পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়েছিল যতীনন্দা। ভোরে আফ্রিার ঘাট থেকে হোটে সিঙ্গে স্টেশন। ওয়েটিংরমে জিনিসপত্র রেখে সন্নান করে নিয়ে চা ও সন্দেশ খাওয়া গেল। বরিশাল এক্সপ্রেসে বনগাঁ এসে নােমলাম। কল্যাণী খাব খশি। আহা, আসবার সময় রসমশিন্ড নিয়ে আমার হয়ে ঝগড়া করে বকুনি খেলো রেণ, খাকুর কাছে। আমায় বল্লে-আমার মরা মািখ দেখবেন, আজ যদি যাবেন-কিন্তু রবীন্দ্রনাথের যেতে নাহি দিবীর মত চলেই তো उआम6ठ ठूञ्ज ! সামনের রবিবারে নীরদবাব, সবৰ্ণ দেবী, পশপতিবাব যাবে মোটরে বনগাঁ picnic করতে—সম্ভবত চালকী বিভূতিদের বাড়ি হবে রান্নাবান্না। জীবন! আবার কি ভাবে কোনদিক থেকে পরিবত্তন হয়ে গেল। তাই ভাবি। ৪১, মীডজাপাের সন্ট্রীটের মেসে সেই পরোনো ঘর আমার জন্যে রেখে দিয়ে ওরা আমায় সেখানে নিয়ে যাবার জন্যে ডাকলে-কিন্তু আমার যেতে ইচ্ছে হল না। মেসের মায়া এবার কাটাতে হবে-কল্যাণী খাব ধরেচে। এবার ওকে নিয়ে বাসা করতে হবেই। ভেবেচি কলকাতা ছেড়ে বারাকপরে থাকব। গ্রামের জীবন, ইছামতীর ঘোলা জল, মটরলতার দলনি—কতকাল ভোগ করি নি। জীবনে কোনদিনই গহস্থ হয়ে বারাকপরে থাকি নি। এবার গাহসিস্থ্য জীবন যাপন করবার বড় আগ্রহ হয়েচে । জীবনে বা কখনো হয় নি -এবার তা করেই দেখি না কেন! মক্ত ও স্বাধীন জীবন দদিন দেখি কাটিয়ে। কাল। রবিবারে নীরদবাব ও সবণ দেবীরা এলেন বনগাঁ। আমি, কল্যাণী, মায়াদি, বেল সবাই মোটরে চালকী বিভূতির বাড়ি গিয়ে বসা গেল। ডাব খেলাম। তারপর সাধাংশদের বাড়ির রান্নাঘরে খিচড়ি রান্না হল। ইতিমধ্যে যাথিকা দেবী ও পশপতিবাব গিয়ে হাজির। সবাই মিলে আনন্দ করে খাওয়া ও গলপ করা গেল। জাহ্নবীর ঘরে ওদের নিয়ে গেলাম।--বেচারী জাহ্নবী যদি আজ থাকত ! ওর আদম্পট নিয়ে ও এসেছিল—চলে গেল নিজের অদম্পট নিয়েই। গোপালনগরের হাটে সবার সঙ্গে দেখা। কল্যাণী, মায়াদি, সবৰ্ণ দেবী সবাই হাট করচে। গজন, ফণিকাকা, নলে নাপিত, গটকে, শ্যামাচরণদা—সবাই দেখলে। শ্যামাচরণদা। সবৰ্ণ দেবীদের হাট করে দিলে। আমরা আবার ফিরে এলাম বনগাঁ। সেখান থেকে চা খেয়ে ওরা চলে এল। কল্যাণীকে আজকাল বড় ভালো লাগচে । মঙ্গলবার পয্যন্ত ছাড়ে না-যেমন এসেচি কলকাতায় অমনি এক চিঠি-এ শনিবারে না এলে মরে যাব। বড় ভালবাসে। আজ একটি মহা সন্মরণীয় দিন বাঙালীর। সকালে উঠে লেখাপড়া করচি, বিশব বিশ্ববাস এসে বল্লে, রবীন্দ্রনাথ আর নেই। শহনেই তখনি রবীন্দ্রনাথের বাড়ি চলে গেলাম। বেজায় ভিড়-ঢোকা যায় না! সেখানে গিয়ে শোনা গেল। রবীন্দ্রনাথ মারা যান নি, তবে অবস্থা খারাপ। ওখান থেকে এসে স্কুলে গেলাম। সবুকুলে শািনলাম তিনি মারা গিয়েছেন ১২টা ১৩ মিনিটের সময়। স্কুল তখনি বন্ধ হল। আমি ও অবনীবাব, ক্ষেত্রবাব, স্কুলের ছেলের দল কলেজ স্কোয়ার দিয়ে হোটে গিরিশ পাকের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। কিছদক্ষণ পরে বিরাট শবযাত্রার জনতা আমাদের ঠেলে চলল চিত্তরঞ্জন এভিনিউ বেয়ে। রমেশ সেনের ভাই সরেশের সঙ্গে আগের দিন প্রমোদবাবদের বাড়ি দেখা হয়েছিল—আমরা হাওড়া স্টেশনে তুলে দিয়ে যাই নীরদবাবকে। সে আর আমি কলেজ সন্ট্রীট মাকেটের মধ্যে দিয়ে সেনেটের সামনে এসে আবার পক্ষপমাল্য শোভিত শবাধারের দশন পেলাম। পরলোকগত মহামানবের মািখখানি একবার SS8.