পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তলার পথের বাঁকে একটা চারা শিমলগাছে ফল ফটেচে, আমি যখন বারাকপরে যাচ্চি তখন দােপর রোদ। কি অদ্ভুত যে দেখাতে লািগল সেই কাম ঝাম দােপরে ওপারের সেই ফলে ভত্তি শিমলচারাটা! অপ্রত্যাশিত ভাবে গিয়ে দেখি খকুরা ওখানে আছে। অনেক দিন পরে এখানে ওদের পেয়ে মন খশি হয়ে উঠল। আমি নদিদিদের রান্নাঘরের দাওয়ায় জল খেতে গিয়েচি, ও দাঁড়িয়ে আছে পাটী দিদিদের উঠোনে। বল্লম—কি রে! তারপর ওদের দাওয়ায় বসে কতক্ষণ গল্প করলাম। দাপরে ওদের রান্নাঘরে বসে পোলান্ড বিষয়ে একদিন বল্লাম। শিবরাত্রির দিন নদিদিদের ঘরে ওদের কাছে শিবরাত্ৰি ব্ৰতকথা শোনালাম। ট্যাংরার মাঠে ইন্দর সঙ্গে একদিন কুল খেতে গেলাম-বড় খোলা মাঠ, দিকচক্রবাল বড় দারবিসপী, একটা উইয়ের ঢিবির কাছে বসে সেদিন সয্যাসত দেখলাম। ঘেটফােল এখানেও খািব ফটেচে। গণেশ মচি বদ্ধ হয়ে গিয়েচে, ট্যাংরার ধারে গর, চরচ্ছিল। লেবািতলার ওই পথে অনেকদিন কেউ আসেনি, যখন রোয়াকে বসে থাকি, এইদিন দেখলাম নীল শাড়ি পরে আসতে এক জনকে ওই পথটাতে বহদিন পরে! গত শনিবার সাউথ গড়িয়া গ্রামে বেড়াতে গেলাম বোধহয় পনেরো বছর পরে। ভূতনাথ এখানে থাকতে আমি এখানে এসেছিলাম, সে কি আজকের কথা ? বড় রোদ পড়েচে. বারোটার ট্রেনে ওখান থেকে রাজপর এলাম। দলিদের বাড়ির পিছনে বাঁশবনের তলায় কেমন ছোট ছোট ঘোটগাছ। বেশ লাগে। ওই বাঁশবনের মধ্যের জায়গাটা । আজ গিয়েছিলাম নীরদবাবদের মোটরে গড়িয়া গ্রামের একটা ভাঙা, শিবমন্দিরের ধারে। জ্যোৎস্না উঠেচে খব, ভাঙা মন্দির আর একটি প্রাচীন বটগাছ-পটভূমিকা বেশ চমৎকার। বেশ লাগল। আজ জ্যোৎস্নাটা। কতক্ষণ বসে গলপ করলাম। গত সপ্তাহের শক্রবার থেকে আরম্ভ করে কি ঘোরাই গেল। ক'দিন! প্রথম তো শক্কিবার আসাম মেলে রংপরে রওনা হলাম, সেখানে সারস্বত-সম্মেলনের সভাপতিত্ব করতে। দাপরের রোদ বেশ বাড়চে-পথে পথে ঘোটফলের শোভা-সারা পথেই ঘোটফল দেখতে দেখতে চলেছি। নৈহাটির কাছাকাছি এসে মনে হল আমাদের গ্রাম এখান থেকে বেশী দরে নয়-সোজা গেলে হয়তো বিশ মাইলের মধ্যে। এই দােপর রোদে আমাদের পাড়ার সবাই যে যার ঘরে ঘাম দিচ্চে হয়তো। রানাঘাট সেন্টশনে ইসাক মাস্টাের উঠল। ট্রেনে, ঈশবরাদি পৰ্য্যন্ত গলপ করতে করতে গেল। ক্ৰমে বেলা পড়তে লাগল। আমি দরে এক গ্রামের একটি একটি মেয়ের জীবনযাত্রার ছবি দেখি এই ছায়াসিনপদ্ধ অপরাহুে, হয়তো তাদের শিউলিতলা দিয়ে পাড়া বেড়াতে চলেছিল, হয়তো নিজেদের দাওয়ায় বসে গলাপ করে, কি বই পড়ে। কোথায় সাকাস হয়েছিল, সাকাস উঠে গিয়েচে আজ ৩।৪ মাস-বলে, একবার ভেবেছিলাম খাব বেড়িয়ে আসা যাক সাকাসে-তা সাকাস গেল উঠে। ওদের কথা দঃখ হয় ভাবলে। শিলং মেলে সাধাংশ ডাক্তারের দাদা হিমাংশর সঙ্গে দেখা, সে থাকে কুড়িগ্রামে। চমৎকার জ্যোৎস্না রাত-এবার আমার আদলেট লেখা ছিল এই পক্ষের জ্যোৎস্নাটকু নিংড়ে খালি করে উপভোগ করব। রংপর সেন্টশনে নেমে ঘোড়ার গাড়িতে প্ৰবোধবাবর বাড়ি গিয়ে উঠলাম। গিয়ে শনি ওঁরা আমায় সেন্টশনে নিতে এসেছিলেন, কারো সঙ্গে আমার দেখা হয়নি নাকি। পরদিন সকালে সভার অধিবেশন হল টাউন হলে। প্রিন্সিপ্যাল ডি. এন. মল্লিকের সঙ্গে বহকাল পরে দেখা। কলকাতা ছাড়বার পরে তাঁর সঙেগ আর কখনো দেখা হয়নি-সে। আজ চোদদ-পনেরো বছরের কথা। মাথার চলে সব সাদা হয়ে গিয়েছে—এখন এখানে কারমাইকেল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। সভার eY