পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরদিন দোেল। ভিক্টেরিয়া দত্তদের বাড়ি রং খেলা হল-আমি শালমঞ্জরী ভেঙে নিয়ে আজ প্রায় চার বৎসরের পরে বলরাম সায়েবের ঘাটে নাইতে গেলাম। বিষ্ণ, প্রধান নাইচে, দোল খেলার রং সাবান দিয়ে তুলে ফেলচে। স্নান করবার সময়ে কালাঝোর পাহাড় শ্রেণীর দশ্য আর সেই একটা গাছের অাঁকা-বাঁকা সীমারেখা যেন ঠিক একটা ছবির মত মনে হচ্ছিল। দাপরে খাব ঘামিয়ে উঠে চা খেয়ে সবর্ণরেখা পার হয়ে ওপারের জঙ্গলে বেড়াতে গেলাম। একটা গাছে ঠেস দিয়ে কতক্ষণ বসে রইলাম। পায়ে ব্যথা ছিল। কিন্তু বেশী হাঁটতে হয় নি। কালকার গাড়োয়ান সজেন গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল, তার আগে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল পঞ্চবাবার বাংলোয় আমাদের পরোনো চাকর কেন্ট। সজেন আমায় গাড়িতে উঠিয়ে নিলে—তারা পাথর আনতে যাচ্চে সবণ রেখার qዏIICኗff ! কতক্ষণ বসে থাকার পর চাঁদ উঠল। ছোট শাল-চারার জঙ্গলা—অপব্ব শোভা হল চাঁদের আলোতে! কতক্ষণ জঙ্গলে এখানে ওখানে বসি, কখনও বা শকানো শালপাতার রাশির ওপর শই। সবৰ্ণরেখার নদীগভোঁ কতক্ষণ ওপারের পাহাড়ের আলোর মালার দিকে চেয়ে বসে রইলাম। জ্যোৎসনা পড়ে নদীখাতের শকানো বালির রাশি চকচক করাচে, দরে মৌভান্ডারের আলো—ডাইনে টাটার আলো। ওপারের জন্ডগলের রেখা মােসাবনীর দিকে বিস্তৃত—অলপক্ষণের জন্যে মনে হল ঠিক যেন ইসমাইল।পরে ঘোড়া করে জ্যোৎস্না রাত্রে বন ঝাউয়ের বনের পাশ দিয়ে কাছারী ফিরচি ভাগলপর থেকে। বাড়ি ফিরে এসে দেখি গালডি সদ্ধ মেয়েপরীষ একত্রে হয়েচে—দোলের ভোজ হচ্চে, মাংস পোলাও কত কি আয়োজন ! আমায় দেখে সবাই হৈ হৈ করে উঠল—Leader-এর এ কি ব্যাপার! এত রাত পয্যন্ত কোথায় ছিলেন ? ...ইত্যাদি। খাওয়া-দাওয়া সেরে রাত বারোটায় রাঁচী এক্সপ্রেসে কলকাতা রওনা হই। আজ এত রাত পৰ্যন্ত বাইরে জেগে বসে থেকে জ্যোৎস্যনাময়ী মক্ত প্রান্তর ও দরবত্তীর্ণ শৈলমালার কি শোভাই যে দেখলাম, তা বর্ণনা করতে গেলেই ছোট হয়ে পড়ে। সে মহিমা ও সৌন্দৰ্য্য বৰ্ণনা করে বোঝাবার না। রাত্রে সারারাতই জ্যোৎস্নালোকিত শালবনের শোভা দেখতে দেখতে এলাম। খড়গপাের ছাড়িয়ে একটা ঘামিয়ে ছিলাম। সেদিন স্কুলের পর ভাটপাড়া গেলাম। রাত আটটার সময় ঘোড়ার গাড়ি করে ঘোষপাড়ায় দোল দেখতে গোলম-সঙ্গে ছোট মামীিমা ও মােসীমা। বাল্যদিনে গরিফা হয়ে হালিশহর হোটে দা একবার গিয়েছি, সে অনেককালের কথা। তারপর কতকাল পরে আবার গরিফা দেখলাম, হাজিনগর মিল দেখলাম, হালিশহরের পাম্প-ওয়ালা বাঁধা ঘাট ও ঈশান মিত্রের বাড়ি দেখলাম। হালিশহরের বাজারের সেই সব সপরিচিত ঘোষপাড়ার মেলাসস্থানে পৌছে গেলাম। মেলার সােথান, ডালিমতলা ইত্যাদি হয়ে পালেদের বাড়ির মধ্যে গেলাম, গোপাল পাল সেখানে মোহান্ত সেজে বসে যাত্রীদের কাছে পয়সা আদায় করচে। নলে পালের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম—সে এক সাহার কাপড় সংক্রান্ত কি মোকদ্দমার মীমাংসা আমায় করতে দিলে। আমি বল্লম-ও সব এখন পারব না । মামার বাড়ি শিয়ে নিচতলার দিকে দরজা খালে ছাদের ওপর গিয়ে বসলাম। জ্যোৎসনা ফন্ট ফন্ট করচে ছাদের ওপরে। নীচের ছোট ঘরটা বা যে ঘরে গৌরী বসে পান সাজত—সে সব ঘর বেড়িয়ে এলাম। খকদের বাড়ির ছাদের মত—এই তো সবে Vg Git