পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-একেবারে ভুল নেইফরেস্ট গাডও বল্লে-বড় বাঘের পায়ের দাগ। আর দেখান, হজর, এগলো তা বলে তো ফেরা যায় না। বল্লম। এক জায়গায় বন্য অশবগন্ধার পাতা তুলে দেখালে ফরেস্টার। আর একটা ‘পরিস্কার সােথান দেখিয়ে বল্লে—সম্পর্বর এখানে রোদ পোয়ায়। সম্পবরের পায়ের দাগ দেখােন কত সত্যি, অনেক জানোয়ারের পায়ের দাগ বটে। সম্পবর কিনা জানি না, গর, বা মহিষের পায়ের দাগের মত।--তবে তার চেয়ে কিছ: ছোট। বাইসনের পায়ের দাগ ঠিক মহিষের মত। ফাঁকা জায়গা পার হতে পনেরো মিনিট সময় লাগলো। পথানটি অতীব wild —তিনদিকে বনাবতে পাহাড়ে গোল করে ঘিরে চে, জল ভূমির দিকে সংকীর্ণ ফাঁক। লোহা-চোয়ানো রাঙা জলের একটা ঝর্ণা ফাঁকা মাঠ দিয়ে জলাভূমির দামদলের মধ্যে প্রবেশ করলো। রাস্তা থেকে অনেক দর, প্রায় এক মাইলের বেশি। লোকালয়ের তো চিহ্নই নেই এসব অঞ্চলে। তার ওপর কাঁটাওয়ালা ফলের নীচ, আগাছার জঙ্গলের মধ্যে বাইসন, হাতী ও বাঘের পায়ের দাগ। বেলা পড়ে এসেচে। জানোয়ারে তাড়া করলে পালাবার পথ নেই। কিন্তু গহা না দেখে ফিরাচি না। জঙ্গলের মধ্যে ঢািকলাম মাঠ পেরিয়ে--সামনে যে পাহাড় তারই নীচে গিয়ে দেখি প্রকান্ড গাঁহা, মাখের দিকে প্রায় মাটি থেকে না। ফট উচ, লম্পবায় পাঁচােত্তর ফন্ট। গাঁহার মাঝখান দিয়ে পাহাড়ের ওপর দিক থেকে ক্ষদ্র একটি লোহা-চোয়ানি রাঙা জলের ঝণা বেরচ্চে। ভেতরের দিকে উচ্চতা ক্ৰমশঃ কমে কমে এক-ফােট দেড়-ফািট দাঁড়িয়েচে, যেখান থেকে রাঙা ঝর্ণা বেরচ্চে সেখানে। কি গম্ভীর দশ্য! ঘন ছায়া বনে, ঘন অন্ধকার গহার ভেতরের দিকে। গহা ওখানে শেষ হোস না, ভেতরের দিকে আরও আছে, দেখাই যায় না। গাঁহার সামনে ঠিক গহোর ছাদ ছয়ে মোটা মোটা প্রাচীন ধওড়া ও আমগাছ। আমগাছ ও ধাওড়া গাছে কাছির মত লতা উঠেচে জড়িয়ে জড়িয়ে-গােহর মধ্যে বসে শােধ দেখা যাচ্চে সামনের নিবিড় সপ্রাচীন জণ্ডগল। অন্ধকার নামচে বনস্পতির ভিড়ে। রামায়ণে আরণ্যকান্ডের বনবৰ্ণনায় কবি বালিমীকি প্রাচীন ভারতবর্ষের বনের যে চিত্র দিয়েচেন, সেই বঝাবার অরণ্য-আকৃতি এই গহার সামনে, আশেপাশে, সৰ্ব্বত্র বহ মাইল নিয়ে। দেখলে ভয় হয়, কৌতহল হয়, বিসময় হয়—আবার কি জানি কেন শ্রদ্ধাও হয়। হঠাৎ ফরেস্টার বল্লে-পাশে আর একটা গহা আছে— —কতদরে ? —এই পাশেই হাজার। দগম লৌহ প্রস্তরের boulder ও জলা, নরম মাটি ঘন জঙ্গলে। জমি উপরের দিকে উঠেচে। পাশের পাহাড়ের ছাদটা ক্ৰমনিম্পন্ন হয়ে এসে এই গাঁহা তৈরী করেচে বেশ বোঝা যাচ্চে। কিন্তু পাহাড় ক্ষইয়ে গহা তৈরী হোল কি ভাবে ? ঐ লোহাচোয়ানো ঝর্ণা কি এর হাতিয়ার ? পাশেই সে গােহা দেখলাম। ঢাকলাম তার মধ্যে। এটা আরও বড়, বাঁদিকে উচ ঢিবি-মাত, লোহা-চোয়ানি জল রাঙা পলি ফেলে। আনন্দাজ লক্ষ বৎসরে এই মাটির সন্তাপ তৈরি করেচে। ফরেস্টার দেখালে-আবার একটা বাঘের পায়ের দাগ দেখােন হাজার ᏬᏩ;