পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরদিন বিকেলে তরদের বাড়ি গেলাম শ্যামবাজারে, সেখান থেকে সন্ধ্যায়। রঙমহলে বিধায়ক ভট্টাচায্যের নাটক দেখতে গেলাম ‘কালের মন্দিরা বাজে” ও “অতি আধনিক’। নাটক দাখানা কিছই নয়, অতি বাজে, তবে গান ও variety show হিসেবে অনেকগলো গণেী লোককে একক করেচে বটে, নাটকের সঙ্গে তার কোনও সম্পক নেই। হেমেনদা এসে এক কোণে চপ করে বসে আছেন। দেখা করে এলাম । সবাই মিলে একসঙ্গে বসে খােব জমিয়ে আড়া দিতে দিতে থিয়েটার দেখা গেল। গত শক্রবারে শ্ৰীীরামপারে দিদির মেয়ে প্রভার বিয়ে হোল। আমি প্রথমে গোলাম দদের বাড়ি। লীলাদির শরীর প্রথমে খবই খারাপ হয়েছিল। এখন কিছ সেরেচে। অমিয় কলেজ থেকে এল রমেশ কবিরাজকে সঙ্গে করে। ওখানে অলপক্ষণ বসেই দিদির বাড়ি গেলাম। ওরা সকলে মিলে সত্ৰী-আচারের সময়ে বরকে ঘিরে আলো নিয়ে প্রদক্ষিণ করলে। আমি ওদের সকলকে অনেকদিন পরে এক জায়গায় দেখলাম-বড় ভাল লাগছিল। রাত দশটার ট্রেনে কলকাতায় এলাম। পরদিন শনিবার বনগাঁ যাব, ঠিক দপারবেলা থেকে ঝমােঝম বলিট শহর হোল —অতি কন্টে বান্টির মধ্যে দিয়ে তো ট্রেন ধরলাম। বান্টিস্নাত ঘন সবজি গাছপালা, ধানের ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে ট্রেন বনগাঁ গিয়ে পৌছল। খয়রামারিতে ফটবল ম্যাচ দেখতে গেলাম। তার পরদিন সকাল থেকে কি বিশ্ৰী বাদলা। নদীয় জলে ঘোলা এসেচে, ঘাস পৰ্যন্ত ডাবে গিয়েছে, এত জল বেড়েচে নদীতে। এখন তো খবই ভাল, মশকিল। বাধবে সেই কাত্তিক মাসে যখন হাঁটভার কাদা হবে নদীর ধারে সব্বত্র। সোমবার বৈকালে চলে এলমে কলকাতায়। দিনটা পরিস্কার ছিল, নীল আকাশ, রৌদ্রও উঠেচে। মনে হোল ওই প্রজাপতির দলের উড়ে বেড়ানোর দিকে চেয়ে চেয়ে সারাদিন যদি বসে থাকি, চমৎকার গলেপর পালট মনে আনতে পারি। এই আলো ছায়ার খেলাতেই মনের ভাব নতুন ধরনের হয়-মাটির সঙ্গে প্রস্ফটিত ভায়োলেট রঙের বনকলমী ফলের শোভা বান্টিধোয়া নীল আকাশের রাপে। আজ স্কুলের ছাদ থেকে দাপরের চনমনে রোদে দীর আকাশের দিকে চেয়ে রবীন্দ্রনাথের গানটি মনে পড়ল কেন বাজাও কাঁকন কনকন' কত ছল ভরে। ওগো, ঘরে ফিরে চল কনককলসে জল ভরে’ ৷ এই গানের ছত্ৰ দটির সঙ্গে আমার আঠার বৎসর পক্‌বেকার প্রথম যৌবনের জীবনের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পক আছে। চেয়ে চেয়ে মনে হোল বন্যাসতেজ সবজি গাছপালা বনঝোপে ঘেরা কোন একটি নিভৃত পল্লীভবনে তারা এখনও সব কিশোরই রয়ে গিয়েচে কত বৎসর আগের সেই এক প্রথম শরতের দিনগলির মতো। কোথায় যে তারা ছায়াছবির মত মিলিয়ে গিয়েচে রজনীর মধ্যযামে শরিকা চতুর্থীর চাঁদ যেমন মিলিয়ে যায়, এ কথা ভুলেই গেলাম ক্ষণকালের জন্যে। পেট্রাকের সম্পবন্ধে যে কথা হয়েচে, বড় 5 Got to "Know that for a lofty soul death is but a release from prison, that she frightens only those who look for their whole happiness in this poor earth.' off প্রায় ছ-বছর পরে আবার রামরাজাতলায় গিয়েছিলাম রামরাজা ঠাকুরের ভাসান দেখতে। ননীদের বাড়ি গিয়ে উঠলাম, জতু খাব খাশি হোল, জতুর মাকে দেখলাম 66