পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাহাড় বেষ্টিত, বলিষ্ট পড়তে লাগল-রেণকে ছাতি দিলাম, সে কিছতেই খলবে। না। জোর করে খোলালাম। একটা পাহাড়ের ওপর উঠলাম। সমদ্র দেখব বলে, সামনে আর একটা পাহাড় দন্টি আটকেচে । বাড়ি ফিরে আমি বিছানাপত্ৰ বোধে নিলাম। আমি, বন্ধ, রেণ একসঙ্গে খেতে বসলাম ওদের রান্নাঘরে পিাড়ি পেতে। গাড়ি এল। রওনা হলাম স্টেশনে। সঙ্গে একজন লোক এল, বন্ধ তাকে পাঠিয়ে দিলে। তাকে কিছ. বখশিশ, দিলাম। ফেরিওয়ালা হাঁকচে—চাই বলবাশিংস. ঘািম হয়নি ট্রেনে, যদিও শায়েই এসেছিলাম। লাকসাম জংশন, ছাড়িয়ে একটখানি শহয়েচি-অমনি উঠে দেখি চাঁদপর ঘাট। সন্টীমারে এসে বেশ জায়গা পেলাম। যেমন ঝড়, তেমন বন্টি। রাজবাড়ি, তারপাশা, মৈনটা কত কি স্টেশন। ওই ঝড়বান্টিতে যখন নৌকা করে খাবার বিক্ৰী করতে আসচে, জলের ঝাপটায়। ওদের ধারে যাবার জো নেই। বড় বড় নৌকা করে যাত্রীরা বাক্স-বিছানা, মোট-পাটলি নিয়ে ছাতি মাথায় ভিজতে ভিজতে তীরে যাচ্ছে সন্টীমার থেকে। বড় বড় চর, কাশবন। চরের মধ্যে লোক বাস করচে। সন্টীমার খাব বেগে যাচ্চে। কিন্তু সারাদিনের মধ্যে বিভিট থামিল না। একঘেয়ে বসে বসে ভাল লাগচে না। বেলা চারটার সময় গোয়ালন্দ ঘাটে সন্টীমার এসে লাগল। ভাবলাম নিজের দেশেই যেন এলাম। এই তো গোয়ালন্দ পোড়াদহ, এলম—তো নিজের দেশ আর কতটকু ? কলকাতা নেমে দেখি টর, আমার ঘরে বসে আছে! সে কলকাতা বেড়াতে এসেচে। আমি ট্রামে বিভূতিদের বাড়ি গেলাম। মন্মথ এসে বল্লে, না খেয়ে যেতে পারবেন না। কিন্তু। খেতে রাত বারোটা হয়ে গেল। তখনও পথেঘাটে মেয়েছেলের হাত ধরে লোকে ঠাকুর দেখে বেড়াচ্চে। সকালে উঠে বাগবাজারে গেলাম পাশপাতিবাবদের বাড়ি নীরদবাবদের কি হল সে সন্ধানে। বাড়ি তো গেলাম, গিয়ে শনি নীরদবাবরা গিয়েচেন গালাডি। সেখানে চা খেয়ে বৌঠাকরণের সঙ্গে গলপ করি। বৌঠাকরণ বিজয়ার প্রণাম সারলেন বিসত্তজনের আগেই পায়ে হাত দিয়ে পায়ের ধলো নিয়ে। আমিও তাই করি। বগলা এল, তার সঙ্গে সাব্বজনীন দাগোৎসব দেখতে গেলাম। বাগবাজারে। প্রতিমা বড় সন্দর হয়েচে। দজন ছেলের সঙ্গে বগলা আলাপ করিয়ে দিলে এবং তাদের দেখিয়ে আমার কাঁধে হাত দিয়ে বসল। তাকে কমল যেতে লিখেচে ঘাটশিলায়। তার সঙ্গে সবৰ্ণরেখার ধারে বসে কাব্যালোচনা করবে বলে মহা উৎসাহে চলেছিল, কিন্তু ট্রেন ফেল করলে। আমি ওখান থেকে বাসায় এসেই ট্রেনে বনগাঁ রওনা হলাম। দাপরের পরে এসে বনগাঁয়ে পৌছই। প্ৰফল্পদের বাড়ি ঠাকুর বরণ হচ্ছে। আমি, বীরেশ্ববরবাব, যতীনন্দা, মনোজ সবাই সেখানে গিয়ে বসি। একটা পরে বেলা পড়লে আমি ঘোড়ার গাড়ি করে বারাকপাের গেলাম। বাঁওড়ের ধারে বিজয়ার আড়ং দেখব বলে। কতকাল দেখিনি গ্রামের মেলাটা। এবার যখন আছি দেশে, তখন একবার যাবার খািব ইচ্ছে হল। পথে খািব ভিড়, চালকীপোতা চাঁপাবেড়ে থেকে বিজয়ার মেলা দেখতে আসচে লোকে বনগাঁ। চাষার মেয়েছেলেরা রঙিন কাপড় পরে আসচে। এই জোড়া বটতলা, এই রায়দের বড় বাগান-গ্রামে পৌছে গিয়েছি, আমাদের গাঁ!..কোথা থেকে কোথায় এসেছি। দ্যাখ! বাঁওড়ের ধারে ছেলেবেলাকার মতই মেলা বসেচে। গোপালনগরের হাজারি ময়রা SC