পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিন আগে এই দিনটিতে বারাকপরে খকু আমার সঙ্গে নাইতে গিয়ে মাটি আনি বলে আমায় ফাঁকি দিয়ে ডাঙায় উঠে ছটি দিয়েছিল। তখন সে ব্যাপারটাতে কি দঃখই হয়েছিল মনে। পায়ে হোটে চালকী চলে গিয়েছিলাম জাহ্নবীর ওখানে, মনে কম্পট। নিয়ে। আজ কোথায় জাহ্নবী, কোথায় সে খকু, কোথায় বা সে দিনের মনের কন্টf জীবনে একদল যখন চলে যায়, তখন বড়ই কম্পট হয় প্রথম প্রথম, কিন্তু শীঘ্রই অপরদিল, এসে তাদের স্থান পণ করে—তারাই আবার হয়ে দাঁড়ায় কত প্রিয়। গজেনবাবদের সঙ্গে হরিদাস ঠাকুরের সমাধি দেখতে গেলাম। শ্ৰীচৈতন্যদেব এখানে ছিলেন আঠারো বছর-তাঁর শ্রেদ্ঠ ভক্ত হরিদাস ঠাকুর যখন মারা যান, তখন তিনি নিজে ওঁকে কাঁধে বয়ে নিয়ে এসে এখানে সমদ্রতটে বালকা খড়ে সমাধিস্থ, করেন। কালক্ৰমে এখন সেখানে বড় বড় বাড়ী হয়ে উঠেচে চারধারে। সন্থানটি অতি শান্তিপ্রদ, মনে একটি উদাস পবিত্ৰ ভাব এনে দেয়। দটি বালক শিষ্য হাতে ঝালি নিয়ে মালা-জপ করচে, তারাই সব দেখালে। সেই পথেই পরিষোত্তম মঠে গিয়ে পেছনের একটি অতি সন্দর স্থানে বসলাম । ডাইনে দরপ্রসারী ঝাউবন, পাশেই টোটা গোপীনাথের বাগানে অজস্র কাঁঠালগাছ, সামনে বিস্তৃত বালচরের পারে অপার নীলাম্ববােরাশি। সফেন উৰ্ম্মিম মালা বকে নিয়ে তটভূমিতে আবার আছড়ে পড়চে। সে দশ্য দেখে আর চোখ ফেরাতে পারিনে, উঠতে ইচ্ছে হয় না। এই তো বিশবরাপের মন্দির, এই আকাশ, এই ঝাউবন, এই অপার নীল সমদ্র। এ ছেড়ে কোথায় যাবো ? গজেনবাব কেবল বলে, বিভূতিবাব, সভার সময় হোল। সাতটাতে সভা। সমৰ্থবােব বল্লে--আপনাকে দেখচি ওঠানো দায়, সভার সব লোক এসে হাঁ করে বসে থাকবে-চলনি। ১৮ oশ্ৰী তীৰ্থপতি মহারাজ এই পরিষোত্তম মঠের মোহান্ত। তিনি বিলেতে গিয়েছিলেন, গৌড়ীয় মঠ থেকে প্রচার করতে। তাঁর সঙ্গে বহ আধ্যাত্মিক আলোচনা হোল। বৈষ্ণবদের কি বিনয় ও ভক্তি। অত বড় পন্ডিত বল্লেন হাত জোড় করে, আমি আপনাদের দাসানদাস হতে চাই। আবার কবে দেখা পাবো ? ওখান থেকে এসে সবাই গেলাম সভাসস্থলে। ডাঃ অমিয় চক্লবতীর্ণ সভাপতিত্ব করলেন। আমার গলায় ফলের মালা দিয়ে আমার রচনা সম্পবন্ধে অনেক মিনিট মিনিট কথা অনেকে বল্লেন। গজেনবাব ও মিঃ পালিত বল্লেন, আমার 'পথের পাঁচালী ও “অপরাজিত নাকি রোঁমা রোঁলার ‘জাঁ ব্রুিস্তফ’-এর চেয়েও বড় । দিব্যি জ্যোৎস্নারাত্রে কল্যাণী, উমা, বীরেন রায়, গজেনবাব, সমথবাব সবাই মিলে একটা চায়ের দোকানে চা খেয়ে এলাম। উত্তাল সমদ্রে সন্দর জ্যোৎসনা উঠেচে, 2, 3, zIG3T ziëC5, zTC-6 z{GT 7ifoKST33 'sea breeze' zT UTS Zee brugge" অর্থাৎ সমদ্রের হাওয়া। রাত্রে আবার ভীষণ বন্টি। সকালে উমা ও কল্যাণী সমদ্রে স্নান করতে গেল । ওরা সমদ্রে সন্নান করে খাব খশি হয়ে এল। একটা পরে বন্টি কেটে গিয়ে বেশ রোদ উঠলো-উমাকে রেখে কল্যাণীকে নিয়ে আমি শ্ৰীমন্দির দশন করতে যাচ্চি, পথে ছাতার মঠ ও রাধাকান্ত মঠ দেখে বার হচ্চি, এমন সময় মহাদেববাব পেছন থেকে ডাকচোন। সঙ্গে প্রতাপবাব। আমরা গিয়ে এবার মঠ দেখি। ভারতবষের মধ্যে এই মঠটি সবচেয়ে বিত্তশালী। কেমন নীচ-নীচ, ঘরগলি, দেওয়ালে নানারকম quaint ছবি অাঁকা, পাথরের কাজকরা থাম, খাঁচায়। টিয়া ময়না পাখী, শান্ত পরিবেশ-যেন প্রাচীন ভারতবষের কোনো রাজপ্রাসাদ। তারপরী: ܠܬܠܬ