পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপস্থিত ছিলেন। ভোরে উঠে আমি ও মিঃ সিনহা। চা খেয়ে হিন্দী সাহিত্যিক প্রেমচাঁদের বই পড়ি। জগৎ সিং এসে ভাল্ডে ভান্ডে অর্থাৎ “আমি বার বার বলচি” গলপটি করলেন। এই গলপটি ওঁর মাখে। কতবার শানেচি-যতবার শনি, নতুন লাগে প্রতিবার। সবোধবাব এসে বল্লে-সে ডেপটি কমিশনার মিঃ কেম্পের গাড়ীতে টাটা চলে যাচ্ছে। একটা পরে ঘাটশিলা থেকে মকুল চক্কত্তি এল। তার পর আমরা মোটরে বার হয়ে ভবানী সিংহের বাড়ী যাই। গত ৩০শে চৈত্র এর বাড়ীতে কম্পপাউন্ডে বসে আমরা চা খেয়েছিলামচাইবাসার বাইরে অপব্ব মক্ত space-এর বাহার, একদিকে নীল শৈলমালা-বরকেলা ও সেরাইকেলা। র মনে হল সেরাইকেল শৈলমালাই বরাবর গিয়ে বারডি ও বাসাডেরার পাহাড়ে শেষ হয়েছে, বিভিন্ন সস্থানে বিভিন্ন নাম। মসত বড় হাট বসেচে। চাইবাসায়-বাসমতী চাল বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা মণ। কিন্তু অত সন্দর চাল। সেই সন্ধ্যায় ষ্ট্রেনে এসে টাটানগর পৌছে গেলাম ও বাদাম পাহাড়ের যে গাড়ীখানা প্লাটফৰ্ম্মেম দাঁড়িয়ে, তাতেই শায়ে রইলাম। ছোটনাগপরের অধিবাসী হয়ে গিয়েচি আজকাল। বরাকাকােনা ও মরী থেকে রাঁচি এক্সপ্রেস আসবে তারই সন্ধানে বার বার গাড়ী থেকে নামচি কিন্তু গাড়ী পেলাম না। ভোরে বম্বে মেলি ধরে ঘাটশিলা পৌছাই । আসানবনী ছাড়িয়ে দীর থেকে আমাদের অতি পরিচিত সিদ্ধেশবর ডাংরির মোচাকৃতি শিখরদেশ দেখে মনে কি আনন্দ ! বাড়ী এসেচি মনে হোল বহদিন প্রবাস যাপনের পর। ওই সেই মিলিটারি ক্যাম্প রাখা মাইনস-এর-শনিবার রাত্রে যেখানে লেফটেনাণ্ট জহরী ও বোসের অতিথি হয়ে রাত কাটিয়েছিলাম। গালডির বিষ্ণ, প্রধান যাচ্চে এই গাড়ীতে, সে নমস্কার করে বল্লে, কোথায় নামবেন ? আমি বল্লাম, ঘাটশিলায়। রেডিও বস্তৃতা দিয়ে বারাকপাের গিয়েছিলাম একদিনের জন্যে। শিউলি ফািল ফটিচে দেখে এসেচি। বেশ লাগলো একটা দিন। তবে ম্যালেরিয়াতে সবাই ভুগচে । ফণি রায় ও আমি একসঙ্গে বেলা দটাের গাড়ীতে চলে এলাম। ঘাটশিলা যেদিন এলাম, সেদিন সরেশবাবও এলেন আমার সঙ্গে। কদিন খাব জ্যোৎস্না। আজ চতুদর্শী, কাল কোজাগরী পণিমা। রাত ৮৷oটা পৰ্যন্ত দ্বিজেন মল্লিকের বাড়ী বসে গলপ করলাম--তারপর মনে হোল আজ জ্যোৎস্নাটি মাটি করবো ? কোথাও যাবো না। অত রাত্রে সেই অপব্ব জ্যোৎস্নারাতে হন হন করে হোটে চলে গেলাম ফলডংরি। রাত নাটা। বেশি রাত্রির জ্যোৎসনা। আমার সেই প্রিয় সহানটিতে পাথরের ওপর গিয়ে যোগাসনে বসলাম। দরে বারডি ও বাসাডেরা পাহাড় ও বনানীর মাথায় একটি নক্ষত্র অনন্তের হৃদস্পন্দনের মত টিপ টিপ করে জবলচে। জ্যোৎস্নাসনাত বনভূমি ও ফলডংরি পাহাড়ের সে রাপে মন মািন্ধ ও বিস্মিত হয়ে উঠেচে। মাখে কথা বলতে পারি নে—এমন একটি অবশ, আড়ম্পট ভাব। ভগবানের উপাসনা। এখানে নীরব ও ভাবঘন, সমাহিত। বিশাল প্রান্তরের যেদিকে চাই-জ্যোৎস্নালোকিত ধরিত্রী যেন জন্মমরণ-ভীতি-ভ্ৰংশী কোন মহাদেবতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মিলনের আনন্দে নিস্পন্দ সমাধিতে অন্তমখী। শােধ দেখা যায় বসে বসে এর অপব্ব রােপ, শািন্ধ অন্যভব করা যায় গোপন অন্তরে এর সে নীরব বাণী। চারিদিকে নিঃশবদ, এক তো নিজজন প্রান্তর—এত রাত্রে এখানে কেউ আসে না-ভূতের ভয়ে স্থানীয় লোক এদিকে নাকি থাকে না বেশি রাত্ৰে-মানষের গলার সাের এতটকু কানো গেলে মনের একাগ্ৰতা নন্ট RR