পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যে শক্তি আছেন, সেই শক্তি মানষের সখে-দঃখে সাড়া দেন এবং benevolent নিশ্চয়ই -ওবেলা একটা বিশেষ ঘটনায় তার প্রমাণ পেয়েচি। মনে একটা অপব্ব অনভূতি জাগলো। এই কথাটি ভেবে। বস্তুতঃ এই ভাগবতী শক্তি-যে মহত্তে আমরা জীবনের পথে মেনে নেব-এর বাস্তবতা অনভব করব—সেই মহত্তে আমরা আধ্যাত্মিক নবজীবন লাভ করব। সন্ধ্যার পরে ইন্দদের বাড়ি বেড়াতে গেলাম। ফণিকাকা ছিল বসে-১৩০৫ সালে রামচাঁদ মারা যান, সে কথা হল। যােগলীকাকার মা আর সরোজিনী পিসীদের, "ত্রিনয়নী পিসীমা (তখন বালিকা) ফণিকাকাদের বাড়ি থাকত। সারাদিন, খেত—কারণ খব গরীব তখন ওরা—সেইসব গলপ শািনলাম। রোয়াকে বসেচি। তারা ভরা আকাশ। গভীর রাত্রি। পাশের বাড়িতে সবাই ঘামিয়ে পড়েচে। আবার সেই সক্রিয়, হৃদয়বান, (পার্থিব ভাষায়) benevolent শক্তির কথা মনে এল। এই শক্তিই ভগবান। যে মনে মনে একে মানে, এই শক্তির বাস্তবতা অনানুভব করে প্রাণে প্রাণে, সে সকল বিপদ, দঃখ, সংকীর্ণতা, মলিনতাকে জয় করে। বৈকালে সাজিতলার ঘাটে টিনের চালায় আমি আর পচা গিয়ে বসলাম । সারাদিন ঝড় চলচে, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, মাঝে মাঝে বান্টি আসচে। বাল্যে আমি আর ভরত এমন দিনে এই গ্রীল্ডেমর ছটিতে দিগম্বর পাটনীর খেয়া নৌকোতে মাধবপরের হাটরে লোকদের পার করতুম—সে কথা মনে পড়ল। একবার আমার পাঠশালার সহপাঠী বন্ধ পাৰ্ব্ববতী আর তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সে কি আনন্দের দিনই গিয়েচে! শম্প্ৰভু কি করে মারা গেল ইন্দ সেই গলপ করছিল। ওখান থেকে উঠে আমরা কুঠীর মাঠের দিকে গেলাম, সন্ধ্যার কিছ আগে মেঘান্ধকার আকাশের নীচে এপার ওপারের শ্যামল মক্ত মাঠ ও বনানীর, ক্ষদ্র নদী ইছামতীর কি শোভা ! পাঁচাকে আর সঙ্গে নিয়ে যাব না-কথা বলে সব মাটি করে দেয়। ভীষণ ঝড়বভিন্ট সকাল থেকে } এক মহতে্যুর জন্যে বিরাম নেই। খড়ীমা এলেন বমিট মাথায় চা নিয়ে। বল্লেন—খকু করেচে, বলছিল, বিভূতিদাকে একদিন ‘চা করে খাওয়াব বলেছিলাম, তা আজ করি। একটা পরে চায়ের বাটি ওদের বাড়ি দিতে গিয়েচি, খকু বল্লে—জল খাবেন না ? মা জিগ্যেস করল। অর্থাৎ মাড়ি দিয়েছিল চায়ের সঙ্গে তাই জল খাব কিনা জিগ্যেস করচে। জলের ঘাঁটি ওর কাছেই ছিল, নিয়ে জল খেলাম। তারপর গোপালনগর এলাম ‘আরণ্যক’-এর প্রািফ ডাকে দিতে। মাঝের গাঁয়ের জিতেন। সাধ দেখি তেরোখানা মোটর নিয়ে চলেচোন। চালকীর "জিতেনদা' একখানা মোটরে ছিলেন—সেখানায় দেখি মোটেই স্থান নেই। কাজেই তখন রেল লাইন দিয়ে হোটেই পাঁচ মাইল রাস্তা চলে গেলাম। পািব্ব দিকের আকাশ চমৎকার নীল দেখতে হয়েচে । আমি সেন্টশনে পৌঁছেচি। অন্ধকারও নামল। অমল্যবাবদের বাড়ি গিয়ে সারারাত জাগা, বিজয় মােখাজ্যে আর অনাথ বোসের গান হল। রাত চারটে যখন বেজেছে তখন বীরেন। সামনের একটা বাড়ির দোতলায় শোয়াতে নিয়ে গেল আমায়। তখন ঘন্ম হওয়া সম্পভব নয়, একটি পরে ফস। হয়ে গেল। আমি মিনদের বাড়ি চলে এলাম। সেখানে ওরা ছাড়লে না—খাওয়াদাওয়া করিয়ে তবে ছেড়ে দেয় বেলা দটাের পরে। আড়াইটার ট্রেনে জিতেন। ঠাকুরের দলবলের সঙ্গে গোপালনগরে নামি। ওরা মোটরে কলকাতা চলে গেল। তারপর CAC)