পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাবে একটা বাঘের গডজনি শানেছিলেন, সে গল্প করলেন। হো কুলী বললে-বাব রাৎ আনা—উনি বঝতে পারেন না। শেষে দেখলেন কুলী পিছিয়ে পড়চে। তখন শনিলেন বাঘ ডাকচে বনের মধ্যে। আর একবার একটা হাতীর হাতে পড়েছিলেন, কুলী ছিল সঙ্গে। সে ওঁকে পাহাড়ের ওপর থেকে ঢােলর দিকে জোর করে নামিয়ে নিয়ে গেল। আসবার সময় আরও অদভুত দশ্য। হলদে রোদন্দর পাহাড়ের মাথায়, আরণ্যবনপতি-শীর্ষে। নামচি, নামচি-সেই দরারোহ পথে হড়কে পড়ে যাওয়ার ভয় প্ৰতি মহত্তে। রোদ কমে এল। বনের ছায়া নিবিড়তর হচ্চে। এক জায়গায় barking deer ডাকচে, ঠিক কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ আওয়াজ করে। বনের আমলকী পাড়িয়ে নিয়ে খেতে খেতে এলাম। বনের মধ্যে কামিনী ফলের গাছ দেখলাম 265 2थान् । নীচে নেমে বনের মধ্যে দিয়ে প্রায় দেড় মাইল হোটে এসে আমাদের মোটরের কাছে এলাম। গয়া রেল স্টেশন থেকে শশাংদাবার প্রায় ১৬৷ মাইল। এ অপব্ব বনশোভা যদি কেউ দেখতে যান। তবে হেটে তাঁকে আসতে হবে এই ১৬৷ মাইল পথ । কোথাও কোনো লোকালয় নেই—শশাংদাবরী মালভূমি বা তার আশপাশে কোথাও একখানা বন্যগ্রাম পয্যন্ত নেই। পথে যথেষ্ট বন্য হস্তীর ভয়। আমরা মোটরে আসাঁচ কুমাডিতে শশাংদাবরী থেকে নেমে—হঠাৎ ফরেস্ট গার্ড হো অাঙল দিয়ে দেখিয়ে বল্লে -হাতী ! হাতী ! আমরা সকলে চেয়ে দেখি উপত্যকার ওপারে শৈলসােনর বনে একটা লাল রংএর ধলো মাখা হাতী বনের মধ্যে আমাদের দিকে পিছন ফিরে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমি কেবলই ভাবচি শশাংদাবােরর ওপরে কেউ যদি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে বেশ হয়। আজ আবার রাসপর্ণিমা। সন্ধ্যায় বাংলোর বারান্দাতে বসে চা খাচ্চি - পাণচন্দ্র উঠলো বনের মাথায়। গোপালনগরের হাট করে বাড়ী ফিরচে পাঞ্জা মাসটার ওর গরর গাড়ীতে। বাংলোটি চমৎকার স্থানে। চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা, ঘন বন । পাশেই দিনরাত শানচি কোইনা নদীর কুলকুলা শব্দ বনের মধ্যে। জ্যোৎস্নারাত্রে নদীর ধারে একটা শালগাছের শকানো গাড়ির ওপর গিয়ে বসলাম। আমি ও মিঃ সিনহা। জল চক চক করচে জ্যোৎস্নায়। * আজ ভগবানের বিরাটরােপ প্রত্যক্ষ করেচি শশাংদাবােরর শৈলারণ্যে- তিনিই সব জায়গায় ছড়িয়ে রয়েচোন। প্রাচীন বনস্পতিতে তাঁর গম্ভীর রপ-আবার বন্য লন্দাম, বন্য চিরেতার অতি সন্দর পক্ষেপ তাঁর কমনীয় রােপ। তিনি অব্যক্ত, অনন্ত। আমার মনে হয় সারে"ডা ভ্ৰমণের মন ছিল আমার বহ দিনের। তাই তিনিই দয়া করে যোগাযোগ ঘটালেন। এ এক মাল্যবান অভিজ্ঞতা জীবনের। সেই শৈলশীর্ষে রাঙা রোদ, ঘন বনে সেই চাডডা ঝণার জলপতনধবনি, সেই প্রাচীন বনস্পতি-শ্রেণী, দরে দরে অগণ্য শৈলমালার সমারোহ—সেই সগন্ধি বন কুস মরাজি-এ সব যদি আমি না দেখতুম মনের মধ্যে এর ছবি যদি না একে রাখতুম--তবে আমার জীবন ফাঁকা থেকে যেতো। হে বিশবশিলপী, তোমাকে এই কারণার জন্য ধন্যবাদ। কি চমৎকার কমলালেব কুমডি বনবিভাগের বাংলো-সংলগ্ন বাগানে। ফলভারে গাছ অবনত হওয়া বলে--সত্যিই তাই। চোখে না দেখলে বিশদ্বাস করা যাবে না । সকালে খেয়ে দেয়ে আমরা বনপথে থলকোবাদ রওনা হলাম। সারান্ডা অঞ্চলের বনের মধ্যে কোথাও ফাঁক নেই-৩৩০ বগ মাইল (ছয় লক্ষ একর) ব্যাপী ছেদহীন নিবিড় Rdt