পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাকি জগন্ধাত্রী পাজার দাদিন বন্ধ। সময় নন্ট করি কেন ? তখনি ট্রেনের খোঁজে” শেয়ালদ” গিয়ে দেখি সিরাজগঞ্জ প্যাসেঞ্জার ছাড়ছে। তাতে উঠে চলে গেলাম রাণাঘাট —খিনীদের বাড়ি গিয়ে উঠি। তারা চা খাওয়ালে। খিন অনেকক্ষণ গলপ করলে , পরদিন ভোরের ট্রেনে গোপালনগরে এসে নােমলাম-নিজের দেশের মাটিতে পা, দিতেই যেন শরীর শিউরে উঠল। সেই আবাল্য পরিচিত প্রথম কাত্তিকের বনঝোপের সগন্ধ, বনমরচে লতায় থোকা থোকা ফল-ফোটা, সেই স্নিগ্ধ হেমন্তের ছায়া। গোপালনগর বাজারে রায়সাহেব হাজারি প্রথমে ডাক দিলে, তারপর পাঁচ পরামাণিকের দোকানে সেই কুন্ডুমশায়—যািগল ময়রার দোকানে বসে টাটকা তেলেভাজা কাচারী কিনে খেলম—বিষ্ণ, জল দিলে খেতে। বাড়ি আসতে আটটা বেজে গেল। বাড়ী পিসীমার বাড়ি নাদি বসে গলপ করচে- ওদের দাওয়ায় গিয়ে বসি-ঘাটশিলা ও কল্যাণীর পাহাড়ে ওঠার গলপ হয়। নদীতে সন্নান করতে গিয়ে সিনপদ্ধ নদীজলের স্নেহসােপশে যেন সারা, শরীর জড়িয়ে গেল। নদীর তীরে বনঝোপের কি মায়া, বনসিমলতার ঝোপের কি ঘন ছায়া, থোকা থোকা বেগনি রংয়ের বনসিমলতার ফল ফটেচে—বনমরচে ফলের সবাস সব্বত্র। মন ভরে গেল। আনন্দে, এমন আনন্দ আর কোথাও পাই নি মত্ত কন্ঠে, তা সম্ববীকার করি। বাল্যের কত সন্মতি মিশিয়ে আছে এই সবাসের সঙ্গে—--তা কত গভীর, কত করণ! জিতেন। কামারের বাড়িতে সরপতি মিস্ত্রী রোয়াক গাঁথচেসেখানে ইন্দ রায় নিয়ে গিয়ে বসালে পরদিন সকালে। মচিকুন্দ চাঁপার তলায় পতিত, গজেন, মনো রায়, ফণিকাকা মিটিং বসিয়েচে । সেখানে এলো হাজারি ঘোষের জামাই লালমোহন। তার সঙ্গে ওরা স্কুলের মাস্টার বরখাস্ত করা নিয়ে বাধালে ঝগড়া। আমি সরে পড়লাম বেগতিক দেখে। বৈকালে নৌকোয় গটকে ও আমি বনগাঁ এলামযেন জাহ্নবীর বাসা এখনো আছে—ছটির পরে সেখানে যাচ্চি। লিচতলায় এসে মনোজ, জয়কৃষ্ণ, যতীনন্দার সঙ্গে বসে ভ্রমণ-কাহিনী বৰ্ণনা করি। বিকেলে শািন্ধ ছিলাম সরোজ ও আমি, মন্মথন্দাও । ‘সন্ধ্যাবেলােয়” গোপালদা, যতীনন্দা, জয়কৃষ্ণ, মনোজ, মন্মথন্দা ও বিনয়ন্দা। খাব জ্যোৎস্না। কাল গেল। জগদ্ধাত্রী পজা। আজ সকালে বরিশাল এক্সপ্রেসে কলকাতা এসেচি। আজ বহিস্পতিবার, এইমাত্র বারবেলা থেকে এলাম-আর কেউ ছিল না, রাম, বদ্ধদেববাব ও আমি। এইমাত্র ঘাটশিলা থেকে এলাম ফিরে। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বারাকপার গিয়েছিলাম আবার। ফাঁচ সেন্টশনে এসেয়িল-—ছটা ডিম নিয়ে রাঁধতে দিলাম মানকে বাড়ি পৌছে। খাব জ্যোৎস্না। পৌছতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। কুঠীর মাঠে বেড়িয়ে এসে নাদির সঙ্গে একটা বসে গলপ করি। শিউলি ফলের সবাসের সঙ্গে বনমরচে ফলের গন্ধ মিশিয়ে জ্যোৎস্নারাত্রি মধর করে তুলেচে শত অতীত সমিতির পািনর দেবাধনে। ফণি রায়ের পরিবারবাগ থাকে বন্ধদের বাড়ি। কতদিন পরে ওদের বাড়ি বসে চা খেলাম। তারপর গদা কামারের বাড়ি গিয়ে ইন্দ গজেন, অমল্য কামার প্রভৃতির সঙ্গে গান করি ও শনি। পরদিন সকালে হয়তো বনগাঁ থেকে সবাই পিকনিক করতে আসবে। নদি ও বাড়ী পিসীমার সঙ্গে গলপ করি। মানদের দাওয়ায়। পরদিন সকালে এলো খোকা ও সরেন। স্নান সোের বনমরচে ফলের সগন্ধের মধ্যে রইলাম বসে কতক্ষণ। তারপর চলে আসি বনগাঁ। শকুবার মন্মথন্দার আড্ডা। আজ ফিরচি ঘাটশিলা থেকে এইমাত্র। গত রবিবারে আবার ধারাগিরি গিয়েছিলাম-মিতেরা ও আমরা। এবার pass-এর নীচে সেই খরস্রোতার খাদ থেকে ܠܬܠܠ