পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-ওখানে নেমে চলন দেখি না। -পথের ধারে ওরকম একটা বিরাট area পড়বে অন্য জায়গায়। নীচে নেমে কন্ট পেতে হবে না। ওখানে কিন্তু বিপদ আছে— ーびエ P --সাপের ভয়। অনেক সময় বড় বড় বিষাক্ত সাপ থাকে। একটা সাবধান হয়ে যাওয়া দরকার। 鱼 বাংলোতে যখন পৌঁচেছি, তখন বেলা একটার কম নয়। আমি সনান করতে চাইলাম নীচেকার সেই ঝর্ণার জলে, কেমন চমৎকার কুল,কল,নাদিনী স্বচ্ছসলিল ঝর্ণাটি, বনের ছায়ায় ছায়ায় বয়ে আসচে—দধারে কলের চিমনির মত কেন্দ আর শালের ভিড়। সেইখানেই সন্ন্যান করে আসি। মিঃ সিংহ বললেন-না যাওয়াই ভালো। এসব বর্ণার জল অনেক সময় খারাপ থাকে । হরদয়াল সিং বললেন-একবার লোেহারডগা না নেতারহাট এমনি কোনো একটা জায়গার কাছাকাছি বনে তিনি একটা ঝৰ্ণায় সন্নান করেছিলেন বনের মধ্যে। তারপর সব শরীরে চাকা চাকা কি বেরিয়ে ফলে গেল। তা ছাড়া ম্যালেরিয়া জবর হোতে পারে। অতএব ঝর্ণায় স্নানের আশা ছেড়ে আমরা বাথরমের টবের জলেই সনানপদ্ধব সমাধা করলাম। অলপ কিছশক্ষণ বিশ্রাম করার পর দেখা গেল বনের মধ্যে ছায়া পড়ে আসচে। চারি দিকেই বড় বড় শৈলচড়া, জায়গাটাতে তাড়াতাড়ি ছায়া নেমে আসে। বনের মধ্যে সেই কণার কাছে গিয়ে আমরা সবাই বসলাম সেই অপরাহের । এর নাম দিয়েচে এরা মাছের বাঁধ। বন-বিভাগ থেকে একটা বাঁধ মত গোথে দিয়েচে বেগবতী পাব্বিত্য স্রোতস্বিনীর বকে। তাতে তার গতিরোধ হয় নি, আরও দিবগণ উচ্ছবাসে আবেগে কংক্রিটের বাঁধ ডিঙিয়ে এপারে ঝাঁপিয়ে পড়চে। এই সস্থানটি এত সন্দির, একবার বসলে উঠে আসতে ইচ্ছেই করবে না। এর সামনের দিকে সউচ্চ পাহাড়, তার ঢালতে বড় বড় শালগাছের বন, এখানে বসে শােধই দেখা যায় শালগাছের গড়িগলো। নীচে থেকে ভিড় করে ওপরের দিকে উঠে কোথায় যেন মিলিয়ে গিয়েছে। আমাদের ডানদিকে চওড়া মোটর-রোড বনবিভাগের নিশ্চিমত, কিন্তু এ পথে মোটর অপেক্ষা বাঘ-ভালকের যাতায়াত বেশি। যখন কনট্রাক্টরের দলের বনের মধ্যে থেকে কাঠ কাটিয়ে নিয়ে যায়, তখন বছরের মধ্যে দিনকয়েক ওদের মোট লরি বা মোটর যাতায়াত করে-কাচিৎ বন-বিভাগের উচ্চ কম্পমচারী মোটরে সফর করতে আসেন--মিটে গেল। মোটরগাড়ী তো দারের কথা, সারা বছরে এ পথে আর লোকজন বড় বেশি যাতায়াত করে না। অতিরিক্ত নিৰ্লজান স্থান। চেয়ে চেয়ে দেখলাম, একটা লোক কোনো দিকে চোখে পড়ে না-শােধ যা আমরাই আছি। ঋষিদের তপোবন এমনি নিস্তজন জায়গাতেই ছিল। ভারতের সভ্যতার জন্মস্থান এই বনানী, এখানেই বেদ, উপনিষদ, বেদান্তের জন্ম হয়েছিল--হৈ-হট্টগোলিযক্ত শহরের বকে নয়। পাশের পথ বেয়ে দজন লোক পাটলি কাঁধে কোথায় চলেছে। তাদের ডাকা হোল হো-ভাষায়, অবিশ্যি আমি ডাকি নি। আমি মিঃ সিংহকে বললাম-জিজ্ঞেস করন ওরা কোথায যাচে। -সৌলবোরা যাব। -এখান থেকে কতদার ? ܬ؟