পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওধারে বারাকপাের, আমার উঠানে ছায়া পড়েচে, কুটির মাঠের সেই জলাভূমিটি, তিন, যেখানে ধান করেছে, যার ধারে জেলেরা জমি চাষেচে এবার দেখে এলাম-ওদের কথা মনে পড়ে গেল। ঐ পাহাড় জঙ্গলের মধ্যে ঐদিকে কোথায় সেই বনমধ্যস্থ গহ, ঐদিকে কোথায় সেই অতি সন্দর টোয়েব, জলপ্রপাত, কোথায় সেই বাঘের পায়ের থাবা আকা সেগনবন, কোইনা নদীর গভস্থ পাষাণময় স্থান জাতিসিরাং, দেবকাঞ্চন ফলের মেলা। বিশবদেবের উপাসনা এমন সথানেই সম্পভব ও সার্থক। চা খেয়ে বেড়াতে বার হই। গিরিনবাবর সঙ্গে দেখা, দেবীবাবর শবশরি। অনেকদিন আগে পোসেইতা সেন্টশনে দেখা হয়েছিল। ইনি আমায় জঙ্গল দেখাবেন, এক সময় ধারণা ছিল। হরজীবন পাঠক এখানকার একজন লক্ষপাতি কাঠব্যবসায়ী । মোটা মোটা শাল কাঠ পড়ে আছে বহদার পর্যন্ত সেন্টশন ইয়াডে। বনস্পতি উচ্ছেদ করে এ ব্যবসা আমার পোষািব না। যিনি বনস্পতিতে আছেন, আমি তাঁকে মানি । মনে হবে প্ৰাণীহত্যা করচি। অরণ্যের সৌন্দয নন্ট করািচ। তবে কথা এই –B, T. T. কোম্পানী জঙ্গল উজাড় করে পয়সা লাটে ইংলন্ডে পাঠাচ্চে। আমাদের দেশের লোক হরজীবন পাঠক কিছ খায় তো ভালই। কোইন ও কোয়েল নদীর সঙ্গমস্থান দেখতে গিয়ে বেলা গেল। প্ৰকাণড বড় খ্রীস্টান মিশন নদীর ধারে। তারপর নসিংহদাস সাধজীর আশ্রমে গিয়ে বসলাম : বেশ শান্তিপণে স্থান, দক্ষিণ কোয়েল নদীর তীরে। নসিংহদেবের মাত্তি আছে মন্দিরে, সাধজীর এক চেলা এখন মোহান্ত, উনি মারা গিয়েছেন। এক-দেড় বৎসর। আরা জেলার এক পন্ডিতজী --বড় দীন, বিনয়ী - হারজীবন পাঠককে খাব খাতির, করলে। জী সরকার, বৈঠিয়ে, জনী সরকার, দেখিয়ে। এত ভাল লাগতো কেন পন্ডিতজীকে ? বল্লে সাধজী যব রহতে তব মেজাজ একদম গদগদ হো যাতা। বহৎ রঙিগলা সাধ থে। পন্ডিতজী খোসামোদ করচে পানঃপনঃ লক্ষপাতি ধনী হরজীবন পাঠক ও মোহান্তজী দজনকেই। রোজ সন্ধ্যাবেলা পন্ডিত সম্পভবতঃ আশ্রমে এসে বসে, গলপ করে, প্রসাদ-ট্ৰিসাদ পায়। নসিংহদাস সাধার ইন্টদেবতা এক রদ্র শিলামত্তি। তিনি নাকি সব বাড়ী বাগান, তাকে করে দিয়েচোন। সন্দর ফলের গন্ধ বেরচ্চে বাগানে। চাঁপা, মল্লিকা, আম, হেনা, দারচিনি, এলাচ- সব গাছ আছে। এ বাগানে! সাধজী আমাদের পানজেরি ও কলা দিলেন প্রসাদ সাবরােপ। পানজেরি কখনো খাইনি, দেখলাম ধনের গড়ো আর চিনি। আশ্রমটি সত্যিই ভাল লাগলো। বাড়ী এসে উঠলাম, রাত আটটা । মন্মথন্দা আজ আমার চিঠি পেয়েচে, কল্যাণীও পেয়েচে । মন্মথন্দার বাইরের ঘরে দরজা বন্ধ করে নিশ্চয়ই সব বসে গলপ করচে, আমার চিঠিখানা পড়চে । আজ সকালে উঠে রোদে বসে খানিকটা লিখি "দেবযানী” । তারপর কোল বোংগার পথে যেতে পাঞ্চেমগািট বলে একটি গ্রামে পাহাড়ের ওপর কিছক্ষিণ বসলাম । সালেমান কারকাটা ও মিঃ সিনহা বস্তী তদারক করছিলেন, সেই সময় আমি পাশের পাহাড়টাতে গাছের ছায়ায় বসি। সামনে বেশ সন্দর দশ্য, পাহাড়ের পর পাহাড়। একটা গাছ ঠিক চাঁপাগাছের মত, কিন্তু একটি ছেলে বল্লে ওতে ফল হয় না, ছোট ছোট বীচিমত হয়।--অর্থাৎ mendcandia exerta, এই গাছই এ দেশে সৰ্ব্বব্যািত্র, দেখতে চাঁপা গাছের মত। ছেলেটির নাম দিবাকর দাস, হিন্দিতে কথা বলে, জাতে তাতি। এদেশে হিন্দ হোলেই তাঁতি হবে, নয়তো গোঁসাই হবে। বাকী সব হো আর মােন্ডা। ভাষা হো ছাড়া আর কিছ নেই-তবে একটা শিক্ষিত লোকে হিন্দী জানে। ছোকরা চাকুরি SG