পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাল্যসমতির মধ্যে ফিরে গেলাম এক মহত্তে। কত মধর অপরাহুের ছায়ায় অতীত দিনের জীবনের ঘটনাগলির মধ্যে দিয়ে আমার অতি প্ৰত্যক্ষ বৰ্ত্তমান যেন অস্পষ্ট হয়ে এল-বাবলাম না কোনটা অতীত, আর কোনটা বৰ্ত্তমান। কেবল এইটকু বঝলাম, গান শািনতে শািনতে আমার মন আরও একজনের জন্যে খব খারাপ হয়ে উঠল। --আজই তাকে ছেড়ে এসেচি, কেবলই মনে হচ্ছিল এত মেয়ের মধ্যে কনফারেন্সের সভায়, আমার যেন কেবল তার কথাই মনে পড়েচে, অবশ্য সেই বয়সের মেয়ে দেখলে ৷ এবার বড়দিনের ছটি কি আনন্দেই কেটেচে-ওকে নানা রকম গল্প করে ও কত রকমের কথা বলে। সে সব এমন চমৎকার যে সারা বড়দিনের ছটি কেমন যেন নেশার মত আনন্দের ঘোরে কেটেচে। সকালে দেখা করতে যৌতুম-একদিন “বাজার করব বলে তাড়াতাড়ি করচি, বল্লে-কেন এখনি যাবেন ? বল্লম—বাজার না করলে বাড়িতে বকবে জাহ্নবী। ও বল্লে—আপনি একটা বকুনি সহ্য করতে পারেন না ? আর আমি যে আপনার জন্যে কত বকুনি সহ্য করেচি মার কাছে। আপনার তো ছোট বোনের খড়ীমা দদিন ভাগবত শািনতে গেলেন—আমি ওর সঙ্গে বসে গলপ করলাম। কত এধরনের। বেশ কাটল ছটিাটা। কোন ছটি এত আনন্দে কেটেচে কিনা। এর আগে বলতে পারি নে। ভালবাসার প্রকৃত রূপ কি তার কতকটা যেন বকলম! হাওড়া টাউন হলে ওরা আমায় সম্পবদ্ধনা করে মানপত্র দিয়েছিল ছটির আগেই, তাতে রবীন্দ্রনাথ আশীৰ্ব্ববাণী পাঠিয়েছিলেন। একদিন আশীষ গপ্তের মোটরে রাজপরে ফলিদের ওখানে গিয়েছিলাম, সেও বড়দিনের আগে। ১৯৩৮ সালটা সবদিক দিয়ে বড় অদভুত বছর আমার জীবনে। এবারকারের আর একটি চমৎকার ঘটনা, ভাগলপরে সরেন। গাঙ্গলী মশায়ের সেই চেকভের Cook's Wedding বইখানা—যা পড়ে মঙেগরে কোম্পানীর বাগানে, বড় বাসায় গঙ্গার ধারে আজ চোদ্দ বছর আগে কি অদভুত আনন্দ ও প্রেরণা পেয়েছিলাম —তা পড়লাম বসে।-- সেই বইখানাই (সরেন গাঙ্গালীর কাছ থেকে এনেছি, বইখানা শরৎচন্দ্রের) বারাকপরের বাড়ির রোয়াকে বসে পড়লাম। আশচষ্য-না ! সপ্রভা এবার একটা ভালো ক্যালেন্ডার পাঠিয়েচে । মনে আছে এই শীতকালে পাটনার ডিসিস্ট্রক্ট জজের বাড়ি গঙ্গার ধারে বেঠোফেনের মিউজিক শািনতে গিয়েছিলাম গ্রামোফোন রেকডো, নীরদ চৌধরিীর সঙ্গে সকাল বেলা। ওপারে ধী ধর্ম গঙ্গার চর, শীতের নদী, বড় বটগাছটা—আমাকে কেবলই মনে এনে দিয়েছিল একটি মেয়ের কথা। সে যেন কোথায় দরে আছে, শিউলি বকুলের ছায়ায় ছায়ায় তাকে মাঝে মাঝে দেখা যায় দাপরে, সকালে, বৈকালে, সন্ধ্যায় ছায়া -ঘন হয়ে যখন নামে। যখন চা পাটি বসল। পাটনায় গবানামেণ্ট উকিলের বাড়ি সন্ধ্যাবেলা-তখনও রাঙা। রোদ মাখানো বাইরের গাছপালার দিকে চেয়ে ওর কথাই ভেবেচি। আর কি আনন্দেই মন ভরে উঠত ! বনগ্রাম সাহিত্য-সম্মেলন শেষ হল পরশ, সরস্বতী পজোর দিন। সজনীবাব, ব্ৰজেনদা, তারাশঙ্কর সবাই গিয়েছিল আমার বাসায়। সজনীবাবর সঙ্গে খাকুর দেখা করিয়ে দিলাম। দলের মা, মাধব ঘোষাল, রমাপ্রসন্ন, গৌরবাব, সব সকালে গিয়েছিল মোটরে। ওদের নিয়ে গেলাম বারাকপারে। খকুদের বাসায় চা খেয়ে গেল সবাই। বারাকপরে আমার ঘরের মধ্যে বসল। ইন্দদের বাড়ি সব গেল চা খেতে। আমাদের পরোনো ভিটে দেখলে। মায়ের কড়াখানা দেখলে-তারপর বরোজপোতার বাঁশবাগানে bf 。