পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আয়েলীও আমায় দেখে খাব খশি হল- ওরা সিঙ্গাপর থেকে দ্য একদিন হল এসেচে শনলাম। এখন কলকাতাতেই থাকবে। ভারী আনন্দ পেলাম। ওকে দেখে-আয়েলী বড় ভালো মেয়ে। ও এখানে পড়ত লা মাটিনিয়ারে। এতদিন পড়া বন্ধ ছিল, সেই-- জন্যেই ওর মা মিসেস এণ্টনি ওকে আর ওর ছোট ভাই পিটিকে এখানে এনেচে । কাল বালিগঞ্জে এক ভদ্রলোকের ওখানে রাত্রে ছিল নিমন্ত্রণ। মিসেস দে বলে যে মহিলাটির সঙ্গে উষার ওখানে সেদিন দেখা হয়েছিল—তিনি চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর স্বামীর সঙ্গে যাতে আমার আলাপ হয় তাঁর খব। ইচ্ছা। ভদ্রলোকটির নাম কে সি দে—কিরণচন্দ্র দে। কাল সন্ধ্যাবেলা তাঁদের বাড়ি অনেকক্ষণ কাটানো গেল। বড় অমায়িক লোক স্বামী-স্ত্রী দজনেই। ভূরিভোজন হল অবিশ্যি, আইসক্ৰিীম পৰ্যন্ত বাদ গেল না। মনীষা সেনগােপ্তা বলে একটি মেয়ে উপস্থিত ছিল, মেয়েটি ছেলেমানষে। রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়তে বললাম। সবাই পড়চে—মেয়েটি লডজায় একেবারে দমড়ে পড়ল—কিছতেই পড়বে না। তারপর মিসেস দে অনেক করে একটা ছোট কবিতা পড়ালেন। বেশ কাটল সন্ধ্যাটি, সাহিত্যিক আলোচনাতে, গলেপ, আবত্তিতে, খাওয়া-দাওয়ায়। অনেক রাত্রে বাড়ি ফিরি। পরশ ক্ষেত্রবাবার সঙ্গে হেস্টিংসে গিয়েছিলাম। কলকাতার মধ্যে আমন চমৎকার ফাঁকা জায়গা বেশী দেখিনি। ওর সন্ধান পেয়ে মনে আনন্দ হল। নীল আকাশ, ফাঁকা সবজি মাঠ, দরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মান্ডেবল চড়াটা দেখা যাচ্চে নীল আকাশের পটভূমিতে, যেন আকাশে ভাসচে বলে মনে হচ্চে। কলে কলে ভরা গঙ্গা, সবাজ ঘাসে ঢাকা তীরগলি জল ছায়েচে। জলের ধারে নাটা ঝোপ, কালকাসন্দা ও বনবেড়ালী—ঠিক যেন পাড়াগাঁ। অথচ জলের ধারে ধারে বড় ছায়াতর, সেখানে বেশি। ফেলা রয়েচে-সত্যিই বড় ভালো জায়গা— বেশ নিজজন-খাব লোকজন বা মোটরগাড়ির ভিড় নেই। বাড়ি এসেই সেদিন উষার পিতার মাতৃত্যুসংবাদ পেয়ে অত্যন্ত দঃখিত হলাম। সারেশবাব বয়সে আমাদের চেয়ে অনেক বেশী বড় যদিও, কিন্তু ভাগলপরে থাকবার সময়ে মিশতেন ঠিক যেন সমবয়সীর মত। অমরবাবার বাড়ির আড়াতে দিনের পর দিন আমাদের কত চা পানের মজলিশ বসত। সরেশবাব একজন ভালো শিকারীও ছিলেন। শিকারের গলপ করে জমিয়ে রেখে দিতেন। একবার বাবারঘাটে আমি সন্টীমার থেকে নামচি-আজিমগঞ্জ থেকে আসাঁচি অনেককাল পরে ভাগলপরে—সেই সন্টীমারে সারেশবাব ও আসচেন—উনি তখন বনেলি রাজ স্টেটের এ্যাসিস্টাণ্ট ম্যানেজারআমায় দেখে বললেন—এই যে ম্যানেজারবাব, কোথা থেকে আসচেন ? আর কি সে হাসি, কি সে মনখোলা বন্ধত্বের সপশ ! পরশ বাড়ি ফিরে উষার চিঠিতে জানলাম সরেশবাব, আর ইহলোকে নেই। উষারা যেদিন এখান থেকে গেল মজঃফরপরে, তার পরদিনই সরেশ বাবা মারা গিয়েচেন বলে উষা লিখেচে। অত্যন্ত দঃখ হয়েচে চিঠিখানা পড়ে। ভগবান তাঁর আত্মার সদগতি বিধান করুন। কাল সায়েন্স কলেজের পাশ দিয়ে যাবার সময়ে আচাৰ্য্য পি. সি. রায়ের সঙ্গেী GP