পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরেশবাবও আমাদের মতেই মত দিলেন। সতরাং শেষ পৰ্য্যন্ত মোটর থামানো হোল-আমি, পরে।শাবাব ও মিঃ সিংহ নেমে রাস্তার ধারে বনের প্রান্তে একখানা বড় পাথরের ওপর বসলাম। সবোধ গাড়ীর মধ্যে ঘামিয়ে পড়লো। সে নৈশ প্রকৃতির শোভা নিজের চোখে দেখবার জিনিস। লোকালয় থেকে বহদরে পাহাড়ের মাথায় ঘন বন, শেষ রাত্রের জ্যোৎস্নায় আমরা কাটি প্রাণী সেখানে চপ করে বসে আছি, যে কোনো মহত্তে বাঘ বা যে কোনো বন্যজন্তু বেরতে পারে, বন্যহস্তীর তো কথাই নেই-এসব বনে হাতীর সংখ্যাই বেশি, ভালকও যথেষ্ট। বিপদের মধ্যেই ভ্ৰমণের আসল আনন্দ, অত্যন্ত নিরাপদ স্থানে, সে জায়গা যতই সন্দর করে সাজানো হোক না কেন, বেড়িয়ে সে ভয়, সে উত্তেজনার সন্ধান মেলে না। অনভূতির নতুনত্বই মানষের জীবনের বড় সম্পদ। মিনিট পনেরো পরে আমরা মোটরের কাছে গিয়ে সবোধকে ঘািম থেকে ওঠালাম। এতক্ষণ সবোধই চালাচ্ছিল, মিঃ সিংহ বললেন-তোমার হাতে আর বিশ্ববাস নেই এই পাহাড়ী রাস্তায়, ঘািমকাতুরে চোখে খাদের মধ্যে ফেলে দেবে। সরো, আমার হাতে সন্টীয়ারিং দাও दूाऊ geस 26श आज05 । সেই গভীর গিরিবনে হেমন্ত রাত্রির কুয়াশা হঠাৎ ঘনিয়ে আসতেই কেউ আর কিছ দেখতে পায় না। মিঃ সিংহ ভরসা করে গাড়ী জোরে চালাতে পারলেন না। চক্ষের নিমেষে কুয়াশা নেমে চারিধার ঢেকে ফেলেছে, পাহাড় দেখা যায় না, জঙ্গলের গাছপালাও খাব সপষ্ট নয়। সামনে পিছনে সব যেন ঘষা পয়সার মত লেপে মাছে একাকার হয়ে গেল। সন্তপণে গাড়ী চালাতে লাগলেন। মিঃ সিংহ। একটা অসাবধানে গাড়ী চালালে পাহাড়ে ধাক্কা লেগে মোটর চরমার হয়ে যাবার ভয়। এমন সময় পরেশবাব চেচিয়ে উঠে আঙল দিয়ে দেখিয়ে বলতে লাগলেন—ঐ-ঐ---কি ওটা, দেখােন দেখন--সকলে চেয়ে দেখলাম কি একটা জানোয়ার মোটরের হেডলাইটের আলোয় মোটরখানার সামনে ছটে চলেছে। সবোধ বললে-হরিণ। ऊनाभि ञ्जलाभ--वाच ! পরেশাবাব বললেন—ভালক ! সেটা যে জানোয়ারই হোক, রাস্তা ছেড়ে দিতে জানে না দেখা গেল। সামনে সেটা চলেচে গাড়ীর আগে আগে দৌড়ে-পােশ কাটিয়ে আমাদের পথ দেবার কোনো চেন্টাই তার নেই। সমানে ছাঁটেচে। আমি বললাম।--সপীড বাড়িয়ে ওটাকে চাপা। দিলে কেমন হয়, মিঃ সিংহ ? মিঃ সিংহ বললেন-হয় ভালোই, কিন্তু গাড়ী জোরে চালাতে সাহস কবি নে এই কুয়াশার মধ্যে। প্রায় মাইল খানেক পথ গাড়ীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছটবার পরে জানোয়ারটা হঠাৎ লাফ দিয়ে বাঁ দিকের কুয়াশাব্যত বন-মধ্যে অন্তহিত হোল। এর আগেও সে অনায়াসেই যেতে পারতো, কেন যে যায় নি। সে-ই বলতে পারে। এই সময়ে সকলেরই ভীষণ ঘাম পেয়েচে । ভোর পাঁচটা ঘড়িতে দেখা গেল। ফটফট করচে জ্যোৎস্না, যেন রাত দােপাের। নিজজন নিস্তবধ কুয়াশাচ্ছন্ন বনানী আমাদের চারিদিকে ঘিরে। মিঃ সিংহ একবার গাড়ী থামিয়ে রােমাল বের করে চোখ মছে নিলেন। খাব ঘাম পেয়েচে তাঁরও। আমি বললাম-গাড়ী একপাশে রেখে একটা ঘামিয়ে নিন। মিঃ সিংহ, এ অবস্থায় গাড়ী চালানোটা 88