পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোথাও তেমন নেই, কেবল আছে। সলতেখাগী আমতলায়, বরোজপোতার ডোবার গায়ে আর সাজিতলার পথে। সকলের চেয়ে বেশী পেলাম আসবার সময়ে চালকী মসলমান পাড়ার ওই পথটায়। কদিন চমৎকার কেটেচে। অবিশ্যি ম্যাট্রিকের কাগজ দেখতে ব্যস্ত থাকার দরবন বড় কোথাও বেরতে পারতুম না। একদিন গোপালনগর হাটে গিয়েছিলাম, সঙ্গে ছিল জগো, গটকে ও জীব। ও পথেও কিছ কিছ ঘোঁটবন আছে বড় আমবাগানের কাছে। বৈকালে প্রায় কুঠীর মাঠে বেড়াতে যৌতুম বোলা পড়ে গেলে । চাঁদ উঠবার সময়ে নদীর ধারে মাঠে একা একা কত রাত পৰ্যন্ত বসে থাকতুম। জ্যোৎস্নায় নদীজলে নামতুম, স্নান করে আলোছায়ার জালাবোনা পথে মেয়েদের পিঠে দেওয়ার ষাঁড়া গাছের তলাটি দিয়ে বাড়ি ফিরতুম। দাপরে ও বিকেলে কত কি গন্ধ দধারের মাঠে। রোদপোড়া মাটির গন্ধ, ঘোটফলের গন্ধ, শিমলের গন্ধ, শকিনো পাতালতার গন্ধ, টাটকা-কাটা : গন্ধ-খয়রামারির মাঠে বনমল্লিকার ঘন সগন্ধি-প্রভৃতির নানা সবাসে মন ভরে ‹30ይ) | কাল মন রায়দের গাড়িতে বারাকপর থেকে বনগাঁ ফিরলাম। রাত্রেব ট্ৰেনে द56दाठ । চৈত্রসংক্রান্তির দিন গিয়েছিলাম বারাকপারে। একদিন চাঁপাবেড়ের মাঠে সন্ধ্যা পৰ্যন্ত বসেছিলাম, তারপর এসে ফটবল খেলার মাঠটিতে বসলাম। দােপরেবেলা বারাকপাের গিয়ে পৌছই। ঝন ঝন করচে রোদ। খাকুরা ঘামচ্ছিল। ওদের ওঠালাম, তারপর অনেকক্ষণ বসে গলপ করি। ফণিবাব ও যতীনবাব গাড়ি করে গোল আমাদের গাঁ দেখতে। তাদের ঘরিয়ে নিয়ে এলম কুঠীর মাঠ। এবার শিমলের গন্ধ ভাল লেগেচে । ঘেটফােল এখনও আছে—তবে খািব কমে গিয়েচে। কোন কোন বনে কিন্তু নতুন ফটেচে তাও দেখতে পেলাম। কাল রাত্রে হেমেন রায়ের বাড়ি দিলীপ রায়ের গান শোনার নিমন্ত্রণ ছিল, তাই আমরা অনেকে গিয়েছিলাম। গণপতিবাব ও নীরদবাবরাও ছিলেন। হেমেনদা অনাযোগ করলেন, মঙ্গলবারে পেনিটির বাগানবাড়িতে আমরা তাঁকে কেন নিয়ে গেলাম না! দিলীপ আসতে বড় দেরি করল। এল যখন প্রায় রাত নাটা। বড় সন্দের লাগল আব্বাস তায়েবজীর মেয়ের সেই হিন্দীগানের অন্যবাদটা-দিলীপের মাখে সেদিন যেটা থিয়েটার রোডে শানেছিলাম। কাল ওর মজাজ আরও ভাল ছিল, কি চমৎকারই গাইলে ! কলকাতায় কিন্তু সব সময়ই থাকা আমার বড় খারাপ লাগচে। চারিদিকে দেওয়াল তুলে এখানে মনে প্রসারতা ও আনন্দ বন্ধ করে দেয়। সব সময়েই কোন না কোন ঘরের মধ্যে আছি, হয়। স্কুল, নয়, ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরী, নয় মেস, নয়। কোন বন্ধর বাড়ি, নয়তো সিনেমা। এত ঘরের মধ্যে থাকতে পারিনে, দম বন্ধ হয়ে যাবার উপক্ৰম হয় এতে। সামনে গ্রীলোেমর ছটি আসচে—এই যা একটা আনন্দের কথা । কাল কাগজের বোঝা সনিীতিবাবার বাড়ি গিয়ে নামিয়ে চলে গেলাম দক্ষিণাবাবর বাড়ি। হোটেই গেলাম। মনে ভারী সফাত্তি-কাগজগলো দেখতে সত্যিই এই দেড় মাস কি কমেন্টইনা গেছে—আর এই রািন্দরে। ফিরবার সময়ে আলিপার হয়ে বাসায় ফিরি। এইমাত্র পানিতর থেকে ফিরে এলাম। প্ৰসাদের বৌ-ভাত গেল কাল। আজ ܘܓ দিনলিপি-৫/উৎকণী-৩