পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেন তারি ঘাটেও তাই, বড় বড় পাথর বাঁধানো তটভূমি বনস্পতিশ্রেণীর মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেচে। এক জায়গায় চপ করে বসে রইলাম। Range Officer বল্লে, ছোটনাগরা নামের অর্থ এখানে একটা লোহার নাগরা বা ঢোল আছে বনের মধ্যে পড়ে, প্রাচীন দিনে মানষের চামড়া দিয়ে ঢাকা হোত এবং বাজানো হোত । পথে আসতে মোটরের সিম্প্রং ভেঙে গেল, বেলা তখন দটো। এসে সনানাহার করে কিছ বিশ্রাম করলাম। দেবযানী লিখি। গেলেন, চারিধারে পাহাড়ে-ঘেরা জায়গাটার কি চমৎকার শোভা হোল। আমরা একটি বেড়িয়ে এলাম পথ দিয়ে। একটা ঘাসওয়ালা পাহাড়ে উঠতে গিয়ে কাপড়ে ঘাসের বিচি লেগে গেল। বাংলোর পেছনে ছোট টিলাটার পাথরের ওপরে বসলাম সন্ধ্যায়। আকাশে নক্ষত্র উঠেচে, বনের মাথায়, পর্বদিকে গাছের আড়ালে পড়েচে সেই জবলজৰলে নক্ষত্রটা, ফলডংরি থেকে সেদিন রাত্রে যেটা দেখেছিলাম। পশ্চিম আকাশে বনের পাথরে পাহাড়ের মাথায় অস্তদিগন্তের রাঙা আভা। অসীম নক্ষত্রময় ব্ৰহ্মাণড, অনন্ত সন্টি। একমনে বসে যোগাসনে সেই বিশবসম্পটার কথা। যাঁরা চিন্তা করেন, এইসব সন্ধ্যায়, এই সব বনানীর শান্ত পবিত্রতায়তাঁরা সাধ, যোগী। তাঁদের কথা জানি না, তবে চারিদিকে চেয়ে এই সন্ধ্যায় মন ভরে উঠলো বটে। বিশবদেবের উদ্দেশে আপনিই মাথা নত হয়ে আসে। দারের ক্ষদ্র বারাকপার গ্রামে এখন নদীতীরে ছায়া পড়েচে, দীর মাঠে পড়েচে, লিচতলা ক্লাবে মন্মথন্দা ও যতীনন্দা বসে গল্প জড়েচে- কল্যাণী ঘাটশিলায় সন্ধ্যাদীপ দেখাচ্চে, কতদিন তার সঙ্গে দেখা হয়নি। জীবনের কত অদভূত রহস্য—অদভুত পরিবত্তান! এমন স্থানে এমন সময়ে জীবনটাকে ভেবে দেখবার অবকাশ পায় ক'জন ? কম কোলাহলমােখর শহরে মানষি নিজেকে বঝতে জানতে পায় না। এই নিস্তব্ধ গভীর বনপ্রান্ত, ঐ শৈলমালা, অগণ্য নক্ষত্রদল মাথার ওপরে, সন্ধ্যার মায়া-আলো-মাখানো দিগন্ত, বনশীষ শৈলচড়া, ঝিঝির ডাক-সবই মনকে অন্তমখী হতে সাহায্য করে। আজ শীত কম। অনেকক্ষণ বসে রইলাম পাহাড়টাতে। তারপর অন্ধকার ঘনীভূত হোল। মিঃ সিনহা বাংলোর টেবিলে বসে লিখচেন দেখতে পাচ্ছি, হাতীর বা বাঘের ভয়টা তত নেই। এখানে। ऐछेन्। एलाकCब्जन्ा—आला-- আমি বল্লাম-যাই— আজ সকালে উঠে আমরা মোটরে সলাই বাংলোতে এলাম। পথে ছোটনাগরা গ্রাম ছাড়িয়ে একটা লতা-ঝোপের মধ্যে দটি লোহার ঢোল পড়ে আছে। একটা ছোট, এক ফন্ট ব্যাস বিশিষ্ট, অন্যটি আড়াই ফন্ট ব্যাস বিশিষ্ট। এই জঙ্গলে এক রাজা ল- তার নাম অভিরাম টং। তার আমলে এখানে বাড়ী ছিল। ছোট ঢোলটা। চামড়া দিয়ে ছাওয়া হোত ও বাজানো হোত । সলাই বাংলোটি বড় চমৎকার সম্প্ৰথানে অবস্থিত। বামে, সম্পমাখে, অতি নিকটেই ঘন বনাবত পন্বতমালা দহাজার ফািট উচিত। পব্বতের পটভূমিতে সামনেই খাব বড় মোটা প্রায় দশ ফন্ট ব্যাস যন্ত গাড়িওয়ালা এক শিমালগাছ। তার পেছনে অসংখ্য ○O