পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়ে গিয়েচে তাই ভাবি। সম্পর্শ একটা ওলট-পালট হয়ে গিয়েচে, মনের দিক দিয়েসবের দিক দিয়ে। তখনকার আমি আর এই আমি কি এক ? মোটেই না-সম্পণে পাথক দই মানষ। পরী যাওয়া হয়নি। ঝড়বটি দেখে যাওয়া বন্ধ করিনি। টিকিট কিনে এনেছিলাম, সপ্রভার পত্র পেলাম, সে ওয়ালটিয়ার গিয়েচে, তাতেই যাওয়া বন্ধ করলাম।b দেশে চলে গেলাম সাড়ে ছাঁটার গাড়িতে। বেজায় ঝড়বটির মধ্যে নেমে যদি গাড়ি, না পাওয়া যেত, বড় কািট পেতাম। তার পরের দিন সকালে বীরেশ্ববরবাবার সঙ্গে গলপ করি। দাপরে নৌকো করে বারাকপরে গেলাম সরস্বতী পজো করব বলে আমার ঘরে। খাকুরা ওখানেই আছে। খকু একটা পরেই, বার হয়ে এল। অনেক গলপগজিব, করলে। এবার চড়ক-তলার ছেলেরা বারোয়ারীতে সুরসম্ভবতী পজো করচে। শ্যামাচরণ দাদাদের বাড়ি চরি হয়ে গিয়েচে বলে রাত্রে আজকাল সেখানেই শ্যই। আমার ঘরে তার পরদিন সরস্বতী পজো করলাম। বাল্যকালে দেশে সরস্বতী পজো করেচি, আর কখনো থাকিওনি দেশে। এতকাল পরে এই। খকুরা এসে অঞ্জলি দিলে-পাঁচি, ও খরুকে বল্লম, তোরা প্ৰসাদ ভালো করে দে সবাইকে। বৈকালে কুঠীর মাঠে একাই গেলাম বেড়াতে। গাছে গাছে কুল খেয়ে বেড়াই ছেলেবেলার মত। চারাগাছে কুল ফলেচে, কিন্তু ছেলেবেলার মত কুলগালো তেমন মিলিট না। শিমল গাছে প্রথম ফল ফটে রাঙা হয়ে আছে। সন্ধ্যায় রাঙা আকাশের তলায় চারিধারে গাছের মাথাগালো নানা বিচিত্র-ভাঁওগা ও ছত্রবিন্যাসের সৌন্দয্যে ভারী চমৎকার দেখাচ্চে। হঠাৎ পাটনায় মিহিরবাবার বাড়ির চা-পাটির কথা মনে হল, সেই যে আমি পদার ফাঁকের দিকে রাঙা রোদ লাগানো গাছের দিকে চেয়ে দেশের কথা ভাবছিলাম সেদিন। সে তো এই কুঠীর মাঠের কথাই। খকুর কথাও। তারপরে বাড়ি ফিরে আসতেই খকু ছটে এল-সে ভালো কাপড় পরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিল চড়কতলায়। খড়ীমা বাড়ি নেই-কলে গা ধতে গিয়েচেন-টিউবওয়েলে। রাত্রে ইন্দর বাড়ি বসে ওর মাখে নানারকম গলপ শানি। ও যশোর জেলায় একপাড়াগাঁয়ে ডাক্তারী করতে গিয়েছিল। গ্রামের নাম কালো বেলপ-কুর। সেখানে কেমনভাবে তাকে একটা গহস্থবাড়িতে আদর-অভ্যর্থনা করেছিল, আর এক গ্রামে এক গহস্থবাড়ি কেমন অনাদর করেছিল। এ সব গলপ করে গেল। ওর গলেপ অনেক অজানা' পাড়াগাঁয়ের ছবি আমার চোখের সামনে ফটে উঠল। এমন, গলপ বলার ক্ষমতা সকলের থাকে না । পরদিন কালো এল-ওদের বাড়িতে দাপরে নিমন্ত্রণ। খ্যক বসে মাছ কুটচে রান্নাঘরের সামমে উঠোনে, বেলা দশটা, আমি রান্নাঘরের দোরে দাঁড়িয়ে ওর দাদা আর মায়ের সঙ্গে অনেক গলপ করলাম। নদীতে কালো আর আমি সাঁতার দিয়ে আমাদের পাড়ার ঘাট থেকে চলে গেলাম রায়-পাড়ার ঘাটে। বৈকালে খকু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে গলপ করলে প্রায় সন্ধ্যার কিছ আগে পৰ্যন্ত। তারপর আমি একটি কুঠির মাঠে পথে বেড়িয়ে এসে সেন্টশনে রওনা হলাম জিনিসপত্র নিয়ে। আসবার পথে বাড়ীকে দেখতে গেলাম। বাড়ীর হাত ভেঙে গিয়েচে, ময়লা কাঁথা পেতে শায়ে আছে। আমায় দেখে কি, খশিই হল! বাড়ী সত্যিই আমার খব ভালবাসে। এক-সময় ওর অবস্থা ভাল ছিল, ওর সবামী ছিল জমীর দেওয়ালি। মসলমানপাড়ার মধ্যে জমীরের অবস্থা বেশ সচ্ছল ছিল। ছেলেবেলায় জমীর দেওয়ালিকে আমি দেখেচি। বাড়ী তারই বেী। এখন আরী কেউ নেই। ওর, অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েচে । ভিক্ষে করে চালাতে হয় এমন অবস্থাb NqO