পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-কারখানা উঠে গেল কেন ? —ঠিক জানি নে। শােধ সাহেবের বাংলো নয়, কুলিদের ব্যারাক ছিল, কারখানা ঘর ছিল। দেখচি কিছরই চিহ্ন নেই। —১৯২৫ সালের পর এই প্রথম এলেন। ১৯৪৩ সালে ? —তাই। উনিশ বছর পরে। —“পরা যাত্র স্রোতঃ” কালিদাসের সেই শোলাক জানেন তো ? নগরী হচ্চে বন, বন হচ্চে নগরী। কালিদাসের কালেও তো এমন ধারাই ঘটতো। আজ দেখাচেন পোংসায় বি. টি. টি. কোম্পানীর আপিস, মিঃ লকনার তার বড় সাহেব। দ-দিন পরে সব জঙ্গল হয়ে যাবে, বনো হাতীর ভয়ে দিনমানে মোটর চালানো দত্তকর হবে। এইভাবে সেদিন আমি মিঃ সিংহের গলেপ বাণিতি পথ নিজের চোখে দেখেছিলাম। কিন্তু আমি সারান্ডা ফরেস্টের গলপ বলতে বসি নি, বলছিলাম চিন্টিমিটি থেকে আমাদের চাইবাসা ফিরবার গলপ। সেই গলপাই আবার আরম্ভ করি। গাছতলা থেকে চা খেয়ে ও মিঃ সিংহের গলপ শনে উঠে দেখি রাত অন্ধকার, গভীর অন্ধকার। বন্যহস্তীর ভয়ে সেই পাব্বিত্যপথে সাবধানে গাড়ী চালিয়ে আমরা বরকেলা শৈলমালা থেকে ধীরে ধীরে নেমে সমতলভূমির পথে নােমলাম। সৈন্দবা কলি আমাদের ডানদিকে। এবার আর পথের ধারে গভীর খাদ নেই, সতরাং নিরাপদ পথে দন্তু ছুটলো মোটর। মিঃ হরদয়াল সিং বললেন— ঐ সামনেই রাঁচি রোডএকটা পরেই আমরা পিচ-ঢালা চওড়া রাঁচি রোডে এসে উঠলাম। চল্লিশ মিনিটের মধ্যে রোরো নদীর সেতু পার হয়ে চাইবাসা টাউনে প্রবেশ করলাম-রােত তখন দশটা-- এ কথা আগেই বলেছি। চাঁবাসা ফিরে ঠিক করা গেল পরদিনই আমরা জয়ন্তগড় ও চম্পয়া যাবো এবং বৈতরণী নদীর ধারে মাঠে ও বনে আমাদের নিক'পিক! প্রসঙ্গক্ৰমে বলা যেতে পারে যে, যে বনভোজনে বাড়ী থেকে তৈরি খাবার নিয়ে গিয়ে খাওয়া হয় তার নাম হোল নিক'পিক-আর যেখানে রান্না করে খাওয়া হয় সেটা পিকনিক। নিক, পিকের আয়োজন সম্পপণ্য করলেন বৌমা, সবোধের সত্ৰী।। তাঁয়, নিপণ ও শিলপহস্তের তৈরি অনেক কিছ- সখাদ্য এল.মিনিয়ম লম্পটকে ভিত্তি হোল, তবে চা নাকি তৈরি হবে বৈতরণী নদী-তীরের চমৎকার মাঠে ও বনের ধারে।--তাই চায়ের সাজসরঞ্জাম নেওয়া 6शाव् न८७ ।। আমরা জন-পাঁচেক একটা মোটরে । হাট-গামারিয়ার রাস্তায় মোটর হর হন। চললো। দধারে গ্রানাইটের অনাচ পাহাড়, চাইবাসার আশেপাশে দক্ষিণ ধলভূমের সব্বত্র এই ধরনের পাহাড় দেখতে পাওয়া যায়। দীর থেকে দেখে মনে হয়। কালো পাথরে কয়লার একটি সন্তােপ। পাথরগলোও অনেক জায়গাতেই আমনিতর ছোট ছোট ও আলােগা। পাহাড়ের ওপর শিশগাছ (Dalbergia Sishu) অনেক দেখলাম। এ অঞ্চলে। "শিশগাছ সাধারণতঃ পাহাড়ে দেখা যায় না, বনে পাওয়াও কঠিন। বাংলাদেশে যা শিশগাছ বলে চলে, তা হোল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আমদানি রেইন ট্রি। অনেক জেলা-বোডের পথের ধারে বাংলাদেশে এই জাতীয় গাছ যথোিলট দেখা যায়। মিঃ সিংহ বললেন-কাছেই একটা ভালো ঝর্ণা আছে। -কতদার ? --রাস্তা থেকে এক মাইল। বনের মধ্যে। Arte,