পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা নতুন জীবনের শহর। এখনও চাকরিতে আছি, কিন্তু ১লা জানায়ারী ১৯৪২ থেকে চাকরি ছেড়ে দেব। সেটা কাগজে কলমে অবিশ্যি, আসলে ছেড়েই দিয়েচি। বেশ স্বাধীন জীবনের আসবাদ এখন থেকেই পাচ্চি। ঘাটশিলাতে এসোঁচ —কলকাতা থেকে আসবার সময় জাপানী বোমার ভয়ে উদ্ধাশীবাসে পলায়নরত জনতার ভিড়ের মধ্যে অতি কলেট ইন্টার ক্লাসে একটি জায়গা করে নিলাম। প্রথমটা মনে হয়েছিল জায়গা পাব না—সেকেন্ড ক্লাসের টিকিট কাটিব। য অনেক পরে মেস ছেড়ে দিলাম। এবার। রাত্রে আমার এক ছাত্র এসে মেসেই শয়ে রইল—শেষরাত্রে উঠে। ব্ল্যাক-আউটের অন্ধকারের মধ্যেই দাখানা রিকশা করে ছাত্রকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়া সেন্টশনে পৌছানো গেল। ১৯২৩ সালে কলকাতায় মীজাপাের সন্ট্রীটের মেসে ঢাকেছিলাম-সেই থেকে ওই একই মেসে, একই অঞ্চলে কাটিয়েচি । কতকাল পরে মেসের জীবন ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম। বহদিনের পরোনো কাগজপত্র বিক্রি করে ফেললাম। বোঝা বাড়িয়ে লাভ কি! পরোনো কাগজপত্রের ওপর মায়াবশতই তাদের এতদিন ছাড়তে পারি নি— আজি জাপানী বোমার হিড়িকে যে সেগলো ছেড়ে এলাম তা নয়—আনবার জায়গা নেই –এনে ঘাটশিলায় এই ছোট বাড়িতে রাখি কোথায় ? রোজ সকালে শালবনে এসে বসে লেখাপড়া করি। মিতেরা এখানে ছিল, ভয় পেয়ে চলে গিয়েচে । দিব্যি জ্যোৎসনা উঠেচে, দিগন্তনীল শৈলশ্রেণী ও প্রান্তরে অপশব শোভা। এই সব পরিপািণ অবকাশের মধ্যে দিয়ে চমৎকার ভাবে উপভোগ করি।-- অবশ্য অবকাশের সময় এখনও ঠিক আসে নি—কারণ এ সময় তো বড়দিনের ছটি আছেই-চাকরি যে ছেড়ে দিয়েচি– সে জ্ঞানটা এখনও এসে পৌছয় নি। মনে। তার ওপর জাপানী বোমার ভয় । মৌভান্ডার কারখানা কাছে—সবাই বলচে, এখানে কি বোমা না পড়ে যায় ! অনেকদিন পরে আমার রিপন কলেজের সহপাঠী বন্ধ, কল্যাণের সঙ্গে সেদিন দেখা হল নদীর ধারে সস্বামীজীর আশ্রমে। তাকে বাড়ি নিয়ে এসে চা খাইয়ে দিলাম। তার পরদিন বিকেলে ওকে নিয়ে বেড়িয়ে এলাম ‘বিজয় কুটির” পর্যন্ত ও নটর 屯下町颈<TFT1 দেশে এসে বহদিন পরে বারাকপরে বাড়ি সারিয়ে বাস করাচি। বৈশাখ মাসের প্রথমে এখানে এলাম-এর আগে চালকীতে ছিলাম। বেশ লাগচে-গোপালনগরে সঙ্কুলে মাস্টারি করি। রোজ মনিং স্কুল থেকে ফিরে নদীতে সন্নান করে আসি। বেশ লাগে। আজ সকালে প্রায় দ’মাস পরে এই ডায়েরী লিখচি। ক'দিন খাব বর্ষা গেলআজ পরিভাকার আকাশে ঝলমলে রোদ। আকাশের কি অপৰিবৰ্ণ নীল রং ! আমি রোয়াকের ঠেস বেশিgাটাতে বসে লিখচি। সবজি গাছপালার ডালের ওপরে অয়ন্সকান্ত মণির মত উক্তজবল নীল আকাশ। আজ অনবৰ্ত্তন’ বইখানা লেখা শেষ করে কপি পাঠিয়ে দিলাম। গত গ্ৰীভেমর ছটিতে ঘাটশিলায় গিয়েছিলাম দিন দশ-বারো। রোজ ফলড়ংরিতে বড়াতে যেতম। একদিন শালবনের মধ্যেও বেড়াতে গিয়েছিলাম। সবোধবাব একদিন এস্পস বাখ্যামাইনস পর্যােন্ত নিয়ে গেল।--সাবর্ণরেখা পার হয়ে ধন্যবারি পাহাড়ের দিকে চোখ রেখে বসলাম, কি অদ্ভুত শোভা ! হোটে গালডি এলাম, SSRS