পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবাই গিয়ে পৌঁছলাম। সেদিন বনগাঁয় যেমন এক সভা বসেছিল। মন্মথ রায়ের ‘বড়িতে-এদিন এখানেও সশীলমাধববাবার বৈঠকখানায় রঙীনদা, কলেজের জনৈক biology-র অধ্যাপক, নীরদ, সজনী, আমি সবাই মিলে আরম্ভ করলাম। আনাতোল 'ফ্রাঁস সম্পবন্ধেই তকটা গরতর। খাওয়ার সময় সশীলবাব নিজে বসে এত তদ্বির করতে লাগলেন-বিশেষতঃ বন্ধে বোধহয় সন্ধ্যার পরে দ-এক পেগ টেনে একটা খোসমেজাজে থাকেন-যে আমরা না পারি পাতের তলায় সন্দেশ লকিয়ে ফেলে ফাঁক দিতে, না পারি মাছ-মাংসের বাটিতে একটকারো ফেলে রাখতে। পাটনায় এসে কেবলই খাচ্চি, খেয়েই প্ৰাণ গেল। রাত অনেক হয়েচে। জ্যোৎস্না আজও ফটেচে। মণিদের বাড়ি এসে সকলে ঘামিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে এখানকার সেসানস, জজ শিবপ্রিয় বাঁড়িয্যের বাড়ি আমি, নীরদ আর ব্ৰজেনদা গেলাম বিলিতী মিউজিক শািনতে। নীরদ ও জিনিসটা বোঝে। আমি ওদের ঘর থেকে বেরিয়ে গঙ্গার ধারে গিয়ে দাঁড়ালাম। সাহেবী ধরণের বাড়ি, সবজি ঘাসে মোড়া লনা, বড় বড় গাছ, ধনু ধ করাচে সামনে গঙ্গার চর, দরে ঘাটে সন্টীমার পারাপার হচ্ছে। নীল আকাশের তলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সে কি অদভূত আনন্দ পেলাম পািব্ব দিগন্তের দিকে চেয়ে। Schudert-এর মোজার্টের সাের কতই বাজচে। ওদিকে। গানের সঙ্গে নিজের মনের অনভূতি জড়িয়ে যে অপব্ব আনন্দের রসায়ন সন্টি হল, বহদিন আগে ইসমাইল।পরে থাকতে এমন ধরণের আনন্দ মাঝে মাঝে পেতুম, তারপর আর বহদিন পাইনি। ওখান থেকে আমরা গোলাঘর নিতাইবাবার বাড়ির রাস্তা দিয়ে বাড়ি এলাম। আমাদের গরম জল দিয়ে গেল ওদের বাড়ির একটি মেয়ে। দাপরে কমলবাবার বাড়িতে নিমন্ত্রণে গেলাম। অনেক ভালো ভালো গোলাপ দেখা গেল তাঁর বাগানে। সতীদেবীর মীরাবাঈয়ের ভজন গানখানা খব ভাল লাগল। বরিখে বাদরিয়া শাওন কি শাওন কি মন ভাবন কিবাড়ি আবার এলাম। এঞ্জিনিয়ারটির মোটরে। আসবার পথে এরিসটলোকিয়া লতা দেখবার জন্যে ট্রেনিং কলেজে নিয়ে গেলেন। অদভুত লতার ফলটি। বৈকালে বি-এন কলেজের হোসেন্টলের লনে চা-পাটি। রোদ রাঙা হয়ে আসচে। ফটো নেওয়া হল। এখানে প্রীতি সেন বলে এক ছোকরার সঙ্গে আলাপ হল তাকে বেশ ভাল লাগল। সন্ধ্যায় মিটিং বি-এন কলেজের হলে। আমি একটা বক্তৃতা করলাম --রচনার ওপরে ভূমিশ্ৰীর প্রভাব’—“যদা হাজরা ও শিখিধৰাজ’ গলিপটি পড়লাম। বহল জনসমাগম-সভার পুরে এক গাদা অটোগ্রাফ খাতা সই করতে প্ৰাণ যায় যায় হয়ে উঠল। একদল আমার সঙেগ গলপ করতে করতে বাইরে এল। আমার বইয়ের ছোট গলেপার সম্পবন্ধে ওদের কিন্তু ভয়ানক উৎসাহ ! আমার যে এত ভক্ত আছে তা জানতুম না। আমি এখনই বন্তিয়ারপর যাব। রঙীনদা আমায় তুলে দেবেন বলে মোটরে উঠলেন, আর মণি। এঞ্জিনিয়ার ভদ্রলোকটির মোটর। মণিদের বাড়ি এসে জিনিসপত্র নিয়ে বেরতে যাব-মোটর সন্টার্ট নিলে না। ভদ্রলোক কত চেন্টা করলেন-হাঁপাতে লাগলেন-আহা! তাঁর কন্ট দেখে আমার কি কািট ! সত্যিই ভেবে এখনও আমার চোখে জল আসচে। মহা অপ্রতিভা হয়ে পড়লেন। মাত্র আর ২০ মিনিট দেরি আছে “গাড়ির! একজন লোক ছােটল-একখানা। ট্যাক্সি নিয়ে এল। তাতেই এলাম স্টেশনে। এসে দেখি পাঞ্জাব মেল ৫৫ মিনিট লেট। ওরা কেউ আমায় ফেলে যেতে চাইলে না। ܬܠܬ