পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়েছিলেন, আমিও ঐ দলই মাসের সংযোগ গ্রহণ করবার জন্যে ওঁর সঙ্গে সারাণড ভ্রমণে বের হই। মনোহরপর থেকে মোটর ছেড়েই আমরা কইনা বলে একটি পাব্বিত্য নদী পার হলম। তারপর রাঙা মাটির অাঁকা-বাঁকা পথ একে বেকে যেতে যেতে সাত-আট মাইল 73.6**gara örtgirls il:Strat (Saranda of seven hundred hills) sistenপ্রান্তরের নীল রেখার সঙ্গে মিশে গিয়েচে, পথের পাশে এখানে একটা ডুংরি (অনার্চ পাহাড়) ওখানে একটা ছোট শালবন, কোথাও বা একটা হো-অধিবাসীদের গ্রাম। মিঃ সিংহ বললেন- এই সেই পথ, মনে আছে আমার গলাপ ? আমি তখনও পয্যন্ত বন দেখি নি সে পথে। বললাম-কেন এ পথ মন্দ নয় OT ? মাইল ছ-সাত পরে কোল-বোংসা গ্রামে পৌছে গেলাম। উনি বললেন-চলন, এ গ্রামে যেখানে রাত্রি যাপন করেছিলাম দেখিয়ে আনি। মোটর থেকে নেমে আমরা একটা পাহাড়ের ওপর উঠলাম। সেই পাহাড়ের * মাথার ওপর ক্ষদ্র একটি কুটিরের সামনে এক বন্ধ লোক খামারে ধান ঝাড়চে, কুমড়োর লতা উঠেচে কুটিরের খড়-ছাওয়া চালের ওপর ; কুটিরের দাওয়া থেকে সম্পমাখের “সারান্ডা-বনকান্তারের শৈল-শ্রেণীর গভীর দশ্য হিমালয়ের পাব্বিত্যভূমির সৌন্দয্যের কথা সমরণ করিয়ে দেয়। হিংসে হোল বদ্ধ ব্যক্তিটির ওপর, এমন সন্দের জায়গায় ওর বাড়ী। মিঃ সিংহ তাকে বললেন--কি জাত ? লোকটা বললে,-“গোসাঁই’। অর্থাৎ ব্রাহ্মণ। এ দেশে ব্রাহ্মণকে বলে ‘গোসাঁই’। এতক্ষণ লক্ষ করি নি। ওর গলায় মলিন পৈত্য ঝালচে বটে। সে পাহাড় থেকে আমরা ওপারের সমতলভূমিতে নেমে আসল গ্রামে পৌছলাম। গ্রামের প্রান্তে একটা ভাঙা কুড়েঘর দেখিয়ে মিঃ সিংহ বললেন—এই ঘরে সেদিন --রাত কাটিয়েছিলাম। কুটিরটির চারধারে বড় বড় শালগাছ, একটা দরে একটা কালো পাথরের ডাংরি অর্থাৎ ক্ষদ্র পাহাড়। সে পাহাড়ের উপর শালগাছের সঙ্গে লতা-পলাশের (Butcasuperba) জড়াজড়ি। বসন্তকালে রক্তপলাশের মেলা যখন শীর হয়ে যাবে বনে বনে, তখন যে কোনো কবি, সাহিত্যিক, ভাবকের পক্ষে কিংবা ভগবানের চিন্তায় মঞ্চন সাধর পক্ষে এই নিভৃত বনকুঞ্জবত্তীর্ণ কুটিরটি অতি লোভনীয় হবে “সন্দেহ নেই। কোল-বোংসা গ্রামে বাস করে হো-জাতীয় অধিবাসীরা, ঘরদের তাদের অত্যন্ত খারাপ-নিতান্ত দীনহীন, কিন্তু তারা এক রমণীয় পাব্বিত্য দশ্যের মধ্যে সব্বদা থাকে, ওদের কুটিরের দাওয়ায় বসলে নীল শৈলমালা ও বনকান্তারের কি শোভন রােপটিই চোখের সামনে ফটে ওঠে। অনেক বড়লোকের বাড়ী হয়তো কোনো এন্দো গলির মধ্যে এক ইটের সন্তাপ মাত্র, দরজার একপাশে দেখা যাবে ডাস্টবিন ; গোটাকতক কাক আর খোঁ কিকুকুর আশপাশে ঘরে বেড়াচ্চে--এমন নীল বনানীর শোভা, এমন রক্তপলাশের উৎসব সেখানে কোথায় ? কোল-বোংসা গ্রাম ছেড়ে মহাদেবশাল বলে একটি পাব্বিত্য নদী নিবিড় বনের মধ্যে বড় বড় পাথরের ওপর দিয়ে কুলকুলা শব্দ করে বয়ে চলেচে। নিভৃত ছায়াকিবতান রচনা করেচে। সারাডো অরণ্যপ্রান্ত। এখান থেকেই চড়াইয়ের পথে মোটর উঠতে OR