পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিতে পারি? অন্য অন্য দিনের আনন্দের সঙ্গে ? কিন্তু তারা তো তখন ক্ষীণ সমিতিতে পৰ্য্যবসিত-বত্তমানে যা পাচ্চি, তাই তখন বড়। এত শীগগির যে আমায় আবার শিলং আসতে হবে, তা ভাবিনি। কিন্তু সপ্রভা আসতে লিখলে, আর আমারও একটা সংযোগ উপস্থিত হল আসবার। কাজেই চলে এলাম। কাল বিকেলে ট্রেনে সময়টা কি চমৎকার কেটেছে! কত নতুন অনভূতি, কত নতুন চিন্তা। নৈহাটির কাছাকাছি। যখন গাড়িখানা এল, তখন মনে হল, এখান থেকে সোজা বারাকপর কতটকুই বা আর, এখন দপারবেলা, আমাদের বকুলতলায়, বিলবিলের ধারে ছায়া পড়ে গিয়েচে, খকু এতক্ষণ ঘামিয়ে পড়েচে, বহিস্পতিবার আজ গোপালনগরের হাট, সব লোক হাট করতে যাচ্চে, কত গ্রামে বাঁশবনের ছায়ায় ঢাকা কত পল্লীকুটিরে কিশোরী মেয়েরা প্রেমের রঙীন সর্বপ্নজাল বনে ঘরে বেড়াচ্চে, খটির কাছে বসে চলে যাবার সময় চেয়ে বসে থাকার ; নদীর ধারে কত বন-সিমলতার আড়ালে চোরা চাউনি ও হাসির কত ঢেউ - -এই সব ছবি মনে আসে। বিকেলে তারা জলে নেমেচে গা ধরতে। পাৰস্বতীপর এসে এসে যেন সব চেনা পরোনো হয়ে গিয়েচে । গাড়িতে বেশ জায়গা ছিল। ট্রেনে ঘািমও হল খাব। লালমণিরহাটে নেমে জেলি ও পাগলার খোজ করলাম। অত রাত্রে কোথায় পাব ? ভোর হল রঙিগয়া জংশনে, এখানেই প্ৰতিবারে ভোর হয়। আর যখনই এপথে এখানে এসেচি, বাল্টিছাড়া দেখিনি কখনও। ভিজে স্যাঁতসেতে জলাভূমি আর ফান গাছের বন, কাদাভারা মাটির পথ-ঘাট, কলার ঝাড়, নীচ নীচ খড়ের বাড়ি। ব্ৰহ্মপত্র কলে কলে ভরা। কি ঠান্ডা জল ! জলে নেমে মাখে। মাথায় জল দিয়ে তৃপ্তি হল ভারী। টিপ, টিপ বষ্টি পড়চে, মেঘমোদর আকাশ, ওপারের পাহাড়ে কুয়াসার মত মেঘ জমে রয়েছে। গৌহাটি-শিলং মোটরবাসে ত্রিপরার মহারাণীর একদল পরিচারিকা উঠিল-- তাদের কথাবাৰ্ত্তা বিন্দবিসগাঁও বঝিনে—মোটর যেমন পাহাড়ের পথে উঠল-- আমনি ওরা সবাই সামনের বেণ্ডিতে মাথা রেখে শহরে পড়ল---সবারই নাকি মাথা ঘরেচে। বেশ গরম, নংপোতে এলাম। তখনও এতটকু ঠাণ্ডডা নয়, এমন কি শিলং-এও নয়। বরপানি নদীতে বর্ষার পরিপািণ যৌবনের জোয়ার এসেচে--এক শিলাখণ্ডড থেকে আর এক শিলাখন্ডে লাফিয়ে আছড়ে পড়ে কি তার উদ্দাম মাতন! আমার পরোনো সেনা-ভিউ হোটেলে এসেই উঠলাম। ওদের কলটার কাছে সেই গোলাপগাছটা তেমনি আছে, থোকা থোকা রাঙা গোলাপ ফটেচে। ঝড় মেঘ। আর বান্টি শিলং-এ। পাইন বনে মেঘ জমে আছে শাশবত, আর টিপটিপে জল, রৌদ্র দেখলাম না। কখনও শিলং-এ। লাবানে যাবার সময় গোটা পথটাতেই বন্টি। আজি আসামের ভূতপ কব গবর্নর সার মাইকেল কিনের মাতু্য উপলক্ষে স্কুল কলেজ আপিস সকালে ছটি হয়ে গিয়েচে । তাই ভাবলাম সপ্রভাদের কলেজও নিশ্চয়ই বন্ধ হওয়াতে সে সনৎ কুটিরেই ফিরে এসেচে। ওকে পেলামও তাই। হঠাৎ আমায় দেখে খাব খশি হ’ল। আমিও বড় আনন্দ পেলাম অনেকদিন পরে ওকে দেখে। ওর দিদির দই মেয়ে রেবা ও সেবাকেও দেখলাম। কমলা সেনের সঙ্গে আলাপ হল। অনেকক্ষণ বসে। ওদের সঙ্গে গলপ করে সাড়ে ছাঁটায় উঠে। গবানরের বাড়ির পেছন দিয়ে সশীলবাবদের বাড়ি Health 96.