পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা ভিজে স্যাঁতসেতে ব্যাপার। একঘেয়ে পাইনবনও আমার ভাল লাগে না। এই-- জন্যে গৌহাটি থেকে শিলং-এর পথে আড়াই হাজার ফন্ট নীচেকার নিবিড় বনানীর সৌন্দৰ্য্য যেমন অদ্ভুত মনে হয়েছিল, এখানকার rolling downs-এর মরকত-শ্যামরাপ তত ভাল লাগে না। আর সব জায়গাতেই মাটি আর কাদা, কোথাও বসা যায় না, ভিজে-একখানা বসবার পাথর নেই কোথাও । ছোটনাগপাের অঞ্চলের মত যেখানে সেখানে শিলাখন্ড ছড়ানো নেই, অনাদত প্রস্তরময় শৈলগাত্ৰ কচিৎ দেখতে পাওয়া যায়। তবে এত ঝর্ণা, এত বন্যপশুপ সেখানে কোথায় ? শিলং শহর অতি সন্দর, ছবির মত সাদা সাদা বাড়িগলো পাহাড়ের গায়ে ধাপে ধাপে সাজানো। Kench-Strasseএ ধনী ও শৌখিন বাংগালীদের বাস।-- বেশ চমৎকার সাজানো বাগান সেদিকে। প্রায় সকলের বাড়িতেই ফালবাগান। গোলাপ, ডালিয়া, কসমস্যা, ফগেইেটা-মি-নট এসময়ে প্রচাের। বন্যজঙ্গলের মধ্যে এক ধরনের Compositac প্রায় পাইনবনের নীচে সৰ্ববত্র। SS ESS S-DOS lichen–TIs Sol III svEfg bird’s feather lichen-–5ICBS ডাল থেকে টপ টপ করে ঝরে পড়াচে। এলিফ্যাশন্ট ফলস্য যাবার পথে সম্প্রভা একরকম বনের ফল তুলে খাচ্ছিল, আমাকেও খেতে দিলে--রাঙা, ছোট ছোট, যেন কুচফলের মত।--খেতে টকা। ও ফল আবার খাসিয়া মেয়েরা বাজারে বিক্ৰী করচে। ও বাজে ফল যে কে পয়সা দিয়ে কিনে খায়! খাসিয়া মেয়েরা দেখতে বেশ, এক-একটা এত সন্দব ও এমন চমৎকার তাদের মািখশ্ৰী ! ওবেলা সনৎ কুটনীর’ যাওয়ার পথে একটি মেয়ে দেখেছিলাম, সে একেবারে পরীর মত সন্দরী। এত ব্যাপার সত্ত্বেও বলতে হচ্ছে যে শিলং শহর আমার ভাল লাগেনি। সে প্রাণনাচানো সৌন্দৰ্য্য, বিরাট রক্ষ রােপ নেই। এখানকার প্রকৃতির—যা দেখোঁচ নাগপরের রামটেক পাহাড়ে, Highland drive-এ বা নীলকণার ছোট পাহাড়ে বা সিদ্ধেশবর ডংরীতে। এ বড় বেশী সাজানো।--বেশী পর্তুপতু, সাজগোজ পরানো আহাদী পর্তুল ! দেখতে চমৎকার। কিন্তু মনে কোন বড় ভােব জাগায় না। একথা কিন্তু খাসিয়া পাহাড়ের lower clevation-এর পক্ষে খাটে না- সেখানে যা দেখে এসেচি, তার তুলনা নেই-আমি এখন বলচি শািন্ধ শিলং শহর ও আপার শিলং-এর কথা। আমি যা ভালবাসি, প্রকৃতির। সে বঝাবার বন্যরােপ এখানে নেই ঐ যে বললাম, বেশ সাজানো-গোজানো আহাদী পর্তুলটি। পাইন-বন অবিশ্যি খব চমৎকার বটে, কিন্তু রোমান্টিক বৈচিত্র্য নেই ট্রপিক্যাল বনের মত। কিন্তু lower clevation-এ এক জায়গা থেকে স্যার জোসেফ হকার দ'হাজার নানা শ্রেণীর গাছপালা সংগ্ৰহ করেছিলেন। শিলংকে রেলওয়ে বিজ্ঞাপনীতে ‘প্রাচাদেশের স্কটল্যান্ড” বলে কেন জানি নে—এই যদি স্কটল্যান্ড হয় তবে সঙ্কটল্যান্ডের ওপরে আমার শ্রদ্ধা কমে গেল। অথচ যে কেউ শিলং আসবে, সবাই বলবে-উঃ, কি চমৎকার জায়গা মশাই শিলং! একজন যা বলে, সবাই তার ধয়ো ধরে। এগালোর চোখ নেই নাকি ? এই ভিজে স্যাঁতসেতে একঘেয়ে পাইনবন। তাদের ভাল লাগে ? কি ভিজে, 'rain, rain, go to Spain'-নীচে নেম চল মন, শিলং মাথায় থাকুক, বাংলার সমতল জমিতে নেমে রোদের মািখ দেখে বাঁচি। একটা পাহাড়ের মাথায় প্রস্তরখন্ডে বসে লিখচি। চারিধারে সোনালী কী ফল ফটে আছে। দরে সমাদের মত সিলেটের সমতলভূমি দেখা যাচ্ছে। কি সন্দির পথ ! শিলংটা যেমন বাজে, চেরাপঞ্জি একেবারে সবগ। শিলং থেকে চেরাপঞ্জির পথের তুলনা দেব আমার পক্ষে তা সম্পভব নয়, কারণ আমি এ ধরণের ল্যান্ডস্কেপ কখনও দেখিনি। যাঁরা বিলেত বা আয়ল্যান্ডের ঢেউখেলানো সবজি ঘাসের মাঠ দেখেচোন, তাঁরা G