পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেদিন এসে ঘামােলাম দােপারে। উঠে দেখি বেলা গিয়েচে । চড়কতলায় এসে বসলাম, মসলমান মাস্টারটি কোথা থেকে সন্ধান পেয়ে এসে পড়েচে আমনি। চাচা এসে আগন করলে ও বক বক শার করলে। ইন্দ রাত্রে একটি বিদেশী পথিক সেদিন কেমন করে শিঙেতলার মাঠে বেঘোরে মারা গিয়েছিল-সে গলপ করলে। সে কাহিনী বড়ই করণ। পরদিন সকালে সীতানাথ জেলের নৌকাতে বনগাঁয়ে চলে এলাম। ভেবেছিলাম খাঁকুদের সঙ্গে দেখা করতে যাব-কিন্তু ঘটে উঠল না। রাত্রে খািব চমৎকার জ্যোৎস্নায় মন্মথবাবার বাড়ি বসে হরিবাব, যতীনন্দা, ডাক্তারবাবদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া গেল। বিপ্রদাসবাবার বাড়ি সত্যনারায়ণের সিন্নীর প্রসাদ পাওয়া গেল। সেখান থেকে এসে কাল গিয়েছিলাম রাজপরে। নগেন বাগচীদের যে বাড়িটাতে থাকতুম-অনেক দিন সে বাড়ির সে ঘরটার পথ বন্ধ ছিল। আজ দলির ছোট ছেলের সঙ্গে বেড়াতে বেড়াতে সে ঘরটার সে বারান্দাতে গিয়ে বসি। এইখানেই আমার মা মারা যান। তারপর কতকাল এ বাড়িটাতে আসিই নি। এইখানেই বালক কবি পাঁচ গোপালের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সতেরো বছর আগে - যে আমায় প্রথম সাহিত্যক্ষেত্রে নামিয়েছিল। ফিরে এসে ফলিদের উঠোনে মাচাতলার উননে ওরা পরোটা ভাজতে বসল—আমি একখানা বেলে দিতে গেলাম—হল না। ফালি ও বৌমা তো হেসেই কুটিপাটি। তারপর বৌমা বেলে দিতে লাগল-আমি শােধ নিরপেক্ষ দশক মাত্র। সন্দির লেবফলের গন্ধ বেরাচ্ছিল। জ্যোৎস্নার মধ্যে কাল রাত্রেই কলকাতায় ফিরি। বেগােন আমায় এগিয়ে দিয়ে গেল একেবারে মেস পৰ্যন্ত। কত ধরণের বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও অনভূতির মধ্যে দিয়ে এ দিনগালো কাটল !...না ?.. সাধে কি বলি ভগবানের দান এ জীবন, যে জানে ঠিক মত এর সবাদ গ্রহণ করতে, সে জানে এ কি মধ! আর বছর ঠিক এইদিনে পরী যাওয়া হল না বলে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এবার ঠিক এই দিনেই বেশ কাটল। শনিবার সহপ্রভা আসবে বলে পত্ৰ পেলাম, বিকেলে বেড়িয়ে এসে একটা কাগজ পেলাম তাতে জানা গেল ওরা কাছাকাছি একটা হোটেলে এসে উঠেছে। দেখা করতে গেলাম ও তারপর কাজজন পাকে বেড়াতে গেলাম। ওকে নিয়ে। পরের দিন ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরী হয়ে ইডেন গাডেনে খানিকটা বসে কত গলপ করলাম। কিন্তু সকলের চেয়ে আনন্দ হল ওকে তুলে দিতে গিয়ে স্টেশনে। কেউ জানত না যে আমি সেন্টশনে যাব-আমি একটি অদভুত আনন্দ পেলাম। ট্রেনটি ছেড়ে চলে গেলেও কতক্ষণ বেঢ়িতে বসে বসে ভাবতে লাগলাম। কত ধরণের সক্ষম অনভূতি! ভাবিকতা জীবনের খাব বড় একটা সম্পদ। এ যার নেই, সে সত্যিই দরিদ্র। টাকায় কি করে ? শেয়ালদ’ সেন্টশনে আমার কল্যকার সেই দশ মিনিটের দাম অর্থে নিরাপিত হবার R বসন্তটা এমনভাবে ভাল করে দেখিনি অনেকদিন। শিবরাত্রির ছটিতে এবার গেলাম বারাকপারে। কি অপব্ব শোভা হয়েছে চালকীর মসলমান পাড়ার ওই কাঁচা রাস্তাটার ধারে ফটেন্ত ঘোটফলের বনের! তার ওপর নদীর ওপারে, ঠিক গাজি AO