পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-भान्स९3 नाकि ? -সবিধে পেলে ছাড়ে না। ঘরের বাইরে এসে চারিদিকটা ভালো করে দেখে নিলাম। বাংলোর পিছনে বোধ হয় একশো হাতের মধ্যে উচ্চ পাহাড়। ঠিক এ রকমই পাহাড় ও বাংলোর সম্মেলন এইবার আর এক জায়গায় দেখেছিলাম। সে কথা পরে বলব। সেটা হোল মানভূম জেলায়। পাহাড়ের ঢাল থেকে বনানী নেমে এসে বাংলোর হাতায় মিশেছে, লোকজন তত চোখে পড়ে না। একটা ছোট খড়ের ঘরের সামনে এসে মোটর দাঁড়ালো। বাসিত নয়, অন্ততঃ আশেপাশে লোকজনের বাস দেখলাম না। শািনলাম ঘরটা গবন মেণ্টের বাংলো, বনবিভাগের লোকজন সেখানে এসে মাঝে মাঝে থাকতে পারে। এখান থেকে বামিয়ােবর প্রায় এগারো মাইল দারে। এই এগারো মাইলের মধ্যে লোকজনের বাস নেই—ঘন বনের মধ্যে গাড়ী ঢকে পড়লো ক্ৰমশঃ—মোটর রোড ঘরে ঘরে পাহাড়ের ওপর উঠলো-বড় বড় গাছ দধারে, শাল আর প্রায়ই মহািবয়া। এক জায়গায় বনের মধ্যে একটি ফাঁকা-চেয়ে দেখি আকাশ যেন অনেকখানি নীচে, বৰঝলাম অনেকটা ওপরে উঠে গিয়েচি। মিঃ সিংহ বললেন, মািখ বার করে চেয়ে দেখান, ওই ওপরে ফরেস্ট-বাংলো ! সত্যিই অনেক উচিতে বাংলোটা। যে পাহাড়ে উঠাঁচি, এই পাহাড়ের মাথায় সব্বোচ্চ শিখরে একটা বাংলোঘরের লাল টালির ছাদ একটি একটা চোখে পড়চে । অনেকক্ষণ পরে পাহাড়ের মোড় ঘরে মোটরটা অপেক্ষাকৃত সমতল স্থানে এক প্রকান্ড বাংলোর সামনে এসে থেমে গেল। তখন শীতের সন্ধ্যার রোদ নিকটে দরে ছোট বড় পািব্বতশিখর সোনার পাতে মড়ে দিয়েচে। স্থানটির গম্ভীর দশ্যে মন মগধ হয়ে গেল। যেদিকে চোখ যায়, শােধই বনাবাত পব্বতশিখর, ছোট বড়-নানা আকারের পক্বতাচড়া, কোনোটা গোল, কোনোটা মোচাকৃতি, কোনোট সমতল, ঘন বনে ভরা, আবার কোনো কোনো পািব্বত-গাত্র অনাবািত, কালো ব্যাসালট পাথরের সতর সাজানো, রাঙা রোদ পড়ে সোনার পাহাড়ের মত দেখা যাচ্ছে। বললাম-নিকটে কোনো লোকালয় নেই ? --নিকটতম লোকালয় সেই কুইপা গ্রাম। এগারো মাইল দর। এখান থেকে--বণ্ড নিজজন জায়গা। এখানে কি কেউ থাকে ? -বাংলোর চৌকিদার ফ্যামিলি নিয়ে বাস করে পাহাড়ের নীচের দিকে। " —অদভুত বনের দশ্য বটে। বাঘ ভালক আছে ? —বনো হাতী যথেষ্ট। বাঘও আছে, ভালকও আছে-- চায়ের টেবিল পাতা হোল-আমি প্রস্তাব করলাম, টেবিল টেনে বাংলোর সামনে সমতল জায়গায় পাতা হোক। রাঙা রোদ মাখানো অরণ্য ও পব্বতশিখরের দিকে চোখ রেখে বসে চা খাওয়া যাক। সত্যিই এমন গম্ভীর অরণ্য-দশ্যের মধ্যে চা খাওয়া হয় নি কতকাল। এই বাংলোর সামনে দিয়ে গভীর রাত্ৰে কত বন্য হাতী, বাঘ, ভালকৈ চলে বেড়ায়—গবন মেণ্টের নোটিশ টাঙানো আছে বেশি রাত্রে বাংলোর বারান্দায় কেউ না আসে- এমন নিডজন বন্য পরিবেশের মধ্যে রাটি, মাখন, চা প্রভৃতি সভ্য খাদ্য খাওয়ার নাতনত্ব আছে বৈ কি। চা খাওয়ার পরে মিঃ সিংহ বললেন-অন্ধকার হওয়ার দেরি আছে এখনও ৷ oܠ