পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফরেস্টার এক জায়গায় এসে বললো-ঠিক এখানে মল্লিকবাবা ফরেস্ট রোনজার মসত বড় রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখেছিল-রাসােতা পার হয়ে বনের দিক থেকে ওদিকেই যাচ্ছিল, মল্লিকবাব বলে—চাকরি ছেড়ে দেবো, সারেন্ডায় আর চাকরি করবো, NT প্রতিপদে ভয় হচ্ছে। একবার ফরেস্ট গাডী বনের দিকে চেয়ে থমকে দাঁড়ালো। বকের মধ্যে ঢিপ ঢপ করে উঠলো-কি রে! দাঁড়ালি, কেন ? সে বল্লে-জংলী মোরগ হাজার। ধড়ে প্রাণ এল যেন-চলো বাপ । বন-মোরগ দেখে আর এখন কােজ নেই। এই সানিবিড় অরণ্যে হাতী ও বাঘ হায়েনা চলাফেরা করচে, মানষি মারচে—তার গলাপ থলকোবাদে শানেচি, কুমাডিতে শানেচি, বনগাঁয়ে শানেচি, আবার আজ বিটকেলসোয়াতেও শানেচি। নিজের চোখে দ-তিন দিন বড় বাঘের থাবার দাগ দেখলাম মাটিতে— এবং তা হয়তো মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগের। আজই দেখোঁচ এক জায়গায় হাতী মাটিতে গড়াগড়ি দিয়েচে তার দাগ। হাতীর বাইসনের ও সম্পবরের পায়ের দাগ তো সব্বত্ৰে-ওর হিসেব কে রাখে। সতরাং বন পেরিয়ে যাওয়াই ভালো। • ফরেস্টার বলচে-কাছেই এসোচি মোটরের দরিশি আছে। তখন একবার বনের মধ্যে চপ করে দাঁড়িয়ে চারিদিকে চেয়ে নিলাম। কি গভীর দশ্য অরণ্যানীর, নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় কত উচিতে রাধালতা আর কমপ্রিটাম লতার কচি পাতা। ঘন বনে অন্ধকার হয়ে এসেচে। লোকালয় থেকে বহন্দরে সারেন্ড ফরেস্টের অভ্যন্তরভাগে দাঁড়িয়ে গোপালনগর হাটের কথা ভাবচি। বাড়ী এসে অগ্নিকুন্ডের পাশে বসে এই ডায়েরী লিখচি। খেয়েদেয়ে একবার বাইরে গেলাম, কি ঝক ঝক করাচে নক্ষত্ৰগলি পাহাড়ের মাথায়, অনন্ত বোমে মহারদ্রের জ্যোতিঃত্রিশলের মত Orion, জবলছে—এখানে ওখানে কত তারা, বিরাট ছায়াপথ জবলজবল করচে-বিশবদেবের ভান্ডারে কত অনন্ত কোটি ব্ৰহ্মান্ড, অনন্ত কোটি beauty spot -- তাঁর অনন্ত দন্টি কি করে আমরা বঝাব—শধ মনে মনে তাঁর জয়গান করেই বিসময়ের অবসান করি। রাত সাড়ে চারটায় উঠলাম, বাইরে গেলাম। জ্যোৎসনা উঠেচে, কালকের মত শকতারা জবলজবুল করচে, দারের পাহাড়ের মাথার দিকে চেয়ে বাল্যের বারাকপরের বাঁশবনে বাড়ী, বাবা-মার কথা মনে এল। শৈশবের সমস্ত অবস্থা—আমাদের দারিদ্র্য, বালক হয়ে আমার সমস্ত মনের ভাব যেন আমাকে পেয়ে বসলো শেষরাত্রে। জীবন কি অপৰিব! কি অমাতময়! জন্মে জন্মে শত শত বারাকপরের মধ্যে দিয়ে শত বৈচিত্ৰ্য, পিতামাতার কোলে বার বার আসি-যাই ক্ষতি কি ? শািন্ধ যেন বিশ্ববিদেবকে মনে রাখি, তাঁর অনন্ত রাপের অনন্ত বৈচিত্র্য দেখবার চোখ যেন পাই। সকালে শালবনে বেড়াতে গেলাম। দরে পাহাড়ের মাথায় কাল যেমন দেখেছিলম একটা গাছ-বড় বড় বনস্পতি চারিধারে, বনের শান্ত শ্যামল সমারোহ। প্রাণভরে দেখি। চেয়ে থাকি। শেষরাত্ৰে কালীর বোন পটিাদদিকে সর্বপ্ন দেখলাম। আশচয্য, পটিদিদি যেন মার মত সেনহে আমায় কি খেতে দিলেন। অলপ বয়সের পটিদিদি। আজ সকাল নটায় তিরিলপোসি থেকে সনানাহার করে বার হয়েচি। সারেন্ডা অরণ্যে ফাঁক কোথাও নেই—শধই চলেচে জগুগল। এক জায়গায় নেমে আমরা পাৎল্য জঙ্গলের মধ্যে ঢািকলাম, সেখানে কাঠকয়লার ভাঁটা করে কয়লা পড়চ্চে। তারপর 8Հ