পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেড়ায়, একটা গাঙচিল ইছামতীর পারের বড় কদম গাছটা থেকে ডাকে-মনে আসে। অপার ব্যোমের উদার ইঙ্গিত, বনপল্পের বাণী, বনবিহঙ্গের কলতান-যে সন্টিকে যে জগৎকে জানিনে, বঝিনে, ভাল করে চিনিওনে তার রহস্যে দেহ,মন সবল হয়ে ওঠে। তারপর গেলাম আইনন্দির বাড়ির পাশের পথটা দিয়ে মরগাঙের বড় বড় বট গাছের ছায়ায় ছায়ায় সন্দরপরের দিকে। আবার সেই বনঝোপের গন্ধ, সেই ছায়া, সেই পাখীর ডাক। এবারকার বন্যায় অনেক গাছপালা নন্ট হয়ে গিয়েছে, তবও এ পথের সৌন্দৰ্য্য তেমনি অক্ষণ আছে। মনে হোল সেই ডাওকি নদীর দোদ ল্যমান সেতু ও সেই gorgetটার কথা। 越 ঠিক দােপর বেলা। অপব্ব পাজের ছটি ফরিয়ে গেল। নৌকো বেয়ে চলোঁচ বনগাঁয়ে, মেঘলোক-শ্যান্য নীলাকাশের কোলে সাদা সাদা বকের দল উড়চে। মনে কেমন একটা বিষাদ গ্রাম ছেড়ে যেতে, ইছামতী নদী ছেড়ে যেতে, খাকুকে ছেড়ে যেতে। তার ওপর দেখে এলাম খাকুর জবর হয়েচে, আজ সকাল থেকে সে শায়েই আছে। কিচমিচ পাখী ডাকচে চালতেপোতার বাঁকে ঝোপে ঝোপে। মন উদাস হয়ে রয়েচে আমার, কিছ ভাল লাগচে না। কেন এমন হয় ? যাদের ভালবাসি, কাছে রাখতে চাই, তাদের কেন কাছে পাইনে ? কোথায় সম্প্ৰভা পড়ে রইল। শিলং-এ, দেখবার ই ইচ্ছে হলেই কি তাকে দেখবার উপায় আছে ? কোথায় পড়ে রইল খকু। এই যে ওর আসখ দেখে এলাম, কিছই করবার নেই আমার-করতে গেলেই যত নিন্দা, যত কানাকানি হবে এই সব পাড়াগাঁয়ে। খব বেড়িয়েচি এবার ছটিতে। সেই ডাওকি নদীর gorge, চেরার পথে সেই প্রাইমালা ও Compositae-র বন মনে পড়েচে। চালিতেপোতার বাঁকে এই গাছপালার সৌন্দয্যে, খাকুকে ছেড়ে আসবার বিষাদে মনটা পৰ্ণ হয়ে আছে। এ সময় শিলং, নংটন থেকে ডাওকি পৰ্যন্ত সেই বিরাট ট্রপিক্যাল অরণ্যানী যেন স্বপ্ন বলে भCन् श् । এইমাত্র ব্যারাকপর থেকে মোটরে ফিরে এলাম। আজ বেলা বারোটার সময় পশ পতিবাব, বৌঠাকরণ, নীরদবাব ও তাঁর সত্ৰী, বগলীবাব ও আমি গিয়েছিলাম মোটরে বারাকপরে বেড়াতে। পথে টায়ার খারাপ হয়ে যাওয়ার দরবন এক জায়গায় কিছফক্ষণ অপেক্ষা করি। তারপর যখন বনগাঁ এলাম, তখন বেলা গিয়েচে । জিনিসপত্র কিনে নিতে কিছ দেরি হয়ে গেল। ওখান থেকে বেলা পড়ে গেলে বারাকপার গেলাম। পটিদিদিদের বাড়ির সামনে মোটর গিয়ে দাঁড়াল। খকু নিজের বাড়ি কি করছিল, আমি গিয়ে তাকে বল্লাম। সে কাপড় পরে তখনি এল। পাশাপাতিবাব খড়োদের রোয়াকে বসিয়ে তার ফটাে নিলেন। আমিও সেখানে পেছন দিকে দাঁড়াই। তারপর বগলাবাব গান করলেন—‘চাঁদ ডবে যায় ভোর গগনে।” আমি পাশাপতিবাবকে নিয়ে কুঠীর মাঠে বেড়িয়ে এলাম। এসে দেখি শিবর মা নীরদবাবার সন্ত্রীকে নিয়ে গিয়েচে। একটা পরে তিনি এসে খকুদের বাড়ি বেড়াতে গেলেন। আমিও দেখতে গেলাম। খকু ডাকলে, আসন না ? আমি ওদের ঘরে গেলাম। তন্তপোশের ওপর উনি আর খকু বসে আছেন। তারপর খকু দোরের কাছে এসে বসল। বগলাবাব, গান করলেন-আমিও সেই দোরের বাইরেই বসে। গান খব ভাল হোল। তারপর সবাই খেতে বসে গেল। ওদিকে খকু, বেলা ও পশপতিবাবার সত্ৰী খেতে বসলেন! খড়ীমা পরিবেশন করলেন। খাওয়া-দাওয়ার পরে খকু একা। এ ঘরের অন্ধকারের SS