়েচে। পর কতবার আপন হয়েচে, এমন কি আমার বিশবাস পর যত সহজে আপনি হয়, আপনার লোকে তাত সহজেও হয় না এবং তত আপনিও হয় না। কক্সবাজারে একদিন একটি ঘটনা ঘটেছিল। জীবনের সে এক বিপদজনক অভিজ্ঞতা-প্রাণসংশয়ও ঘটতে পারতো সেদিন । কক্সবাজারে সমদ্রের ধারে সাগরবেলায় জোয়ার নেমে গেলে কড়ি, শঙ্খ, ঝিনক ইত্যাদি কত পড়ে থাকে ; বড় বড় সমদ্রের ঢেউ এসে কলে তুলে দেয়। জ্যোৎস্নাপক্ষের রাত্রি, কত রাত পয্যন্ত সেখানে একা চপ করে বসে থাকি, যশোর জেলার একটি ক্ষদ্র পল্লীগ্রাম থেকে কতদার যেন চলে এসেচি, সেখানকার ক্ষদ্র নদী ইছামতীর দােপাড়ের বাঁশবনের কথা ভুলতে পারিনে, এতদরে বসে দেশের সর্বপ্ন দেখতে कि ऊांढरे व ढाका ! কাউখালি বলে ছোট একটি নদী বা খাল। কক্সবাজারের পাশ দিয়ে এসে সমন্দ্রে SRV