পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসে, যাদের কথা চিরকাল মনে তো থাকেই, এমন কি একটা নিজনে একমনে? ভাবলে সেদিনের অনভূতিগলো পয্যন্ত এখনি আবার মনে আসে-অতি সম্পন্টভাবে মনে আসে, যেমন সেদিনের বিস্মত গন্ধরাজি আবার আঘাণ করি, আবার সে সব দিনের জীবনের কুশীলবদের চোখের সামনে দেখতে পাই। এই রকম দিন আমার জীবনে যেগলি এসেচে—তা চিন্তা করে দেখলাম কাল বসে। গোলমালে ওদের কথা মনে না থাকলেও দাদশ বছর অন্তর মনে আসে হঠাৎ ॥ সে সব দিনের আর একটা মজা আছে, তারা মসত বড় আশার বাণী, অজানার আনন্দ নিয়ে আসে-একটা কিছল যেন ঘটবে, দিনগলি ব্যথায় যাবে না। --একটা এমন কিছল। ঘটবে, যা জীবনে কখনো ঘটে নি-মনে হয়। তারপর দেখা যায় কিছই ঘটল না।--দিনগালো চলে গেল, কিন্তু আনন্দ রেখে গেল, সমিতি রেখে গেল। যেমন, প্রথম যাত্রার দল আমাদের গাঁয়ে এসেছিল। আমার বাল্যকালে, নলে নাপিতের বাড়ি সন্ধ্যাবেলায় আমায় বলেছিল “তুমি যাবে খোকা ?” সেই সন্ধ্যা, সেই সশ্রী যাত্ৰাদলের নটের দল-সে কথা জীবনে আর কখনো ভুললাম না। ভুললাম না। মানে ভুলেই তো থাকি, কিন্তু বিশেষ বিশেষ অবস্থায় একমনে বসে ভাবলেই আবার NN ३२३ ।... সরেনের যখন পৈতে হয়, দধি মামা থাকত, আমি দন্ডী ঘরে গিয়ে সন্ধ্যাসেবক করাতুম।--সেই একদিন যােগলীকাকাদের বাড়িতে বাল্যে এমন ক'দিন কেটেচে। বেশ মনে হয়-সবাসিনীর সামনে যখন আমি অকারণে ছাটোছটি করে বেড়াতুম। বালো, বকুলতলায় খেলা করতুম, নাগপঞ্চমীর দিন ভরত ও আমি মনসাতলায় গিয়েছিলাম। তারপর বহকাল কেটে গেল। আর তেমন কোন দিনের কথা আমার মনে হয়। না। এল গৌরী, ওকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে প্রথম যখন বারাকপরে আনলাম, আষাঢ় ও প্রথম শ্রাবণের সেই দিনগলির কথা. রজনীকাকার সঙ্গে তাস খেলতে খেলতে সেই অধীর ভাবে সন্ধ্যার প্রতীক্ষা, টিপ টিপ বান্টি পড়াচে বাঁশবনে, মাটির প্রদীপের আলোয় আমি ও গৌরী, তখন সে মাত্র চৌদ্দ বছরের বালিকা-এই ছবিটি, দিনের আশা-আকাঙক্ষাগলি, চিরদিন—চিরদিন মনে থাকবে। সে গেল চলে। দিনগলি নিরানন্দময় হয়ে গেল, আশা নেই, আকাঙক্ষা নেই। প্রহরগালি মত। আনন্দ পেলাম চাটগাঁয় মণিদের বাড়ি গিয়ে। মণির সঙ্গে বসে গলপ করতুম, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বেড়াতে গেলাম, ওই দিনগলি৷ ওখান থেকে গিয়ে এসে বিভূতিদের বাড়ি এলাম। ও দিনগালোর মধ্যে আমার মনে আছে, আমার জবর হল, কামাই করলাম দিনকতক, গোলাম না-বিভূতিকে ফোন করলাম, ঐ একদিন । ভাগলপরে এমন অনেকদিন গিয়েচে ইসমাইল।পরে দিবরায়। পরোনো কথা ভাবতাম শ্রাবণ মাসে রাসের সময় বড় বাসায় বসে, রঘানাথবাবর ঠাকুরবাড়িতে হেমেন রায় এসে নিয়ে গেল, আমি Keith-এর প্রাচীন দিনের মানষি সম্পবন্ধে বইখানা পড়তুম -কিংবা আমি Astronomy পড়তুম ভাদ্র মাসে বাইরের ঘরে শায়ে, বীরভূমের সেই পন্ডিতটা এসে গলাপ করত-সেই সব দিন ভারি চমৎকার কেটেচে। একখানা বই হয়। এ সব দিনের আনন্দের কথা লিখলে—নতুন টেকনিকে, নতুন ভাবে লিখতে হয়—একখানা ভালো উপন্যাস হয়। তারপর এল খকু। তার সাহচয্যে যে দিন কেটেচে-তার মধ্যে যখন আমি NSONS