পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নটর বিয়ে হয়ে গেল। গত বধবারে ১৬ই অগ্রহায়ণ। জাহ্নবীকে আনতে গিয়েছিলম—খকুদের বাড়িতে গেলাম, কতক্ষণ গলপ করার পর বাইরে জ্যোৎসনা উঠেচে দেখে বাইরে এলাম-ও বল্লে, ছাদে চলন। ছাদে গেলাম, খড়ীমা এল না দেখে ও বল্লেমা এল না। দজনে কত গলপ করলাম, নতুন ব্লাউজের গল্প, কি করে সেটা ছিড়ে গেল। তাই নিয়ে হাসােহাসি। পরদিন দাপরে গিয়েচি, কত গলপ, কেবল বলে, “বসন বসন’। তারপর গাড়ি এসেচে, জাহ্নবীকে নিয়ে যাচ্চি, ও দেখি ছাদের ওপরে উঠেচে । আমি ওদের বাড়ি যাচ্চি দেখে নেমে এল। বাইরের দোর খালে দিয়ে চলে গেল। তারপরেই পান হাতে করে এল। চায়ের কাপ যে আলমারিতে থাকে, সেখান থেকে টাকা দিলে। ও খাঁজে পায় না—আমি খাঁজে বার করলাম। সারাপথ ট্রেনে কি আনন্দেই গেলাম!! আনন্দেই ভোের। সে আনন্দের ভাবনা আর শেষ হয় না। জ্যোৎস্না-ভরা গত রাত্রির ছাদের কথা, ইছামতীর দশ্য, ওর সেই নতুন ব্লাউজের গলপ কেবলই মনে হয়। মামার বাড়ি যাবার আগে জাহ্নবীদের কলকাতা নিয়ে ঘোরালম। মামার বাড়ি গেলাম সন্ধ্যার সময়। ভোর জাত্ৰে দধি-মঙ্গল হল। তখনও ঘােম ভেঙে উঠেই কি সন্দর ভাবনা! আনন্দের চিন্তাতেই ভোের। সারাদিন ওই একই চিন্তা। অন্য চিন্তাই নেই। সেই রাত্রি, সেই জ্যোৎস্না-ভরা ছাদ, সেই ব্লাউজের গলে পর সমতি। বিয়ে হয়ে গেল। তার পরদিন এক রকম কাটল। শক্রিবারে বৌ-ভাত। খািব জাক-জমকেই বৌ-ভাত হল। বিভূতির মা এলেন, বিষ্ণ, এল বারাকপর থেকে। শনিবার ওদের নিয়ে আবার বনগাঁ। আবার কত কথা, কত গলপ। ও বল্লে, যা কিছল শিখেছি আপনারই জন্যে, আপনি কত বিদ্বান, আমি তো কিছই জানিনে কি করে যে আপনার সঙেগ এমন হল ! দেখােন সংসারের কোন কাজে মন বসাতে পারিনে-—মন হ হ করে, কেবল ওই সব কথা ভাবি। আমি দেখলাম—আমারও তো ওই রোগ। অদভুত! অদভুত! বল্লে, কোথাও তার আগে নিয়ে চলন। জীবনে অনেক বেড়াব। কিন্তু আপনার সাহচৰ্য্য তো আর *ाद का I. ভগবানের অতি দম্প্রাপ্য ও দিল্লভ দান এই জীবনের অমর্ত্য-ধারা। পলে পলে, দন্ডে দন্ডে তা অনভব ফরচি—আজি সাত বছর ধরে, ১৯৩৪ সাল থেকে। এর তুলনা নেই। এ আনন্দের বণনা করতে পারি। এমন ভাষা নেই। কতকাল চলে যাবে-তখন খরকুও থাকবে না, আমিও থাকব না-কে জানিবে ইছামতী তীরের এক ক্ষ-দ্র গ্রামে শেফালি বকুল গাছের নিবিড় ছায়ায় ছায়ায়, কত হেমন্তের দিনের সন্ধ্যায়, কত শীতের দিনের জ্যোৎস্নায় দটি প্রাণীর মধ্যে কি নিবিড় তাঁর বন্ধন ধীরে ধীরে গড়ে ऐठेछळ ! আকাশে তার বাত্তা লেখা থাকবে, সে গ্রামের বাতাসে তার গানের ছন্দ আশ্রত সরে ধবনিত হবে, সেখানকার মাটির বকে তাদের চরণচিহ্ন আদশ্যে রেখায় অাঁকা থাকবে চিরকাল অনাগত যাগের প্রণয়ীদের উৎসাহ ও আনন্দ যোগাতে। কাল বৈকালে বিশবনাথ ও আমি বৈকালের ট্রেনে এলাম। এসেই সারারাত মিউজিক কনফারেন্সে গান শানেচি। এসেচি রাত চারটার সময় বিখ্যাত কেশরী বাঈ ও বরোদার লছমী বাঈয়ের গান শানে। বেনারসের পরিস্কার মিশ্র ও বিলােয়তুর সানাই বাজনা সত্যিকার উপভোগ করবার জিনিস। কেশরী বাঈ যখন বসন্ত-বাহার আলাপ আরম্ভ করলে তখন আমাতে যেন আমি নেই মনে হল-যেন শৈশবে আমাদের গ্রামে শতমধর G