পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মত লোক এ সব পাড়াগাঁয়ে কে আছে? কবি আমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে খবই আনন্দ প্রকাশ করলেন। আসবার সময়ে তিনি দয়া করে শো স্টেশনে আবার আমাদের কামরাতেই উঠে দেখা করেছিলেন। রাজগীরের শৈলমালা দর থেকে ধোঁয়ার মত দেখা গেল। কিছ পরেই রিহারশরিফ ও নালন্দা। নালন্দা থেকে ট্রেন ছাড়লে দাির থেকে সন্তাপ ও বাড়িঘর দেখা গেল। এবার আর নালন্দা যাওয়ার সময় হল না। রাজগদীর নেমে পাহাড়জঙ্গলের পথে সোনভান্ডার গহায় চলে গেলাম। বন্ধের চরণরাজপত এই সস্থান। ঐ গহায় বদ্ধদেব সমাধিস্থ ছিলেন, পাশের গহয় তাঁর প্রিয় শিষ্য আনন্দ ধ্যানস্থ ছিলেন। এই পাহাড়টার নামই গধকট। গধুকটের ওপরে কাঁটাগাছপালা ঠেলে অনেকটা উঠলাম। এক জায়গায় পাথর ঠেস দিয়ে যৎ করে বসলাম। ঠিক দােপাের, নিম্পেমঘ, নীল আকাশ। দরে প্রত্নতত্ত্ববিজ্ঞান দবারা খোদিত একটা সন্তাপ বা চৈত্য দেখা যাচ্ছিল। পাহাড় থেকে নেমে আমি সেটা দেখতে পেলাম, কালী পাথরের নড়ি কুড়তে লাগল। আমি চৈত্যটি দেখে ফিরবার সময় বাঁশবনের ছায়ায় ঝরণার স্রোতের ধারে বসলাম। ওরা ততক্ষণে চলে গিয়েচে। এখানেই সেই কারণড বেণীবন, যেখানে বন্ধদেব মহানিব্বাণ সত্ৰ বিবত করেন আনন্দকে। কালের কুয়াসায় সব ঢেকে মাছে একাকার হয়ে গিয়েচে...কোথায় কি আজি! আড়াই হাজার বছর আগেকার মত বেণবন কিন্তু রাজগীরের উপত্যকায় অজস্র। ব্ৰহ্মকুন্ডের উষ্ণ জলে স্নান করে সারাদিনের ক্লান্তি দরি হল। তারপর আমি একটা খাবারের দোকানে কিছ খেয়ে ছায়ায় বসে দর পাহাড়ের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখতে লগলািম-হঠাৎ মনে পড়ল। আজ গোপালনগরের হাট, বেলা তিনটে, সাড়ে-তিনটে—এতক্ষণ বটতলা দিয়ে কত লোক হাটে চলেচে। ফিরবার পথে সন্ধ্যার ছায়া পড়ে এসেচে বড় বড় মাঠে। একজন, চৈনিক লামা আর একজন লামাকে গাড়িতে তুলে দিতে এসে কি একটা বাজনা বাজাচ্চে ট্যাং ট্যাং করে, আর কেবল ঘাড় নীচ করে প্রণাম কবিচে। সে ভারী সন্দর দশ্য! ট্রেন ছেড়ে গেলেও অনেকদর পয্যন্ত বাজাতে বাজাতে চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গে এলা। বন্তিয়ারপর পৌঁছে একটি ছোকরা তার কবিতা শোনাতে বসল। গাড়িতে তার লেখা কবিতা দাতিনটা শোনালে । সাহিত্যপ্রীতি ওদের বেশ প্রশংসনীয়—তবে দর বিহারের দেহাতে কে ওদের উৎসাহ দিচ্ছে আর কে-ই বা ওদের কবিতা ছাপাচ্ছো! রাত্রের ট্রেনেই কলকাতা রওনা হলাম, দানাপাের এক্সপ্রেসে। সারা রাত্ৰি ঘাম এল না। একবার একটি তন্দ্ৰামত এসেছিল—উঠে দেখি জাসিডি স্টেশন। তারপর আবার শহয়ে পড়লাম।--ভাঙা কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ উঠেচে, বেজায় ঠান্ডা বাতাস হ হ করে বইচে, জানালা দিয়ে মািখ বার করলে মাখো যেন লক্ষ ছাঁচ ফোটে। কুয়াসা হয়েচে, বনগালো যেন ঠিক ইসমাইল।পরের সেই বন—অনেক রাত্রে উঠে এই শীতের সময় ইসমাইলপার কাছারীতে ঠিক যেমন বন দেখতুম, তেমনি দেখাচ্চে। পাটনা থেকে এসে মধ্যে অনেক ব্যাপার হয়ে গেল। মধ্যে সপ্রভা কলকাতা এল ওর মা-বাবার সঙ্গে। একদিন ওর সঙ্গে ‘মক্তি দেখতে গেলাম “চিত্রাতে। ভাল লাগল। না। কারো, সেবা ও রবি ছিল সঙ্গে। তারপর আমার পড়ে গেল বনগ্রামে সাহিত্যসম্মেলনের হাজােগ। বিশবনাথ এখানে খাব যাতায়াত করলে। খগেন মিত্র মহাশয় সভাপতি হয়ে গেলেন। এখান থেকে, রমাপ্রসন্ন ও গৌর পাল গেল, খাব হৈ হৈ কান্ড হয়ে গেল সরস্বতী পজোর সপ্তাহে। সাহিত্য-সম্মেলন থেকে আমায় আবার দিলে City