পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি তো করলাম না! গ্রাম্য লোক শিষ্টাচারে আমাকে হারিয়ে দিলে। আমার পরিচয় শনে সে আমায় তার বাড়ি নিয়ে গেল। তাদের প্রকাশড মালীবাঁশের ছাউনি বড় আটচালা ঘর, দাওয়াতে নিয়ে গিয়ে পাটি পেতে বসালে। গ্রামের আরও চার পাঁচজন মাতব্বর লোক এসে আমায় ঘিরে প্রশন করতে লাগলো। আর কি সব সরল প্রশন! —বাব, ইদিকে কেন আসচেন, জঙ্গল কিনবেন নাকি ? --না, বেড়াতে এসোচি তোমাদের দেশে। —তা বােব, আপনাদের কলকাতা তো খাব বড় শহর, এখানে কি দেখবারই বা আছে আপনাদের উপযন্ত ! -কলকাতা দেখা আছে নাকি ? দজন নীল লাণ্ডিগ পরা লোক পেছন দিকে বসে ছিল, তাদের দেখিয়ে একজন বললে-এরা বােব সব জায়গায় গিয়েচে, বম্বে, বিলেত, জাপান আমি তো অবাক। বললাম—এরা কি করে গেল ? তখন পেছনের লোক-দটি বললে—বাব, আমরা জাহাজে কাজ করি। আমাদের এই গাঁয়ের বারো আনা লোক জাহাজ আর সন্টীমারের খালাসী। আমরা এখন ছটিতে আছি তিন মাস বাড়ি থাকবো, তারপর আবার কলকাতায় গিয়ে জাহাজে উঠবো! ওদের সঙ্গে বসে অনেক কথা হল। সত্যিই দেখলাম। অনেক দেশ বেড়িয়েচে ওরা। রেঙ্গন সিঙ্গাপাের, কলম্বো, জাপান—এমন কি লন্ডনের কথা পয্যন্ত ওদের মখে শোনা গেল। খানিকটা গলপ-গজেবের পরে ওরা বললে-বাবাের এবেলার খাওয়া-দাওয়া ? -उशर्भान् किछ भीफु दा छिटफु किटन्— —সে কি কথা, তা হবে না, ভাত না খেয়ে যেতে পারবেন না। হাঁড়ি, কাঠ, চাল, ডাল সব দেবো, আমাদের গ্রামে এখন আপনি দদিন থাকুন না! একখানা ঘর দিচ্চি আপনাকে আমার কোনো আপত্তি ওরা শনলে না। রান্নার যোগাড় ওরা করে দিলে। আবার এমন ভদ্রতা, আমি বললাম রান্না করবার আমার দরকার নেই, ওদের রান্না খেতে আমার আপত্তি নেই—তা। ওরা শনলে না। আমি হিন্দ ব্রাহ্মণ-কেন তারা আমার * সামাজিক প্রথায় ও আচারে একদিনের জন্যে হসতক্ষেপ করবে ? ওরা রোধে দেবে না। আমাকেই রান্না করতে হবে। আওরঙ্গজেবপর হতে বের হয়ে আমি যদচ্ছাক্রমে পাহাড়ের ধারে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ সেই অপব্ব স্থানটিতে এসে পড়লাম। একদিকে পাহাড়, একদিকে বন, পাহাড় থেকে বন নেমে এসেচে যেন সবজি জলস্রোতের মতো, একটা অবিচ্ছিন্ন সবজের প্রবাহের মতো উচ্ছৰাসিত প্রাচায্যের উল্লাসে নািতশীল সাগরোশিমার মতো।

  • তারই মধ্যে অনেকগালি পত্রবিহীন অদ্ভুত ধরনের গাছ-তাদের ডালপালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেমন যেন আলথাল ছন্নছাড়া অবস্থায়, নটরাজ শিবের নিত্যভঙ্গির

V এক রকম লতা উঠেচে গাছপালার সব্বাঙ্গ বেয়ে, তাদের মগডাল পয্যন্ত সাদা সাদা ফলে লতাগালো ভিত্তি-গাছের মাথা সেই সাদা ফলে ছাওয়া। একদিকে একটা ক্ষীণস্রোতা পাহাড়ী ঝরনা সেই অপব্ব বনভূমির মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেচে, ছোটবড় শিলাখন্ড বিছানো অগভীর পথে। তার দাধারে জলের ধারে ধারে ফটে আছে। রাঙা SS দিনলিপি ১-অভিযাত্রিকা-৪