পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারপর আজ পাটনা এলাম বহকাল পরে। ১৯২৭ সালের পরে আজ ৯ ॥১o বছর পাটনা আসিনি। আমি, নীরদ, ব্ৰজেনদা, সজনী সবাই একসঙ্গে এলাম, কাল রাত্রে একাদশীর পরিপােশ জ্যোৎস্নায় বদ্ধমানের বড় বড় মাঠের দিকে চেয়ে আমার মনে আসছিল একটি প্রবহমাণ জীবনধারায় কথা, যা চিরপরাতন অথচ প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে খাঁজে পায়-সন্টির মধ্যে, রসের মধ্যে যার সার্থকতা। কত সপ্ত গ্রাম তো এই জ্যোৎস্নায় সনাত হচ্চে, কিন্তু বহন্দরে এক ক্ষদ্র পল্লী নদীর তীরবত্তী এমন একটি গ্রামের ছবি বার বার মনে আসে। কেন ? এ কথা আরও মনে এল যখন দাপরে একাই পাটনাতে ওদের বাড়ির সামনের পাকাটাতে বসেছিলাম। ছোট্ট পাকাটা, বড় বড় ডালিয়া ফটে আছে, আর ক্যালেন্ডলার -সেও আধশকানো। নীল আকাশের নীচে বসে দাপরের রোদটি এই ভয়ানক শীতের দিনে কি মিলিটই লািগছিল। পাটনায় শীতও প্রচন্ড। আজ নবছর আগে পাটনা থেকে শেষ যখন চলে গিয়েছিলাম, আমার সে জীবনে এ জীবনে অনেকখানি তফাৎ হয়ে গিয়েচে । তখন ছিল অন্য ধরনের দস্টিভঙ্গি, এখন হয়েচে অন্য ধরণের। এখন যারা এসেচে। জীবনে—তখন ওরা ছিল না। ওদের সত্যিই বড় ভাল লাগে। তাই আজ দাপরে বসে কেবলই কাল রাতের মত ছোট্ট একটি পল্লীনদী, একটি বকুলগাছের ছায়াসিনীগন্ধ গ্রাম-এর কথাই মনে পড়ে। সপ্রভার কথা সব সময়েই মনে হচ্চে, আহা, কোথায় কতদরে রয়েচে পড়ে, ওর বাবার আবার অসখি করেছে—ছেলেমানষে, তাই নিয়ে ওর মন খাব খারাপ হবারই কথা। সমস্তদিন যদি এ পাকটিতে বসে এমনি আপন মনে ভাবতে পারতাম, খবই ভাল হত। কিন্তু তা হবার নয়, আমরা পাটনা শহরে এসোচি শনে তাবৎ প্রবাসী বাঙ্গালীরা ভাবচেন আমরা তাঁদের অতিথি, কারণ মাতৃভূমি থেকে এসেচি, একটা প্রীতির চোখে সবাই দেখবেন, ওটা বেশী কথা নয়। বৈকালে একটা চা-পাটিতে নিমন্ত্রণ ছিল-এখানকার পাবলিক প্রসিকিউটর মিহিরলাল রায়ের বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা বৈকুণ্ঠবাবা এ্যাডভোকেটের সঙ্গে-ভাগলপর থেকে তখন-তখন আপীলের মোকদ্দমা করতে এসে ওঁর বাসায় উঠতাম। অনেকগালি ভদ্রলোক এসেছিলেন—সবাই যখন চায়ের টেবিলে প্রবাসী বাঙ্গালীদের বাৰ্ত্তমান দন্দশা, বিহারীদের সহানভূতির অভাব, এমন কি বাঙগালীদের প্রতি সপষ্ট বিদ্বেষ প্রভৃতি বর্ণনা করছিলেন, আমি তখন আবার অন্যমনস্ক হয়ে জানলার বাইরে অস্তসায্যের রঙে রঙিন আকাশ ও রাঙা-রোদ মাখানো গাছপালার দিকে চেয়ে ভাবচি, কত গ্রামের গাছপালার ছায়ায় এই সন্ধ্যায় কিশোরী মেয়েরা গা ধয়ে চলে বোধে নিজেদের ছেলেমানষি মনে কত কি ভাবচে, কত ভাঙাগড়া করচে মনে মনে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে, কত সর্বপ্ন দেখেচে-তারপর এক অখ্যাত অবজ্ঞাত পাড়াগাঁয়ে হাঁড়িকুড়ি নিয়ে সারাজীবন কাটালে। ন্ধ্যার সময়ে বি-এন কলেজের হলে প্রকান্ড সভা। নীরদের অভিভাষণ বড় চিন্তাপর্ণ হয়েছিল। সেখান থেকে আমরা যখন বাইরে এসে বারান্দায় দাঁড়িয়েছি, তখন ফটফটে জ্যোৎস্না রাত, আজ পাটনাতে তেমন শীত নেই, আমার কেবলই बाळांद्व दष्था कान् श्ङ् । এতক্ষণ সবাই কি ঘামিয়ে পড়েচে ? ওরা সবাই ?. সপ্রভাও ?... সশীলমাধব মল্লিক। এখানকার বড় এ্যাডভোকেট। আমি তাঁকে এর আগে হাইকোটে কয়েকবার দেখোঁচ। তাঁরই বাড়িতে নৈশভোজের নিমন্ত্রণ। তাঁদেরই গাড়িতে SY