পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অস্ত আকাশের রং অতি অদ্ভুত। গত ফেব্রুয়ারী মাসে দলটি সেই সন্ন্যাসীর আশ্রমে গিয়ে দেখি আশ্রমটা একেবারে ভেঙে পড়ে গিয়েচে, চালের খড় খসে পড়চে, আমরা সন্ধ্যার পরে আসবার সময় দটি ছোকরাকে সেখানে দেখলাম—সেই অন্ধকারে ঘরের ঋধ্যে তারা কি করাচে! ওরা নাকি ওখানে আমোদ করতে এসেচে। এই ভাঙা বাড়ীতে এরা গলপ করে বসে। আমাদের তখনই মনে সন্দেহ হোল-পরে শািনলাম ওরা ওখানে বসে গাঁজা খায়। মদ, জ্যোৎস্নালোকে কতক্ষণ সাঁকোর ওপর বসে ভগববিষয়ে চৰ্চা করি। কত রাত পৰ্যন্ত গলপ করলাম। বাংলোতে বসে। সকালে মেঘ ও ঠান্ডা দিন। মোটরে কল্যাণী, আমি ও মিঃ সিনহা চলে গেলাম কেশারদা বাঁশবনে। এই বিরাট বাঁশবনের রোপণ ইত্যাদি কাজ বনবিভাগ থেকে করা হয়েচে। নরল হক Ranger বল্লে-হাজার, দ্য হাজার কাঁটালের চারা পোঁতা হয়েচে । আমরা কেশবদ গ্রামে চলে গেলাম। এই গ্রামটি বাঙালী ও উড়িয়া অধিবাসীদের গ্রাম। কথার মধ্যে অনেক উড়িয়া শব্দ মেশানো। আমাদের মোটর যেতে অনেক ড়ে এল-বল্লো, এবার খাদ্যের অভাবে বড়ই কম্পট হয়েচে লোকের। কল্যাণীকে নিয়ে গ্রাম্যদেবী সবর্ণ বাউড়ীর মন্দির দেখি। বহ, পরোনো মাত্তি-নাকমখ ভঙা, মন্দিরের আশপাশে অমান ছোট-বড় কত মাত্তি পড়ে আছে। কৃষ্ণ পান্ডা বলে ওই মন্দিবের পাজারীর বাড়ী আমরা গিয়ে বসলাম। ওরা কল্যাণীকে নামিয়ে নিয়ে গেল। মাটির মুর, দেওয়ালে সভাষ বাস ও গান্ধীর ছবি। একটা লোকের বোধ হয় জবর হয়েচে, সে খাটিয়ায় শয়ে আছে—বল্লে, ম্যালেরিয়া নয়, কারণ ম্যালেরিয়া জবর এখানে নেই। কঙ্কালসার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে এল। ২৫ ॥৩০টি, এরা নাকি ডোমদের ছেলে, সারাদিন ভিক্ষে করে বেড়ায় ; এক এক মাঠো সবাই দেয়। চিন্তামণি পান্ডা এক ধামা মড়ি নিয়ে ছেলেদের এক এক মাঠো মাড়ি সবাইকে দিলে, তারপর তারা কাঠ ও গর চরানো নিয়ে দঃখ করলে। আমাকে পান্ডাঠাকুর বাড়ীর মধ্যে নিয়ে গিয়ে চিপড়ে, দই ও দধি খাওয়ালে। একটা ঘরে নিয়ে গেল, বেতের ঝাঁপি যে কত রয়েচে সারি সারি—“পরীর দোকানের সেই বেতের ঝাঁপির মতো। কোনো ঘরে একটা দরজা জানলা নেই, অন্ধকার সব ঘর। বেলা একটার সময় ওখান থেকে ডাকবাংলো গিয়ে সনানাহার সেরে নিই। তখনই একটা স্কুলের ছেলে ডাকতে এলে, আমরা গেলাম মিটিংএ। হেডমাস্টারের বাড়ীতে চা ও খাবার খেলম সাহিত্য সভার পরে। গ্রীক যােবক Sদলিওডোরাসের যেন আবিৰ্ভাব হোল বহা শতাব্দী পরে। সন্ধ্যার সময় কল্যাণীকে নিয়ে সবর্ণরেখার এপারে বোনালি ঘাটে গিয়ে বসলাম। ওপারে ময়রভঞ্জের শৈলমালা, বড় একটা শৈলমালার ওপর প্রকান্ড একখানা কালো মেঘ ঝাঁকে পড়ে আছে। এপারে মাঠে নিসিন্দে গাছের বেড়ার ধারে বসে আছি। ভগবানের উপাসনা করলাম। সেখানে। কল্যাণী গাইলে, যো দেবগোঁ যোহপস ইত্যাদি উপনিষদের সেই গভীর বাণী। জ্যোৎসনা উঠেচে-চতুথীর ভাঙা চাঁদ। কিন্তু থৈ থৈ করাচে মন্ত space বহিরাগড়া ডাকবাংলোর সামনে। কত রাত পয্যন্ত আমরা জেগে বসে থাকি রোজ রোজ। এমন দরপ্রসারী space আর কোথায় ? জ্যোৎসনারাত্রে আমরা বেড়াতে গেলাম। সেই সন্ন্যাসীর ভাঙা আশ্রমটির কাছে। সকালে বহরাগড়া থেকে বেরিয়ে ধলভূমগড়ে নটর মেডিক্যাল ক্যাম্পে এলাম। সেখানে ভাত খেয়ে আবার মােটরে বার হই। একটা কুলীর মেরুদন্ড ভেঙে গিয়েচে }ড়নামাইট ফাটাতে গিয়ে কল্যাণী তাকে দেখে বড় কাতর হয়ে পড়লো। ধলভূমগড়ের 曝 ' ܠܠ