পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৌচাকের মত অসংখ্য গত্তি সন্টি করেচে। তার প্রায় ৫o ॥৬০ হাত চওড়া, ১৫o হাত লম্পাবা এক সমতল পাষাণের চত্বর-মত নদীর খাতের মধ্যে, কে যেন পাথর দিয়ে বধিয়েন্ত্ৰ রেখেচে । ঘন বন এর উভয় পাশে, থলকোবাদ নিজেই বনের মধ্যে—সেখান থেকে ছ” মাইল এসেচি মোটরে ঘনতর অরণ্যের মধ্যে দিয়ে—তারপর এই সন্দর ছায়াভিরা, পাষাণময়, জলাকলতানমখর, জনহীন স্থানটি। আরও কিছদরে একটি বন্যগ্রাম, নাম করমপদা, তার ওধারে নয়াগাঁও ও বনগাঁও বলে আরও দটি গ্রাম। গ্রাম বলতে যা, বোঝায় তা এসব নয়, বনবিভাগ থেকে এদের বিনা খাজনায় চাষের জমি দেওয়া হয় | ফসল করে তুলতে পারে না বন্যহস্তী ও সম্পবের হরিণের উপদ্রবে। বনগাঁও গ্রামের দশ্যটি ছবির মত। গাড়ী থেকে নেমে আমরা একটা ছোট্ট টিলার ওপরে বসলাম শালগাছের ছায়ায়, আমাদের সামনে ক্ষদ্র কোইনা নদী সর, নালার মত বয়ে চলেচে, কারণ এই নদীর উৎপত্তিস্থান আদরবত্তীর্ণ বোনাই সীমান্তের শৈলমালা, এখান থেকে মাইল, খানেক মাত্র দর। নদীর ওপারে ঢেউ-খেলানো জমি পাহাড়ের মত উঠে গিয়েচে, তার গায়ে হরিৎবর্ণ। ফলে ভরা সরগাজা ক্ষেত, সবজ কুরথীর ক্ষেত, দশটা খড় ও মাটির কুটির, গর, মহিষ চরচে মাঠে, মেয়েরা কাজ করচে ক্ষেতে, ওদের সকলের পেছনে কেউনঝর রাজ্যের ঘনবন।াবত শৈলমালা। সস্থানটি গভীর অরণ্যের মধ্যে এবং চারি-> দিকে দরে দরে পাহাড়। আরও এগিয়ে গেলাম বোনাই রাজ্য ও সারেন্ডা বনের সীমান্তে। একটা উচ্চ পাহাড়ের গায়ে পাঁচশ' ফন্ট জায়গা ফাঁকা, সব গাছ কেটে সীমা চিহ্নিত করা হয়েচে । তারপর আমরা নেমে গেলাম।--ভাবলাম, বোনাই স্টেট একবার বেড়িয়ে আসা যাক না। রাস্তা ক্ৰমশঃ নীচের দিকে নেমে গিয়েচে ঘন বনের মধ্যে দিয়ে--কোনোই পার্থক্য নেই সারেন্ডা অরণ্যের সঙ্গে। মোটা মোটা লতা বড় বড় প্রাচীন বনস্পতিশ্রেণীকে পরস্পর সংযন্ত করেচে, ফাঁক রাখেনি কোথাও, কালকার সেই হলদে ফল পথের ধারে আলো করে ফটে আছে, নিস্তব্ধতা তেমনি গভীর, যেমন কিছ প.ব্বে সারেন্ডাতে দেখোঁচ। নেমে যেতে আমাদের সামনে পড়লো একটা সংকীর্ণ উপত্যকা, দদিকে পাহাড়শ্রেণী দ্বারা ঘেরা। শােধই বনস্পতির সমারোহ, শািন্ধই বনশীষ শােধই সবজের মেলা। একটা কুসমে গাছের তলায় আমরা বসলাম। কনের মধ্যে ককাশস্বরে কি পাখী ডাকচে। ফরেস্ট গাডকে বললাম—ময়র ? সে বল্লে- নেহি হাজার, ধনেশ পাখী। বড় বড় ঠোঁটওয়ালা ধনেশ পাখী দেখোঁচি বটে, কিন্তু দেখেচি কলকাতায় খাঁচায় বন্দী অবস্থায়। এমন ঘন বনে তার আদিম বাসস্থানে, উড়িষ্যার বোনাই পেটটের অরণ্যে ওর ডাক শানবো, এ ভাগ্য-কখনো হয়নি। ভেবে দেখলাম যেখানে বসে আছি, - নিকটতম রেলসেন্টশন থেকে এর দীরত্ব প্রায় ৪০ মাইল – এও জীবনে কখনো ঘটেনি! কলকাতায় যেতে হোলে এখান থেকে কদিনের হাঁটাপথে গয়া বা জেরাইকেলা গিয়ে ট্রেনে চড়তে হবে। বসে আছি, আমাদের সামনের সর-পায়ে-চলা পথ দিয়ে এক কৃষ্ণকায় তরণ দেবতার মত যািবক, হাতে-বোনা খাটাে মোটা কাপড় পরনে, এক হাতে তীরন্ধন, অন্য হাতে একটা পাটলিতে কি বাঁধা-মাথায় লম্বা লম্বা কালো চলে কাঠের চিরনি। গোঁজা-ব্যস্ত ও চণগুলভাবে কোথায় চলেচে। আমরা ডাকলাম ওকে। সে বলে গিডজােয় যাচ্চে, বড় ব্যস্ত। হো ভাষায় বল্লে-মিঃ গপ্ত তার সঙ্গে কথা বল্লেন এবং সে কি বলচে আমাদের বঝিয়ে দিলেন। নাম তার মসি, কি তার হাসি, কি তার মাখের সন্দর ভঙ্গি। তাকে না দেখলে এই গভীর আরণ্য-প্রদেশ যেন জীবন্ত হয়ে উঠতো না। প্রাচীন দিনের মৌন অরণ্য যেন মােখর হয়ে উঠলো। ওর মাখের ভাষায়। ভাল, Ra