পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটার সময় বাস ছাড়ল। নঙ মালকি গেটে গিয়ে আমি টাইমকিপারের কাছে জিজ্ঞেস করে জানলাম ওবেলা সম্প্রভাদের ট্যাক্সিখানা ৮-৪২ মিনিটে গেট পার হয়েচে, আর আমি এসেচি ৮-৫২ মিনিটে। ঠিক দশ মিনিট আগে গিয়েচে ওরা। সিলেটের পথ অপব্ব । বেশ বিপজ্ঞজনকও বটে, ডাইনে বাঁয়ে বিরাট বিরাট gorge—তায় ঢাল নিবিড় বনে চাপা। ট্ৰিফান আর কত ধরণের গাছ, কত কি ফল। চেরাপঞ্জির পথের সে gorgeটা এদের তুলনায় কিছ না। কুয়াসা করে আছে gorge এর মধ্যে। যেন ওর মধ্যে কেউ কাঠখড়ে আগমন দিয়েচে, সাদা ধোঁয়া উঠচে । ডাইনে খাড়া উত্তঙ্গ পাহাড়ের দেওয়াল, মধ্যে সর, পথ, বাঁয়ে গভীর খাদ। খাদের দিকে জানলা দিয়ে চাইলে মাথা ঘরে ওঠে, নীচ পৰ্য্যন্ত দেখা যায় না। ঢালতে কত রকমের গাছপালায় নিবিড় বন। চেরাপঞ্জির সেই সব ফল, আরও সংখ্যায় বেশী। খাসিয়া ড্রাইভার প্রাণের মায়া রাখে না। সেই পাহাড়ের চড়ায় চড়ায় বেজায় অাঁকা-বাঁকা উচ-নীচ, সংকীর্ণ পথে তীরবেগে গাড়ি ছটিয়েচে—যদি হৃষ্টীয়ারিং একটা বেগড়ায়, কি গাড়ি স্কিড করে—তবে একেবারে ২০০০ ফন্ট নীচে পড়ে গাড়িসদ্ধ চণ-বিচােৰ্ণ হবে। পাইউমশেল গেটে দদিকের গাড়ি একত্র না হলে মোটর ছাড়ে না। এদিক থেকে শিলং-এর, ওদিক থেকে সিলেটের বাহ বাস ও প্রাইভেট কার দাঁড়িয়ে। নেমে বেড়ালম, দরে সিলেটের সমতলভূমি মেঘের মত দেখা যাচ্চে। আমি কেবলই ভাবচি —কয়েক ঘণ্টা মাত্র আগে সপ্রভা এইখান দিয়ে চলে গিয়েচে ——এখন যদি সে থাকত, দজনে কত গলপ করতাম ! সত্যি, সারা পথটাতে যখনই সৌন্দয্যের অপব্বতীয় বিস্মিত, মন্ধে হয়েচি, তখনই ওর কথা আমার মনে হয়েচে। হৰ্ষ-বিষাদে ছাঁটেছে আজকের গোটা অপরাহটির এ বিচিত্র যাত্রাপথ। পাইউমশেল ছাড়িয়েও কত gorge --নংটন বলে একটা জায়গা কয়েক মাইল মাত্র আগে একটা সগভীর নদীখাত, তরি মধ্যে কি নিবিড় অরণ্যানী, চেয়ে দেখলাম, অত নীচে তো নজর হয় না, তবও যতটা দেখলাম, নিবিড় কালো অন্ধকার হয়ে রয়েচে ভেতরটা। শিলাখন্ডের ওপর দিয়ে নদী বয়ে যাচ্চে সেই ট্ৰিফান শোভিত নিবিড় জগুগলের মধ্যে। নংটন থেকে পথ অনেক নেমে গেল, গাছপালার শোভা আরম্ভ হোল, সত্যিকার বন যাকে বলে তা আরম্ভ হোল। সে বনের বণনা দেওয়া সম্পভব নয়। আমি কখনও সে-ধরণের নিবিড় বন দেখিনি। সে বন অন্ধকারে নিবিড়, দন্ডপ্রবেশ্য, আদ্র, কত কি বিচিত্র গাছপালায ভরা। আসামের এদিকের একটা গাছও আমার পরিচিত নয়। জংলা কলা, সপরি. Cycades৮ বাঁশ, পাম। এসবও আছে। ফলেই বা কত রকমের। বড় বড় পাব্বিত্য ঝর্ণা শিখরদেশ থেকে নীচে সবেগে নামচে। (আর এখন লিখব না, টেপাখোলাতে সন্টীমার এল, এর পরেই গোয়ালন্দ, জিনিসপত্র গোছাতে হবে।) কলকাতায় বসে সেই পথের কথাই মনে পড়ছে। সেই অপব্ব পথের সৌন্দয্যের মধ্যে বসে সারািক্ষণ কেবল ভেবেছি—আহা, প্রভা। যদি থাকত, তবেই এটা দেখাতুম, ওটা বলতুম, আহাটি সে নেই, কাকেই বা বলি ? আমার পাশে যে কয়েকটি লোক বসে—সবাই লাট-দপ্তরের কেরানী. ছটিতে বাড়ি যাচ্ছে—তারা বসে ঢালচে, নয়তো গলপ করছে অবিশ্রান্ত, দিজনে বমি করতে শর করে দিলে, কেউ চেয়েও দেখছে না। সেই বিরাট gorgeগলোর সৌন্দৰ্য্য, তার উদ্ভিজজ-সংস্থানের বৈচিত্রা, কত ষ্টিফান, কত কি বিচিত্ৰ বনফল, কত ঝর্ণা, মেঘ উঠছে gorge থেকে, গভীর খাতের নিম্নতল থেকে ওপর পাহাড় পৰ্যন্ত বহণ SO