পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্মান্টমীর ঠিক তেমনি মেঘান্ধকার সন্ধ্যা-অনেক বছর আগে বারাকপরের বাড়িতে যে রকম ছিল ১২ ভাদ্র, জন্মান্টমীর দিন। মণি চালে প্ৰদীপ দেখাচ্ছিল, গৌরী আমায় বললে—এসো, এসো, ও কিছ না—কোথায় আজ ওরা সব ? আজ ১২ই ভাদ্র। কতকাল আগে এমনি বেলাটিতে আমি কত আগ্রহের সঙ্গে বাড়ি গিয়েছিলাম। সে কথা মনে পড়ল। আবার এই সময়ে এমন বর্ষার দিনে আমি আজমাবাদ কাছারীতেও ছিলাম। ঐ সময় আমি এক পয়সার খড়িমাটি কিনে কত আগ্রহ নিয়ে ট্রেনে চলেচি। পজোর ছটি এসে গেল। মধ্যে G. B. Association থেকে আমায় একটা অভিনন্দন দিলে-পাশপাতিবাব, জ্যোৎস্না বোমা, শৈলদা, তারাশঙ্কর-আরও অনেকের উপস্থিতিতে অনষ্ঠানটি আনন্দময় হয়ে উঠেছিল। এবার বড় লিখবার তাগিদ, কাল রাত্রে একটা গলপ লেখা শেষ হয়েচে-আজ থেকে লেখা বন্ধ। এবার রাঁচি হতে সাহিত্য সম্মিলনীতে সভাপতিত্ব করবার তাগিদ এসেছে। একবার চাটগাঁ যাবার ইচ্ছেও আছে। আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে বহদিন আগেকার বারাকপরে যাপিত বাল্যদিনগলির কথা—বিশেষতঃ পড়জোর সময়কার কথা মনে পড়ে। বাবার এই সময়ে প্রতি বৎসর জবর হত-ঘরে ধীনোর গন্ধ বেরতো সন্ধ্যার সময়, বাবা জবারের ঘোরে অসফট কাতর। শব্দ করত—আর আমরা ছেলেমানষে তখন, ভাবতুম-—এবার পজোর সময়ে আমাদের কাপড় হল না— (বালকবালিকারা বড় সাবাথপর হয়) মায়ের হাতে একদম টাকা পয়সা থাকত না-১৯১৩ সালের পজোর সময় বাবা কলকাতা না কোথায় ছিলেন, এক পয়সাও পাঠান নি, আমাদের সে কি কম্পট, মা আমাকে তক্তপোশখানার কাছে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যাবেলায় কি কথা বলেছিলেন সংসার ও বাবা সম্পবন্ধে-সে-সব কথা মনে আসে। কেবলই । সপ্রভার চিঠি আজও আসে নি, মন সেজন্যে ব্যস্ত আছে। এরকম তো কখনও २३ वा ! খাঁকুর জন্যেও গত এক মাস রোজই ভাবি-হয়তো পাজের সময় দেখা হবে, নয়তো হবে না-কত ভাবে এর কথা যে মনে হয়! বারবেলা ক্লাবে অভিনন্দনের দিন গভীর রাত্রে জ্যোৎস্না-মশন ছাদে। ওর মািখখানি মনে হয়ে মন কি খারাপ হয়ে গিয়েছিল! তারপর মনে হয়েছিল। সপ্রভার কথা-কল্যাণীর কথা। কি জানি কারও সঙ্গে দেখা হবে কি না! রেণ লিখেচে অবিশ্যি করে যাবার জন্যে এবার। দেখি কি হয়। “পজো ফরিয়ে গেল। ঘাটশিলাতে ছিলাম। সপ্তমী পৰ্যন্ত। সেখানে গিয়েই সপ্রভার হাতের একখানা রােমাল পেলাম। ক'দিন বেশ আনন্দ উপভোগ করা গেল। ঘাটশিলায়। তুলসীবাবর গাড়িতে সপ্তমীর দিন বৌমা, নীরদবাব, রেখা, সবৰ্ণা দেবী সবাই মিলে মৌভান্ডারে আরতি দেখতে যাওয়া গেল। বেশ শীত পড়েছিল। সেখানে বাঁধের পাশে শালবনে বেড়াতে যৌতুম-কি চমৎকার লাগত। মহাস্টমীর দিন দাপরের গাড়িতে আমি আর কমল কলকাতায় এলাম। গত পাজার কত কথা মনে হয়! জাহ্নবী নেই এ বছর। আর বছর কত প্ৰসাদ খাওয়া বনগাঁয়ে, ভেবে কি কম্পট হয়! খকুর কথাও মনে হয়েছিল সপ্তমীর আরতির সময়—সেদিন দােপরে গালাডিতে SO