পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সূচায় এক্সপোর্ট নাকার গাড। বলে দিলাম। চাকুরির জন্যে। যদি ওর হয় বড় আনন্দ হৈবে। আমার । কোল বোংগা গ্রামে সেই গোসাঁই-এর বাড়ীটা ওই পাহাড়ের মাথায়। তারপর জঙ্গলের মধ্যে ঢকে অনেকদর গেলাম। সেদিন যে নদীগভে বসে চা খেয়েছিলাম “পাথরের ওপর, তার নামটি বেশ ভােল-“মহাদেব শাল’। ওটা পার হয়ে বনের মধ্যে ঢকে ঘন লতা-দোলানো নিবিড় জঙ্গলের পথে আবার দটি নদী পার হলাম-বড় বড় “পাথরের ওপর দিয়ে গভীর বনচ্ছায়ায় কুলকুলা শব্দে বয়ে চলেচে। সকালে কত কি পাখী ডাকচে বনে বনে। নিস্তব্ধ বনানী, একই দশ্য সারেন্ডার ঘনজঙ্গলো। সাড়ে “পাঁচ মাইল মাত্র দর মনোহরপর সেন্টশন থেকে, অথচ কি নিবিড় বন। ধলভূমে এমন বন নেই কোথাও । ফিরে আসতে কোইনা নদীর ধারে একসপোর্ট নাকার আপিসে তদারক করতে দেরি হয়ে গেল। বাড়ী ফিরে স্নান করে কিছ বিশ্রাম করলাম। পাহাড়ের ওপর বাংলোর পিছনে গিয়ে বসি রাঙা রোদভরা বিকেলে। চারিদিকে সতরে সত্তরে ঘননীল শৈলশ্রেণী, একটার পেছনে আর একটা, তার পেছনে আর একটা, থৈ থৈ করাচে শব্ধই ‘পাহাড়। ডাইনে খাব উচ্চ একটা পাহাড়ের গায়ে রাঙা লৌহ প্রস্তর বার হয়ে আছে— ঐ হোল চিড়িয়া খনি। বেঙ্গল সন্টীল কোম্পানী ওখান থেকে লৌহপ্রস্তর কেটে এনে ছোট রেলযোগে মনোহরপর এনে ফেলচে সেন্টশনের পাশে। কত কথা মনে পড়লো। পড়ন্ত রোদে দারের শৈল-শ্রেণীর দিকে চেয়ে। কল্যাণী রয়েচে কতদারে, কি এখন করচে, ওর জন্যে মন হয়েছে ব্যস্ত। আর পাঁচদিন কোনরকমে কাটলে হয়। গৌরীর কথা-আজ ২১শে নভেম্বর, সেই ২ oনং শ্ৰীগোপাল মল্লিক লেনে এই সময় প্রথম গিয়েচি, সেই উদ্বেগ, যতবার আলো জবালাতে যাই’। সেই গানটার কথা। এই সময়েই সে মারা যায়। জাহ্নবীর কথা। --সেও এই সময়, বোধ হয়। আজই হবে। আজই আবার গোপালনগবের হাট, এতক্ষণে পঞ্চােমাস্টার বেগােন বিক্ৰী করচে, মনো খড়োর দোকানে লেগেচে ভিড়। সেই ছায়াভিরা বনপথে ছোট এড়াবিগুর ফল ফটেচে হয়তো। ১৯৩৫ সালে আজকার দিনে আশীতোষ হলে কবি নোগচির বক্তৃতা শানেছিলাম। আর ভেবেছিলাম গ্রামের নাজন হয়তো নদীর ধারে মাঠে কলা-বেগানের ক্ষেতে গর, চরাচ্চে। আজও তাই ভাবচি, দরে গেলেই দেশের কথা আমার মনে পড়ে। কল্যাণী দেশে যেতে চায়, ওকে নিয়ে যাবো। m বিকেলে মিঃ সিনহা, আমি ও হরজীবন পাঠক আশ্রমে বেড়াতে গেলাম। সন্দির লতাবিতান, কত ফলাফলের গাছ। নদীর ধারে নিভৃত কুটির-মধ্যে বিশ্রামের জন্য বেদী, হেনা ফলের গৌরভ। পবিত্র পরিনো তপোবনের শান্ত পরিবেশ। খাঁটি ভারতীয় সভ্যতা ও আবহাওয়া। নসিংহদাস বাবাজির সমাধি ফল দিয়ে সাজিয়ে রেখেচে, সেখানে তার চেলা বসে গাঁজা খাচ্চে সন্ধ্যায়। নদীর ধারে লতাকুঞ্জমধ্যে ক্ষদ্র শিবমন্দির। মন আপনিই অন্তমখী হয়ে যায়। এই জায়গায় এসে। সাধজির কাছে বসলাম, তিনি আসনে বসে তুলসীদাসী রামায়ণ পড়ােচন, ধনি জলচে সামনে। ইনিই বত্তমান মোহালিত। ওখান থেকে বেরিয়ে সন্ধীর চাট জ্যের বাড়ী এলাম। আমরা সবাই। সন্ধীরবাব অতি বিনয়ী, আমরা গিয়েচি বলে বড় খশি। চা এনে দিলেন, ঘন ঘন পান ও সিগারেট দিলেন। সরল, অমায়িক ভদ্রলোক—আমাদের দেশের মত কথার টান। বল্লেন—একসঙ্গে বসে দটি খাবো বন্ড ইচ্ছে ছিল, তা হোল না। আপনি দয়া করে আমার এখানে x€ባ6ድቫ65ማI ! 8