পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চর, নীল উদার আকাশ, বিষােশ্যাম তৃণভূমি, আষাঢ়ের টলটলে কালো জল ইছামতী, জোনাকির ঝাঁক, বৌ-কথা-কও’ পাখীর ডাক, এসব ছেড়ে যেতে কািন্ট হয়। জীবনের বেগ যেন মন্দীভূত না হয়। আমাদের দেশে, আমাদের জাতীয় জীবনে তার আশঙ্কা খাব বেশী। পেট্রাক সম্পবন্ধে যেমন উক্ত হয়েচে-"it is a Noble Florentine profile, the whole aspect suggesting abundance of thought and life আমাদের দেশে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কার সম্পবন্ধে সে কথা বলা যায় ? রাত্রে মান রায়ের বাড়িতে সামাজিক দলাদলির মিটিং হোল রাত একটা পৰ্যন্ত। গাঁয়ের সবাই ছিল, কিছতেই আর মেটে না। নানা কথা ওঠে, এ রাগ করে চলে যায়, ও রাগ করে চলে যায়। শেষ পৰ্যন্ত কিছ মীমাংসা হোল না। আমায় দা-বার ডাকতে এল, আমি যাই নি। সারাদিন বর্ষার বান্টি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, পথে ঘাটে জল বেধেচে। বৈকালে বন্টি একটা ধরেছিল, সন্ধ্যায়। আবার মেঘ এল ঘনিয়ে। আমি সেই সময় নদীর জলে নেমেচি নাইতে-মাধবপরের পারের ওপরে সেই মেঘনীল দিগম্বলয়ের পটভূমিতে একটা শিমল গাছ কি সন্দির দেখাচ্চে। এই ইছামতী, এই মেঘমালা, এই বর্ষার সবজি বনভূমি এমনি থাকবে—অথচ আমরা চলে যাবো। আমাদের সকল সখ-দঃখ নিয়ে, আজকের এই মেঘ-মেদর সন্ধ্যার সকল অনভূতি নিয়ে। ঘাটের ওপর ওই বনাসিমলতার কোলের নিচে খকুর সে ছবিটা ক্ৰমে বহন্দরের হয়ে পড়েচে, এই পল্লীনদীটির শ্যামতীরে বাঁশ ও বনসিমলতার ছায়ায় অক্ষয় হয়ে থাকবে সে ছবি, এর আকাশে বাতাসে মিলিয়ে, কিন্তু তাকে চিনে নেবার লোক থাকবে না কেউ, কেউ এমন থাকবে না। যার মনে ও ছবি বেচে থাকবে। বারাসাত গেলাম পাশপাতিবাবার কাছে। উনি সকালেই যেতে লিখেছিলেন। কিন্তু শরীরটা একটি খারাপ ছিল। বারাসাত নেমে দেখি এ অঞ্চলে খােব বলিষ্ট হয়ে গিয়েচে-অথচ কলকাতায় এক ফোঁটাও জল নেই। হাসপাতালে গিয়ে দেখি পশপতিবাব জেল দেখতে গিয়েছেন। আমি বসে রইলাম, তারপর পাশপাতিবাব এলেন। আমায় পেয়ে খাব খাশি। দী-জনে হাসপাতাল দেখতে গেলাম, গোবরডাঙ্গা থেকে এসেচে একটা জখম রোগী। তার মাথায় দ-তিনটে বড় বড় গত। তার বড় ভাই নাকি বিষয়ের ভাগ দিতে হবে বলে তার মাথায় ওই রকম মেরেচে। পাশপাতিবাব বললেন, লোকটা বাঁচবে না। জাতিতে ব্ৰাহ্মণ, গাণ্ডগলি, গোবরডাঙার কাছে বেড়গামি গ্রামে বাড়ি। হাসপাতালের কালো, মোটা মত একটা নাস ওকে যত্ন করচে দেখলাম। তারপর জেল দেখতে গেলাম। তখন কয়েদীরা খেতে বসেচে। খাবার বন্দোবস্ত দেখে মনে হোল জেলের মধ্যে ওরা বেশ সখেই থাকে। দিব্যি সাদা, চালের ভাত, তরকারিটা রোধেচে তার বেশ সদগন্ধ বেরচ্ছে, ডালটাও বেশ ঘন। সপ্তাহে একদিন মাছ, একদিন মাংস দেয়। ওরা নিজেদের বাড়িতে অমন খাদ্য প্রতিদিন তো দারের কথা কালেভদ্রে খেতে পায় কি না সন্দেহ। একজন কয়েদী ভদ্রলোকশ্রেণীর, তাকে বললাম, আপনার কি হয়েছিল, কতদিনের জেল ? বললে, চিটিং কেস মশাই। পনেরো মাসের জেলা। আর একটা ছোকরাকে বসিরহাট অঞ্চল থেকে ধরে এনেচে । BD DBB BBDLDB BDBD D DB BDSDD BDDBD GkR