পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিগম্বর পাড়াইয়ের একখানা খেয়া নৌকোতে আমি ভরত হাটবারের দিন লোক পারাপার করতাম রায়পাড়ার ঘাটে। এক মেঘাবত সন্ধ্যায় মাঠ ভেঙে গিয়েছিলাম মাধবপরে পাৰ্ব্ববতীদের বাড়ী। পাব্বিতী বিশ্ববাস জাতে কােপালী, গোপালনগরের হাটে বেগােন বেচে, আমাদের সঙ্গে ছেলেবেলায় রাখাল মাস্টারের পাঠশালায় পড়তো। সেই আর এই। তারপর কত জায়গায় বেড়ালম জীবনে—এই সন্দীঘ বত্ৰিশ বছরের মধ্যে কিন্তু “মাধবপর আর কখনো আসিনি। গ্রামের মধ্যে ঢকে প্রথমেই গোয়ালপাড়া-একটা লোক গাড় হাতে পথে যাচ্চে, জিজ্ঞেস করতে বল্লে, ঋষি ঘোষের বাড়ী।। একটা বড় কাঁঠাল বাগান, অনেক কাঁঠাল ঝলছে, জেলি বল্লে-দেখােন দাদা, কত আমি পেকে! চাষা গাঁ মাধবপর। সব খড়ের ঘর, ঝকঝকে তকতাকে উঠোনে সিদর পড়লে তুলে নেওয়া চলে। গোলাপালা, ছোট ডোবা, বাঁধানো মনসাতলা ইত্যাদি মাটির পথের দধারে। একটা চালাঘরে কয়েকখানা বেশিg পাতা। সেটা নাকি গ্রাম্য পাঠশালা। কয়েকটি লোক সেখানে বসে আছে। একটি ছোকরার বাড়ী বসিরহাটে - সে নান 2TCS (Or সামনে মনসা সিজের বেড়া দেওয়া একটা পরানো কোঠা বাড়ী-নগেন রায় বলে এক ব্রাহ্মণের বাড়ী। তিনি ছ। বছর হোল বিবাগী হয়ে বেরিয়ে গিয়েচেন-তাঁর সন্ত্রী “থাকেন বাড়ীতে, ছেলেপলে নেই। এই মাধবপর, ক্ষদ্র কৃষকদের গ্রাম মাত্র-কিন্তু আমার মনে চিরকাল রহস্যময় হয়ে ছিল। ভালো করে আজই দেখলাম এ গ্রামকে, বত্ৰিশ বছর আগে সেই যে ভরতের সঙ্গে এসেছিলাম, সে অতি অলপক্ষণের জন্যে এবং শােধ পাব্বিতীদের বাড়ীতেই। "গ্রামটা ভাল করে বেড়িয়ে দেখলাম। এত কাল পরে।--আজ প্রথম। মনে পড়লো সংসারের টানাটানি হোলে বাবা আসতেন এই মাধবপরে এক এক বিকেল বেলায় নৌকায় পার হয়ে-আমার বাল্যকালে। বাবার পণ্যচরণ-ধ লিপ্যন্ত মাধবপর! পরদিন বিকেলে বেড়াতে গিয়ে নীতিডাঙার বটতলা পেরিয়ে মরগাঙের ধারের সেই জালি ধানের ক্ষেতটাতে বসি। কি শান্তি, কি শ্যামলতা এই দশ্যটার। ওপারে আরামডাঙারমাঠ, খেজর চারা--গর চরচে, মরগাঙের ঘন সবজ কচারীপানার দামের ওপর শত্ৰপক্ষ বক বেড়াচ্ছে মাছ খাঁজে খাজে-পাশেই বাবলা কাঁটার বেড়া দেওয়া একটা ঝিঙে ক্ষেতে হলদে ঝিঙের ফল ফটে আছে এই মেঘভরা বিকেলে। যিনি ‘সায্যে, নক্ষত্রে নিওন, হিলিয়াম, হাইড্রোজেন গ্যাস ও নানা ধাতুর আগন, জেবুলে রেখেচোন। তিনিই এই শ্যামল সবজ শান্ত তৃণতর, এই সৌন্দৰ্য্যভরা পল্লীদশ্যের সন্টি করেচেন, তিনিই আগনে, তিনিই জলোতে--- অদভুত contrast! সম্যের বিশাল অগিনকটাহের সন্টি শািন্ধ এই শ্যাম বনশোভার, এই তৃণাবত প্রান্তরকে সম্পভব করবার, রােপ দেবার প্রাক-আয়োজন মাত্র। আগন কেন ? জল সম্পভব হবে বলে। হঠাৎ দেখি মেঘ করে আসচে। কালবৈশাখী নিশ্চয়। —ছটতে ছটিতে এক মাইল এসে নদীতে আমাদের বনসিমতলার ঘাটে নামি। কি চমৎকার নদীজল, পণ্য-সলিলা ইছামতী প্রতি সন্ধ্যার নিস্তবদ্ধতায় গত দশ-পনেরো বছর ধরে আমায় কত কি শিখিয়েচে। ভগবানের কত রােপই প্রত্যক্ষ করেছি। ইছামতীতে সাঁতার দিতে দিতে এমনি কত নিদাঘ সন্ধ্যায়, বর্ষা অপরাহের বান্টিধারামািখর নিজ জনতায়। আজ দেখলাম, কুঠীর দিকে কি অদ্ভুত কালো মেঘসভজা—উড়ে আসচে। ভাঙা নীল কুঠীটার জঙ্গলের দিক থেকে আমাদের ঘাটের দিকে। কি সে অদ্ভুত রািপ! বিশবরাপের এ ܦ