পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ বহনকাল পরে। অনেক সব পরোনো কথা হোল। সাঁতরাগাছি গ্রাম সম্পবন্ধে ননী এমন সব গলপ করলে যাতে জায়গাটার ওপরে আমার কোন শ্রদ্ধা রইল না। একজন লোকের সন্ত্রী একটি পাগল মত, সে লোকটা নাকি তার সন্ত্রীকে প্রায়ই এমন মারে, যে দশ-তিন দিন বেচারী আর উঠতে পারে না। অথচ সেই লোকটি এখানে নাকি একজন সমাজপতি ! কলকাতার এত কাছে কালচার বলে কোনও জিনিস নেই। এখানে, দাপরে ঠেসে খাওয়া। গ্রামটাও অত্যন্ত নোংরা, চারিদিকে খোলা ড্রেন, জঞ্জাল, দগন্ধ, নোংরা জল গড়িয়ে চলেচে রাস্তার পাশ দিয়ে। আমি যতক্ষণ ছিলাম, দম বন্ধ হবার উপক্রম হয়। আর কি। রামরাজার মিছিল বার হবার আগে আমি ননী দী-জনে পথের ধারে একখানা গরর গাড়ির ওপর গিয়ে বসলাম। প্রথমে বাক সাড়া ও ব্যাতড়ের নবনারী কুঞ্জর বেরাল, সঙ্গে অনেক সঙ, কাগজের এরোপেলন, রাক্ষসী ইত্যাদি। পেছনে এল রামরাজার মিছিল। শেষের মিছিলাটাই বড় কিন্তু এমন কিছ দেখবার কি আছে বাঝলাম না। রাস্তার দ-পাশে, ছাদে, বারান্দায়, পথের ধারে হাজার হাজার মেয়েমানষের ভিড়। এ মেয়েদেরই দেখবার জিনিস। ওরা আজ এখানে আসে রামরাজাতলায় সিদর দিতে ও মিছিল দেখতে। সব মেয়েরই কপালে অনেকটা করে সিদর লেপা। ভিড়ের মধ্যে আমাদের গাঁয়ের কিশোরী কাকার ছেলে সন্তোষ আর জীবনের সঙ্গে দেখা হোল। সন্ধ্যার সময় আবার ননীদের বাড়ি ফিরে এসে চা খেলাম। আজ ২৩শে শ্রাবণ বলেই মনটা মাঝে মাঝে অনেক দরে চলে যাচ্ছিল, অনেক দিন আগেকার। এই সন্ধ্যা-গোধলির একটা ছবি পর-পর আমার মনে আসছিল। জতু দেখলাম মনে করে রেখেচে, সে ননীকে বললে-কোন গানটা গাওয়া যেত না বিভূতির সামনে, মনে আছে ? ননীরও মনে আছে। সে বললে-জানি ৪ °সে মািখ কেন অহরহ মনে পড়ে। এই গানটা। আমি হাসলাম। এরা বেশ লোক। আমার জীবনের কতদিন আগেকার কথা এরা কেন মনে রেখেচে, কি দরকার। এদের!'৷ বিশেষ করে জন্তু মেয়েটি বড় ভাল, এত স্নেহশীলা! সন্ধ্যার পরে চলে এলাম, বাসে ভয়ানক ভিড়, মল্লিকের ফটক বন্ধ, বাস ঘরে এল জামতলা দিয়ে। সারাদিন পরে কলকাতার মন্ত হাওয়ায় এসে এখন বাঁচলাম। জতু বার বার বললে-আজ রাতটা থেকে যান না, পাঁপর ভাজবো এখন। আমার থাকবার জো নেই, লেখা আছে। বললাম-আর একদিন এসে রাত্রে থাকব। স্পেনের বিদ্রোহ কি ভীষণ মৰ্ত্তি ধারণ করেচে। বাড়জোজ শহর বিদ্রোহীরা অধিকার করেচে, রাস্তায় রাসােতা barricade এবং প্রত্যেক barricade-এর গায়ে মতদেহ সতপোকার হয়ে আছে, আর সত্ৰীলোক ও বালক-বালিকারা মতদেহের সন্তাপ খাঁজে নিজেদের বাপ, ভাই, ছেলে, সবামীর দেহ বার করতে ব্যস্ত। মানষ এখনও কত আদিম যাগে পড়ে রয়েচে তা এইসব ঘটনা থেকে বোঝা যায়। জাম্পমানিতে বিদ্রোহের সময়েও ঠিক এই ধরনের নিন্ঠর কান্ড এই সেদিন ঘটে গিয়েচে, Ernest Toller-এর বই পড়লে তা জানা যায়। মানষের প্রতি মানষে এমন senseless নিষ্ঠরতার অন্যঠিান কি করে করতে পারে ভেবেই পাই নে। এর মধ্যে বড় মানষও জন্মেচে বৈকি! Ernest Toller-এর ভাষায় বলিঃIn the war there lined a man among millions Karl Liebkrecht; his was the voice of truth and of freedom. Even the prison groove could (ky