পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাঙা মেঘের পাহাড়পব্বত-যেন উঠতে ইচ্ছা করে না। সপ্ৰভা কাল যে রােমাল ও বালিশ ঢাকনিটা পাঠিয়েছে, তার সঙ্গে চিঠি ছিল, কাল তো নদীর ধারে মাঠে বসে হাট থেকে এসে পড়েছিলাম, কিন্তু সন্ধ্যার ধােসর আলোয় ভােল পড়তে পারি নি, আজও সেখানা নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলাম। খকু এবার এখানে নেই, সদাসব্বদাই তার কথা মনে হয়-দপরে সে যেন পাশের পথটা দিয়ে আসচে। এসেই বলচে-কি করচেন ? চার পাঁচ বছর পরে এই প্রথম দীর্ঘ অবসান আমি বারাকপরে কাটাচি, যখন ও এখানে নেই। সেই জন্যই এখনও ওর অনপস্থিতিতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি SaN ... " নটার গাড়ি যাওয়ার শব্দ পাচ্চি, নিজের খড়ের ঘরটায় বসে আলো জোৰলে ডায়েরীটা লিখচি। এখনও মশারির মধ্যে হ্যারিকেন লন্ঠন জীবালালে গরম বোধ হয়অথচ মশা এমন যে মশারি না খাটিয়ে লেখাপড়া করার জো নেই রাত্রে। দিনটা এখানে বেশ কাটে, রাত্রে অন্ধকার আর নিজজনতায় যেন হাঁপ লাগে। কারো বাড়ি গিয়ে একটা দদন্ড গলপ করব। এমন জায়গা নেই। পচা রায় ছিল, সে ডাক্তারী করতে গিয়েচে শনিচি আমডোরে। আমাদের বাড়ির পেছনের ওই বাঁশবাগানটায় যে ডোবা আছে, আজ দােপরে শকিনো বাঁশের খোলা পেতে রোদে ওখানে খানিকটা বসে ভারী ভাল লাগল। ঘন বাঁশবন, চারিদিকে বনমরচে ফলের ঘন সগিন্ধে আমোদ করেছিল দাপরের বাতাসবরোজপোতার ডোবার ওপারে কখনো বসে দেখিনি কেমন লাগে। জায়গাটা বড় 5९ ।। কুঠীর মাঠের অনেক বন কেটে ফেলেচে বেলেডাঙার চাষীরা। ওরা এবার অনেক জমি বন্দোবস্ত নিয়ে চাষ করচে। কুঠীর মাঠের বন আমাদের এ অঞ্চলের একটা অপােব প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু কাকে তা বোঝাব! আজকাল বনে-জঙ্গলে মাকড়সার নানা রকম জাল পাতা দেখি--দ্য তিন বছর থেকে আমি এটা লক্ষ্য করাচি। জাল গড়বার কৌশল ও বৈচিত্ৰ্য আমায় বড় আনন্দ দেয়। —কিন্তু আজ সকালে কুঠীর মাঠে একটা জাল দেখোঁচি, যা একেবারে অপব্ব । ঘাসের মধ্যে দটি দক্ষিব্যাঘাসের পাতায় টানা বাঁধা ঠিক একটি এক-আনির মত একটা মাকড়সার জাল। মাকড়সাটা প্রায় আণবিীক্ষণিক, তাকে খালি চোখে দেখা প্রায় অসম্পভব—একটা ঘাসের পাতা ধরে একটি খানি নাড়া দিতে একদিকের জাল যেন একটা নড়ে উঠল-কি যেন একটা প্রাণী নড়াচড়া করচে সেখানটাতে। ওই এক আনির মত ছোট্ট জালট কুই NGK TG747SR নটার গাড়িতে রাণাঘাট গেলাম অবনীবাবদের বাড়ি। অমাত-কাকা সঙ্গে গেলেন। বৈকালে ওখান থেকে বন্ধর শবশরিবাড়ি। বন্ধর সত্ৰী এখানেই আছে। রেলবাজারে নীরর সঙ্গে দেখা, তার মাখে শািনলাম। খিন এখানে নেই। গোপালনগর নেমে ঘটঘটে অন্ধকারে আমি ও নন্দ ঘোষ বাজার পর্যন্ত এলাম। যগলের দোকানে ভাগ্যিস বদ্ধি করে লন্ঠনটা রেখে গিয়েছিলাম ওবেলা। আজ বিকেলে কুঠীর মাঠে গিয়ে সেই ঝোপটার পাশে ঘন অপরাহের ছায়ায় ঘাসের ওপর একটা মোট চাদর পেতে বসে, “কেয়েকটিকা” ফলের সম্রাণের মধ্যে আরণ্যকএর একটা অধ্যায়ের খসড়া করছিলাম। কি নীরব শান্তি, কি পাখীর কাকলী, কি বনফলের ঘন সব্বাস!! নানারকম চিন্তা মনে আসে ওখানে নিজনে বসলে, আমি দেখোঁচ Sa