পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিবা মনেেসফের বাড়ি গিয়ে যে একটি গল্প করব, তাতে ঘোর আপত্তি, —গা ছয়ে বলে যান ঠিক সাতটার সময় আসবেন! যদি না আসেন। তবে আমি কিন্তু মরে কােব! তাতেই বা কি, আমি মরে গেলে, জগতের কার কি ক্ষতি! মন্সেফবাবার বাড়ি গিয়ে দ বেলা আন্ডা দিই। বাণিয়ার সম্পবন্ধে অনেক রকম, কথা হল। আবার ১১ই আগস্ট বনগাঁ থেকে এলাম। বেলার জন্মদিনে নিমন্ত্রণ ছিল, তা ছাড়া ছিল মাসিক সাহিত্য-বাসর। মায়াও ছিল এবার, গলেপ-গজেবে বেশ কাটল ', নদীতে ঘোলা এসেচে, এদিন যখন সন্ন্যান করতে গেলাম। জল খােব ঘোলা। কল্যাণীর আসবার কথা বলে এলাম। কলকাতায়। কাল শনিবার বারাকপরে গিয়েছিলাম। আর বছর তো সারা বিষাকাল ও শরৎ কাল দেশে যাইনি। গোপালনগরের বাজারে প্রথমেই গটকের সঙ্গে দেখা। শ্যামাচরণদাদা দেখি বাজারে আসচে, তার মাখে শািনলাম কালী এসেচে। ভাদ্র মাসের বৈকাল, শকিনো পথ-ঘাট, বাল্টি নেই এবার, আকাশ নীল, গাছপালা ঘন সবজি। বাড়ি গিয়ে দেখি বলা বোন্টম আমার ঘরে আশ্রয় নিয়েচে । আমি ইছামতীর ধারে গিয়ে কতক্ষণ বসে রইলাম ঘোলা জল ঘাসভরা মাঠ ছয়েচে। ওপারের মাঠে ষাঁড়া ঝোপে। সন্ধ্যার ছায়া নামল, আকাশে। কত রকম রঙিন রঙের খেলা দেখা গেল, আমি জলে নোমে সনান করলাম । আমাদের বাড়ির পেছনে বাঁশবনে অন্ধকার হয়ে গিয়েচে-- পাকা তালের গন্ধ পাওয়া যাচ্চে শ্যামাচরণদাদাদের বাগান থেকে। একটা তাল পড়ার শব্দ পেলাম। বাড়ি এসে খানিকটা বসে আছি, মনে হচ্ছে খকু যেন এবার এল বিলবিলের ধারের পথটা দিয়ে। এবার ওদিকে বড় বন। সন্ধ্যার পরে খাব জ্যোৎসনা উঠল। এমন পরিপর্ণ জ্যোৎস্না শািন্ধ কোজাগরী পণিমার কথা মনে এনে দেয়, আর মনে আনে খাকুর কথা, নদিদিদের বাড়ি থেকে এসে আমার উঠোনে জ্যোৎস্নায় দাঁড়িয়ে গলপ করত। কালী এসেচে। ওদের বাড়ি কতক্ষণ কালীর সঙ্গে, সপ্রভার গলপ করলাম। সপ্রভার বিষয়ে অনেক কিছ জিগ্যেস করল। আজ রবিবার সকালে কালী ও আমি প্রথমে গিয়ে বসলাম বাঁওড়ের ধারে ছতোর' ঘাটার বটতলায়। কলকাতা থেকে অনেকদিন পরে গ্রামে গিয়ে বনঝোপ দেখে বাঁচলাম। এ সব না দেখে আমি থাকতে পারিনে - সকালের বাতাসে নােটাকাঁটা। ফলের সগন্ধ, বনটিয়া ডাকচে, কলামোচা পাখী ঝোপের মাথায় খেলা করচে। সাইমা যাচ্ছেন নাইতে, আমায় বল্লেন-কবে এলে বিভূতি ? তাঁর সঙ্গে গলপ হ’ল খানিকক্ষণ। তারপর আমি আর কালী বেলেডাঙা হয়ে মরগাঙের ধারে বাবলা তলায় কতক্ষণ বসলাম, কালী ঘোঙা কুড়োলে, কুঠীর মাঠের জলার ধারে একটা নিবিড় ঝোপে দজনে বসলাম। আর সব জায়গাতেই সপ্রভার পত্ৰখানা পড়চি—একবার, দাবার, কতবার যে পড়া হ'ল! দােজনে আবার আমাদের ঘাটে নাইতে এলাম, কালী সিট কি জালে চিংড়ি মাছের বাচ্চা ধরলে। আমি যখন রোয়াকে বসে থাকি, তখন যেন আবার মনে হল খকু আসচে.এখনি ঝোপের আড়ালে গিয়ে শাড়ির অচল উড়িয়ে সে আসবে. ঘামিয়ে উঠে বিকেলে কালীর বাড়ি গেলাম। ওরা হাটে গেল, আমি আমাদের ঘাটে এসে বসলাম-ওখান থেকে নৌকো করে কুঠীর মাঠে এসে ঘাসের ওপর বনাসিম ঝোপের ছায়ায় বসে সপ্রভার পত্ৰখানা আবার পড়ি। সপ্ৰভা কোথায় কতদারে: NO VO